somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

দেবতা হতে দেবী-সেবক ........... তৃতীয় স্তবক

০৬ ই মার্চ, ২০১৩ রাত ৮:২২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

প্রথম পর্ব- Click This Link
দ্বিতীয় পর্ব- Click This Link
বেশ কিছু নিয়ম তৈরি করেছিল রানী তার সহোচর-অনুচররা মিলে। এবং, তারা সকলেই নারী ছিলেন। "রুলস ডেনস ইরা'' বইটিতে ইরা'র এই সকল উদ্ভট কিন্তু বিচক্ষন রুলসের কথা বলে। ইরা'র প্রথম রুলস ছিল, প্রত্যেকটি নারীকে দেবী'র সম্মাননা রাজকিয় ও পারিবারিক ভাবে দিবে এই রাজ্যে সে।আর পুরুষগন হবেন দেবী-ভক্ত! যদিও নিন্দুকরা বলে, সেখানে দেবী ভক্ত নয়, দেবী-ভৃত্য লিখলেই ভালো করতেন মহারানী ইরা! কেননা সেটাই বেশি সভ্য বিষেশন ছিল পুরুদের জন্য রানী ইরার শাসনকালে!" আরেকটা নতুন চমক দেখতে পেল সবাই ইনোসার হাসিতে!

"এরপর একে একে এক একটি নিয়ম সবার সামনে আসতে থাকল। রানী ইরা'র কখন বাইরের পৃথিবীর মানুষের সাথে মেলা-মেশার সুযোগ হয়নি তাও নয়, কিন্তু রাজ্যবাসীরা বাইরের পৃথিবীর সম্পর্কে তেমন কিছুই জানত না, কেননা বহিরাগতদের নিজেদের সংস্কৃতি ও ধর্ম বিসর্জন দিয়েই এই দ্বীপে থাকতে হত। তাই সবাই ভাবতে লাগল এমন সব নিয়ম রানী'র নিজের উদ্ভাবন; কিন্তু গ্রামবাসীদের ভাবনা ছিল ভুল। রানী বহিরাগতদের সাথে
অনেক বেশি দয়ালু ও বন্ধুত্বপুর্ন ছিল, বিশেষত মহিলাদের সাথে; তার এই আচরন গ্রামবাসীদের কাছে গোপন ছিল। তবে কান-ঘুষা চলত মেয়েদের মধ্যে প্রায়ই।" ইনোসা আরো যোগ করল।

"ঠিক কিসের ইঙ্গিত দিচ্ছ তুমি?" জেইন আর অড্রি একসাথে বলল। "রাজা অমন্যন্সের মৃত্যুর আগেই এসব ঘটে যায়। রানী ইরার সৈন্য নারীরা প্রায় পুরো রাজ্য ঘিরে থাকত। ইরা'র কৌশলটা কাজে দিয়েছিল। রানী প্রথমেই তার তৃতীয়, চতুর্থ ও পঞ্চম বিয়ে করলেন। এবার রাজ-পরিবারে কিছুটা বিশৃংখলা দেখা দিল। নিয়মের পর নিয়ম ভঙ্গ করে যাচ্ছিল বলে মহারানী জেনোভা নিজে একদিন রানী ইরা'কে ডেকে নিয়ে কথা বলেছিলেন। ইরা তখন হয়ত বাধ্য হয়েও নিজের অভিসার তার মায়ের কাছে প্রকাশ করেন। কথিত আছে তার প্রতিউত্তরে মহারানী জেনোভা ইড়াকে শুধু একটাই কথা বলেন, 'তোমার বাবার রক্ত তোমার রক্ত, সুতরাং ভেবে কাজ করো!' এরপর রানী একটু পিছন ফিরে দেখেনি তা নয়, কিন্তু তিনি তার স্বিধান্তে অবিচল রইলেন।" ইনোসা তার কোলের উপর রাখা একটা বই খুলতে খুলতে বলল!

"এখানে একটা আয়রনি দেখতে পাচ্ছি!" রিন্স বলল। "কোথায়?" মিরা প্রশ্ন করল। "মহারানী জেনোভা'র কথায়, তিনি কিন্তু ইরা কে দুইটা উপদেশ দিয়েছিলেন। এক, সে তার পিতার সন্তান হিসেবে রক্তপাত ঘটাতে পারে, তাই সাবধান হওয়া উচিত তার সময় থাকতে।আর দুই, এই রাজ্য তার পিতা খুব আগলে রেখেছিল, সেটা ভুলে যেনো না যায়!" রিন্স প্রতিউত্তর দিল। "হ্যা, তুমি ঠিক বলেছ। এরজন্যই তার রাজ্য-কাজ কিছুটা শিথিল হয় এরপর। কিন্তু সে দমে নি। সে তার অভিলাষ সত্য করেছিল। মহারাজের মৃত্যুর পর প্রথম সে এক সমবেশে বলল, 'এই রাজ্যে এতদিন যে অনচার চলে এসেছে, তার কারনে এখানে এট দুঃখ। প্রতিটি নারী দেবী, তাদের পুর্ণাঙ্গ অধিকার আছে নিজ পরিবার হতে সেব পাবার, বিশেষত তাদের পরিবারের পুরুষদের কাছে।" ইনোসা রিন্সের দিকে তাকালো। রিন্স একটা বই বের করে উপুর করে ধরল, তারপর বলল, এই বইটার পড়বার দুই ধরন হতে পারে। প্রত্যেকটা লাইন শেষ থেকে পড়লে, আবার শুরু থেকে পড়লে। এটা আসলে বই ছিল না, এটা মহারানী ইরা'র ব্যাক্তিগত ডায়েরী ছিল। সংবর্ধন করে একে দুই ভাবে লেখা হয়েছিল, যাতে রানীর অভিসার ইতিহাসবিদরা সুস্পষ্ট করে জানতে পারে। এখানে দুপাশের পৃষ্ঠায় দুপাশ থেকে পড়া ডায়েরী আছে।

" ("আমি নিজে পঞ্চম বিয়ের আয়োজন শেষ করেছি, এবং নিয়ম নিয়ে শিঘ্রই আমার সেবকরা তোমাদের সামনে পাঠ করতে আসবে রাজ-নিয়ম সম্বলিত পুস্তক 'স্নিম রিলেমস'; আশা করি সবাই তা বুঝতে পারবে ও একসাঠে পাঠ করার সুযোগ পাবে।") লেখা আছে এই বইটিতে, রানী নিজে লিখেছিলেন।" ইনোসা রিন্সের কথার সাথে যোগ করলেন। "রানীর চমক ছিল তার স্বামী পাঁচজন, তারাই উক্ত পুস্তক পাঠ করে জন-সমাগমের আয়োজন করলে রানী। সবার বুঝতে বাকি রইল না রানী'র প্রকৃত সেবক তার স্বামীগন। নিয়ম গুলো বাইরের বিশ্বের মানুষদের নিয়মের সাথে মিলে, শুধু পুরুষের স্থলে নারী, নারীর স্থলে পুরুষ লেখা ছিল। যেমন, 'আলোচ্য দ্বীপের নারীগন তাদের নিজেদের কর্মস্থল সম্পর্কে নিজেরাই ভাববে ও স্বিধান্ত নিবেন। পুরুষ, যথা স্বামী, পিতা, পরিবারের অন্যন্য সদস্যরা বিন্দুমাত্র এতে বিরোধ করতে পারবে না। আমাদের এই পবিত্র দ্বীপের সেবকরা আপন গৃহে দেবীর মে্যাদা ক্ষুন্ন হতে দিবে না। আর সেবক হলেন আমাদের পুরুষ-সমাজ। দেবীগন বাহিরে বা গৃহের ভেতরের কাজ করিবেন, তা তাদের ইচ্ছা। কিন্তু যাতে দেবীসেবার ফলে কারো ভেতরে মনমালিন্য বা সমস্যা না তৈরি হয়, তাই পুরুষদের পরিবারের ভেতরের ও বাইরের কাজ শেখা পরম কর্তব্য!' এটি ছিল একটি, এমন এক সহস্র পাচটি নিয়ম তৈরি হল। পুরুষকে পিঠে উঠিয়ে নারীকে পৃথিবী ঘোরাতে হবে, কেননা তারা হলে দেবী' এর মত হল বিষয়টা।রথে চড়ে দেবতা দর্শনের ব্যবস্থা ছিল না বলেই রক্ষা পেয়েছিল ছেলেরা।" কিছুটা হেসে নিল ইনোসা।

"তো, আর কি কি নিয়ম তৈরি হতে পারে পুরুষের পদস্থলেনর জন্য? রানী সৈন্য-সামন্ত নিয়ে যুদ্ধের অভিসার করতেন নাতো। আমারতো মনে হয় ষৈন্যরা সব নারী হয়েছিয়েছিল, কেননা পুরুষ বসে বসে আপন অবমাননা শ্য করবে না?" মিরা বলল অনেকক্ষন পর!

"হতে তো অনেক কিছুই পারত, কিন্তু রাজ্যের অতীত কার্জ-কলাপ সবার স্মৃতিতে ঠেসে ভরিয়ে দিতে লাগল রানী; যারফলে রানীকে অতিক্রম করা দুঃসাধ্য ছিল সবার জন্য। তবে এটা ঠিক, রানী ইরা'র শাসনামলে রাজ্যের উন্নতি সাধন হয় প্রচুর পরিমানে। রাজ্যের ভেতরে নিম্নবিত্ত বলে কিছু ছিল না। যাদের ইতিহাসে দেবী-পূজা করার প্রচলনও ছিলনা, তারাই মাতৃশাসনকৃত পরিবারে রূপ নিল। এই অধ্যায় চিরন্তন না হতে পেরেও বেশ গভীর ছাপ রেখেছিল এই দ্বীপের মানুষের মনে। রাজ্যের উন্নয়ন সবাইকে রানীর সহায়তা করতে বাধ্য করল। তবে রাজ-পরিবারের সাথে শত্রুতা তো কিছু ব্যক্তির চিরকালই থাকে। তাদের কিছু প্রচরনার ফলেই কিন্তু রানী শক্তিশালী রাজ্য তৈরিতে মন দেন।" ইনোসা বলল।

"তোমাদের কেউ কি কিছু খাবে? আমার খুব খেতে ইচ্ছা করছে।" অড্রি বলল মুখ-বাকিয়ে। তাকে সত্যিই ক্ষুধার্ত দেখাচ্ছিল। "আমি পিজ্জা ওর্ডার করেছিলাম, জেইন গরম করে আনবি? ততক্ষনে আমি ড্রিংকস নিয়ে আসি।" রিন্স উঠে দাড়াতে দাড়াতে বলল। জেইন সম্মতিসূচক মাথা নাড়িয়ে রিন্সের সাথে চলল ভেতরে।
(চলবে)
সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই মার্চ, ২০১৩ রাত ৮:২৩
৫টি মন্তব্য ৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমার প্রফেশনাল জীবনের ত্যাক্ত কথন :(

লিখেছেন সোহানী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সকাল ৯:৫৪



আমার প্রফেশনাল জীবন বরাবরেই ভয়াবহ চ্যালেন্জর ছিল। প্রায় প্রতিটা চাকরীতে আমি রীতিমত যুদ্ধ করে গেছি। আমার সেই প্রফেশনাল জীবন নিয়ে বেশ কিছু লিখাও লিখেছিলাম। অনেকদিন পর আবারো এমন কিছু নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমি হাসান মাহবুবের তাতিন নই।

লিখেছেন ৎৎৎঘূৎৎ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



ছোটবেলা পদার্থবিজ্ঞান বইয়ের ভেতরে করে রাত জেগে তিন গোয়েন্দা পড়তাম। মামনি ভাবতেন ছেলেটা আড়াইটা পর্যন্ত পড়ছে ইদানীং। এতো দিনে পড়ায় মনযোগ এসেছে তাহলে। যেদিন আমি তার থেকে টাকা নিয়ে একটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সাংঘাতিক উস্কানি মুলক আচরন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪



কি সাঙ্ঘাতিক উস্কানিমুলক আচরন আমাদের রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রীর । নাহ আমি তার এই আচরনে ক্ষুব্ধ । ...বাকিটুকু পড়ুন

একটি ছবি ব্লগ ও ছবির মতো সুন্দর চট্টগ্রাম।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৮:৩৮


এটি উন্নত বিশ্বের কোন দেশ বা কোন বিদেশী মেয়ের ছবি নয় - ছবিতে চট্টগ্রামের কাপ্তাই সংলগ্ন রাঙামাটির পাহাড়ি প্রকৃতির একটি ছবি।

ব্লগার চাঁদগাজী আমাকে মাঝে মাঝে বলেন চট্টগ্রাম ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

×