somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মুচকুন্দ চাঁপা

১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৩:০৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



মুচকুন্দ চাঁপা

অন্যান্য ও আঞ্চলিক নাম : মুচকুন্দ বা মুসকান্দা, মুচাকুন্দা, মুছকুন্দা, কুসুম ফুল, কাঠচম্পা, কলাচম্পা, কোয়াকলা (মণিপুরী) ইত্যাদি।
সংস্কৃত নাম : মুচুকুন্দ, ক্ষত্ৰবৃক্ষ, চিবুক ও প্রতিবিষ্ণুক।
Common Name : Bayur Tree, Banana peels flower, Dinner Plate flower, Flame Tree, Flamboyant tree, Karnikara tree, Maple-leaved Bayur tree, Mayflower, Oleander, Peacock flower, Royal Poinciana, Roseberry Spurge, Torch Tree.
Scientific Name : Pterospermum acerifolium



মুচকুন্দ চাঁপাকে ভারতের কয়েকটি এলাকায় কনক-চাঁপা নামে ডাকা হয়। তাই বাংলাদেশের অনেকেই এই মুচকুন্দ চাঁপা কেই ভুল করে কনক-চাঁপা মনে করেন। যদিও কনক-চাঁপা নামে আরো একটি ফুল রয়েছে আমাদের দেশে।

ভারতীয় ৫ রুপির ডাকটিকিটে স্থান পেয়েছে এই মুচকুন্দ চাঁপা ফুল।


মুচকুন্দ বিশাল আকারের ঘন পাতাবিশিষ্ট বৃক্ষ। এই গাছের উচ্চতা ৫০ থেকে ৬০ ফুট পর্যন্ত হতে পারে। মুচকুন্দ দক্ষিণ ও দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ায় ভারত থেকে বার্মা পর্যন্ত জন্মায়। মুচকুন্দ চাঁপার আদি নিবাস হিমালয়ের পাদদেশ, মিয়ানমার, আসাম ও চট্টগ্রামের পার্বত্য অঞ্চল।



একসময় দেশের গ্রামাঞ্চলে মুচকুন্দ গাছ হরহামেশাই চোখে পরলেও বর্তমানে এর গাছ খুবএকটা চোখে পরে না। বেশ আশঙ্কাজনক হারেই এই গাছটি প্রকৃতি থেকে কমে গেছে। পুরান ঢাকা বলধা গার্ডেনে আমি প্রথম মুচকুন্দ গাছ এবং ফুলের দেখা পাই। শিল্পী এস এম সুলতানের প্রিয় ফুল ছিল মুচকুন্দ চাঁপা। তাই তিনি সাতটি মুচকুন্দ চাঁপা গাছ যশোরের মাইকেল মধুসূদন কলেজ ক্যাম্পাসে রোপণ করেছিলেন।

মুচকুন্দ গাছের পাতা অনেকটা উলটকম্বলের পাতার মত দেখতে। পাতা গুলি বেশ বড়, প্রায় ৮ ইঞ্চির চওড়া হয়। পাতার আকৃতির জন্যই মুচকুন্দ গাছ চেনা সহজ।







মুচকুন্দ চাঁপা ফুল ফোটে বসন্ত কালে, তবে বর্ষা কালেও ফুল ফোটে। ফুলগুলি বেশ বড় লম্বাটে আঙুলাকৃতির, অনেকটা খোসা ছাড়ানো কলার মতো দেখতে। ফুলের রং সাদা ও ফ্যাকাশে হলুদ, সিল্কি, বৃতিতে সোনালী রোম থাকে। ফুটে যাওয়া মুচকুন্দের পাঁচটি মুক্ত মাংসল পাপড়ি থাকে।

মুচকুন্দ চাঁপা গাছ গুলি বেশ বড় এবং ফুলগুলি মগ ডালে ফোটে বলে খুব চোখে পরে না। তবে বাংলার সকল জংলী ফুলের মধ্যে সবচেয়ে সুগন্ধি, মনমাতানো মিষ্টি নেশাধরা গন্ধ এই মুচকুন্দ চাঁপা ফুলের। তাই ফুল চোখে না পরলেও তার সুগন্ধি আপনাকে আকৃষ্ট করবেই। সুগন্ধের উৎস ফুলের বৃতি। শুকনো ফুলের বৃতিতেও সুগন্ধ অটুট থাকে। ফুলগুলি বেশ উঁচুতে ফোটে বলে এর ঘ্রাণও অনেক দূর পর্যন্ত ছড়াতে পারে।
মুচকুন্দ ফুল বাসি হলে ঝরে পড়ে। পুরো মুচকুন্দ গাছের তলা বাসি ফুলে ছেয়ে যায়।



ফুল ঝরে যাওয়ার পরেই গাছে ফল আসে। ফল অনেকটাই মেহগিনি ফলের মত, আকারে ৬ ইঞ্চি প্রায়। ফল পরিপক্ব হলে পাঁচ খণ্ডে বিভক্ত হয়ে ফেটে গিয়ে বীজ চারিদিকে ছড়ি পরার সুযোগ পায়।।

ঔষধি গুণ
শ্বেতপ্রদর, টিউমার, আলসার, বসন্ত, রক্ত রোগ, পাকস্থলীর ব্যথা, কুষ্ঠ নিরাময়ে ব্যবহৃত হয়।
ফুল জীবাণু ও কীটনাশক হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
গাছের বাকল ও পাতা বসন্ত রোগের মহৌষধ হিসেবে পরিচিত।
পোকামাকড় কামড়ে দিলে এই গাছের পাতার রস লাগালে ব্যথা ভালো হয়।
সতর্কতা : অভিজ্ঞ চিকিৎকের পরামর্শ ছাড়া এইসব ব্রবহার করা বিপদজনক হতে পারে।



তথ্য সূত্র : উইকিপিডিয়া, অন্তর্জাল।
ছবি ও বর্ণনা : মরুভূমির জলদস্যু
ছবি তোলার স্থান : বলদা গার্ডেন, ঢাকা, বাংলাদেশ।
ছবি তোলার তারিখ : ১৬/০৩/২০১৭ ইং
সর্বশেষ এডিট : ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৩:০৭
৪টি মন্তব্য ৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

জামাত কি দেশটাকে আবার পূর্ব পাকিস্তান বানাতে চায়? পারবে?

লিখেছেন ঋণাত্মক শূণ্য, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৭:২৮

অন্য যে কোন সময়ে জামাতকে নিয়ে মানুষ যতটা চিন্তিত ছিলো, বর্তমানে তার থেকে অনেক বেশী চিন্তিত বলেই মনে করি।



১৯৭১ এ জামাতের যে অবস্থান, তা নিঃসন্দেহে বাংলাদেশের অস্তিত্বের বিরুদ্ধে... ...বাকিটুকু পড়ুন

১৯৭১ সালে পাক ভারত যুদ্ধে ভারত বিজয়ী!

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯


দীর্ঘ ২৫ বছরের নানা লাঞ্ছনা গঞ্জনা বঞ্চনা সহ্য করে যখন পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বীর বাঙালী অস্ত্র হাতে তুলে নিয়ে বীরবিক্রমে যুদ্ধ করে দেশ প্রায় স্বাধীন করে ফেলবে এমন সময় বাংলাদেশী ভারতীয়... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইন্দিরা গান্ধীর চোখে মুক্তিযুদ্ধ ও বাংলাদেশ-ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক: ওরিয়ানা ফলাচির সাক্ষাৎকার

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:৫৫


১৯৭২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ইতালীয় সাংবাদিক ওরিয়ানা ফলাচি ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর সাক্ষাৎকার নেন। এই সাক্ষাৎকারে মুক্তিযুদ্ধ, শরনার্থী সমস্যা, ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক, আমেরিকার সাম্রাজ্যবাদী পররাষ্ট্রনীতি এবং পাকিস্তানে তাদের সামরিক... ...বাকিটুকু পড়ুন

=যাচ্ছি হেঁটে, সঙ্গে যাবি?=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:০৬


যাচ্ছি হেঁটে দূরের বনে
তুই কি আমার সঙ্গি হবি?
পাশাপাশি হেঁটে কি তুই
দুঃখ সুখের কথা ক'বি?

যাচ্ছি একা অন্য কোথাও,
যেখানটাতে সবুজ আলো
এই শহরে পেরেশানি
আর লাগে না আমার ভালো!

যাবি কি তুই সঙ্গে আমার
যেথায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

আগামী নির্বাচন কি জাতিকে সাহায্য করবে, নাকি আরো বিপদের দিকে ঠেলে দিবে?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৮:১২



আগামী নির্বচন জাতিকে আরো কমপ্লেক্স সমস্যার মাঝে ঠেলে দিবে; জাতির সমস্যাগুলো কঠিন থেকে কঠিনতর হবে। এই নির্বাচনটা মুলত করা হচ্ছে আমেরিকান দুতাবাসের প্রয়োজনে, আমাদের দেশের কি হবে, সেটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

×