somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

অগ্রজ কূপমন্ডুক

২৭ শে নভেম্বর, ২০২৩ রাত ১১:২৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :




সত্যিই আমার ঘুমের সময় পেরিয়েছে। আমার এখন গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন থাকার কথা। হঠাৎ একটি সত্য ঘটনা খোচাতে শুরু করল মগজে। ব্লগের পরিবেশের প্রভাব ও হতে পারে। আমার জ্ঞানের পরিধি এতো কম যে আমি কারো ভান্ডার যে যাচ্ছেতাই তা তাদের মুখের উপর বলতে পারিনা।

কে জানে, আমি যা লিখি তা কোন স্তরে গিয়ে ঝুলে থাকবার মতো হলো কিনা এর ব্যাপারে ভয়ে থাকাটাই একমাত্র কারণ হতে পারে। তাই বলে আমি কিছু বলবো না? যান বললাম,

" প্রত্যেক বাঙালি লেখক নিজের লেখা নিয়ে অহমিকায় ভুগেন। মনে করেন অন্যরা তার চেয়ে বাজে লেখক। প্রত্যেক বাঙালি পাঠক নিজের জনরার বাইরের বইকে অখাদ্য ভাবেন।"

এর পেছনে বহুত যুক্তি আসবে যে আমার উক্ত কথাগুলো সম্পুর্ন ঠিক নয়। কিন্তু প্রিয়, আমার অভিব্যাক্তি আমি প্রকাশ করতেই পারি। আগে সত্য ঘটনাটি বলি। কোন এক মন্তব্যে কাউকে বলেছিলাম, লিখবো।

বই মেলা থেকে ব্যাগভর্তি অনুবাদ বই কিনে আমি আর আমার মেজদি গিয়েছিলাম মঞ্চনাটক দেখতে শিল্পকলায়। নাটক শুরু হবার আগে ভাইবোনে কথা হচ্ছিলো। ওর চেয়ে আমাকে মনযোগ দিয়ে কেউ শোনে না এ ধরায়। তাকে বলছিলাম, আগেকার দিনের সবচেয়ে ধনী রাজারা তাদের পুরো জীবদ্দশায় এতো সুন্দরী নারী দেখতো না যতটা এখনকার একটা বারো বছরের ছেলে পনেরো মিনিটে দেখতে পায়। There is something definitely going wrong.

তো এই বিষয়ে কথা বলার সময় একজন লোক অল্প অল্প করে এগুচ্ছিলো আমাকে লক্ষ্য করে। চল্লিশোর্ধ্ব হবেন। আমি বয়স ঠিক বুঝতে পারি না। ভাবলাম বোধয় কফি বিক্রেতা হবেন। এসে বললেন,

- এই বাচ্চা ছেলে এতো কিছু জানলো কিভাবে? আমি ওর কথা দূর থেকে শুনছিলাম। ও এতো কথা কিভাবে জানলো।
মেজদি বলল, ও আসলে অনেক বই পড়ে তো। অনেক কিছু জানে। (আমার বোন আমাকে নিয়ে বাড়িয়ে বলে ফেলার ধৃষ্টতা দেখায় মাঝে মাঝে।) এরপর তিনি মাথা নাড়তে নাড়তে বললেন,
- আমি ওর বয়সী কাউকে এভাবে কথা বলতে দেখি নি। এমন বাচ্চা ছেলে,,,
হঠাৎ মনে হলো। বেশি বাচ্চা বাচ্চা শুনছি। বললাম,
- স্যার, আমি বাচ্চা পড়াই। প্রাইমারিতে। আমার ত্রিশ চলছে।
তিনি বললেন,
- ভালো ভালো। তা বাবা এ অবস্থার সমাধান কী?
আমি বললাম,
- কোন সমাধান নেই। উত্তরণের কোন পথ নেই। বই কেনার দিন শেষ। আমি সাহিত্যের ছাত্র। আমার বন্ধুরা কোনদিন জব,পাওয়ার প্রাক্টিস ছাড়া কোন বই নিয়ে কথা বলেনি। দ্যাট শিপ হ্যাজ সেইল্ড লং টাইম এগো।
তিনি বললেন,
- আমি তোমার মতোই চিন্তা করি। আমার বইতেও আমি তাই লিখেছি।
চমকে গেলাম। আমি জীবনে কোন লেখকের সাথে হাত মিলাইনি। জিজ্ঞেস করলাম,
- আপনি ব্লগে লেখেন?
- না ব্লগ কী জানিনা। রবীন্দ্রনাথ আর শরতচন্দ্রের পর যদি কেউ থেকে থাকে তাহলে সে কাজী ইমরান।
আমি বললাম,
- কে সে।
তিনি আবারো হাত বাড়িয়ে বললেন,
- আমার নাম কাজী ইমরান।
আমি বললাম,
- গাজী ইমরান?
তিনি বললেন,
- কাজী ইমরান। তুমি কি কিনেছো যা তা। এরা কী লেখক নাকি? অনুবাদ কইরা খায়। নালন্দা থেকে কিনেছো? ওরা আমার বই ও বের করে।
আমার দ্বিতীয় বার অবাক হবার পালা। ভাবলাম, আমাকে ভড়কে দিয়ে দেখলো নাকি? কতো ধরনের মানুষ ঢাকায়। এমন সময় নাটকের বেল। বিদায় নিয়ে চলে আসবো এমন সময় পাশের একটি ছেলে বলল,
- এতক্ষণ আপনাদের দুজনকে শুনছিলাম। আমাদের জেনারেশনের জন্য আপনাদের ম্যাসেজ কী?
এইবার আমি অগ্রজ। একটু জ্ঞান ঝাড়বো না তা কী হয়? সেও ভাবুক। কতো ধরনের মানুষ চারদিকে। বললাম,
- সরি। বই পছন্দ হলে, মঞ্চ নাটক পছন্দ হলে তোমাকে একাই আসতে হবে। একাই থাকতে হবে। বিচ্ছিন্ন লাগবে তবে ভালো থাকবে।
এরপর ভাইবোন মিটিমিটি হাসছিলাম। কারণ ঐ লেখক বলেছেন, " রবীন্দ্রনাথ আর শরতচন্দ্রের পর যদি কেউ থেকে থাকে তাহলে সে কাজী ইমরান।"
অহমবোধের ব্যাপারটা বোঝা গেলো। এইবার আসি আমার বক্তব্যে। কিছু অনুজদের কাছে আমি প্রযুক্তির ব্যপারে আলোচনা করি। আমার এই পাহাড় সমান ইগো নিয়েও তাদের তাচ্ছিল্যের হাসি সহ্য করে। কিছু কিছু অনুজদের লেখায় আমি হা হয়ে থাকি। আমার নীরেট ফাপা মাথায় দেরিতে ঢুকে। যেমন একজন ছিলো হোস্টেলে থাকার সময়, নাফিস নামে এক ইন্টার পড়ুয়া ছেলের কবিতা। কি কঠিন আর দুর্বোধ্য। কিন্তু কি সুখপাঠ্য! কিন্তু মানে জিজ্ঞেস করলে ও কখনো তাচ্ছিল্য করতো না। আগেই বলি, আমার ইগোর উপরে বরই পাতা পড়লেই আমি নিজেকে চিনতে পারিনা। আক্রমণের ভার আমার অন্য সত্ত্বাটিকে দিতে হয়। কিন্তু কিছু কিছু সময়ে অনুজদের ক্ষমা করার গুনটি বজায় রাখি।অনেক অগ্রজকেই আমি কুপমন্ডুক হিসেবে আবিষ্কার করেছি। একটা নির্দিষ্ট ধরনের জ্ঞানের আঁধার একেকজন। অসম্মানিত করেছি। তার ফলাফল হিসেবে এখনকার অনুজদেরটা ফেরত পাচ্ছি। প্রকৃতি অসামঞ্জস্যপূর্ণ কিছুই পছন্দ করে না। আমার মনে আছে আমি একজনের আক্রমণাত্মক কমেন্টের ও ডালভাত উত্তর দিয়েছি। এটা আমার জন্য বিরল। আমিও কারো কারো লেখা এভাবেই ছুড়ে ফেলি। প্রকৃতির প্রতিশোধও মাথা পেতে নিতে হয়।
লেখায় বোঝা যায় কে কেমন?


নির্বো একজন পরিশ্রমী লেখক। অনেকের চেয়ে ভালো লিখেন। তবে অভিজ্ঞতাকে বিট করা অসম্ভব এটা তার জানা উচিত। বয়সের কারণে হোক, আর যেভাবেই হোক হটহেডেড হয়ে যে আচরণ করেছেন তা আমার মতো ম্যাগ্লোম্যানিয়াকের কাছেও খারাপ লেগেছে। কারণ তিনি বুঝতে পারবেন, দোজ হু হার্ট মোর, বিয়ার মোর। যৌক্তিকতা পছন্দ করেন এমন মানুষ, অবশ্যই খারাপ লাগবে। তার লেখা কম মেধাবী বিধায় উইকেন্ডের জন্য রেখেছি। কিন্তু তাকে হারানো ব্লগের ক্ষতি হবে। ঐ পোস্টটি এবং তার কিছু মন্তব্য আমার কাছে কুরুচিপূর্ণ লেগেছে। তাকে সুক্ষ্ণভাবে উস্কে দেয়া হয়েছে বলে মনে হয়েছে। আমার ভুল হতে পারে। আমার হিউমারের উপর ইদানীং আমার কোন বিশ্বাস নেই। তার প্রতি তার অগ্রজ কুপমন্ডুকের একটি উক্তি,

" অবিবাহিত হয়ে বিবাহিতদের কিছু রসিকতায় অংশগ্রহণ করতে নেই।"

আমার বিবাহিত বন্ধুরা আমাকে অনেক আজেবাজে মন্তব্য করেন। আমি অনুপ্রাণিত হয়ে একটি নোংরা প্রতিউত্তর করাতে ঐ বন্ধুর হুমকি সমেত তার চোখে চোখ রেখে কথা বলা বন্ধ হয়ে গিয়েছে। 'খালি আপনে বলসেন বিধায় ব্লগে আসছি' বলে এসে পড়েন। জীবনটা খুব ছোট।
দুর্দান্ত কিছু মিস করতে চাই না।

আর আপার প্রতি অনুরোধ রইলো, নির্বোর আর আপনার ঝামেলা না মিটুক। ব্যাটা ভুগুক কিছু দিন। আপনি লেখা নিয়ে কৃপণতা করলে ব্লগে আসতে সত্যিই ভালো লাগবে না। আপনার প্রতিও একটি উক্তি রইলো,

" ভালো লেখকের ভালো মানুষ হবার দায় নেই।(কোন ক্ষণজন্মার উক্তি। নাম মনে নেই)

আপা কবির সুমন নামে একজন গায়ক বলেছেন, আমি বাংলার জন্য যা করেছি তার জন্য বাংলার আমার প্রতি দায় থাকা উচিৎ। জাতিস্মর ছবির পরের সাক্ষাৎকারে। নির্বোর ও এমন একটি বিবৃতি আছে দেইবাদ নিয়ে। বুঝতেই পারছেন? তাকে ঠিক অসমাপ্ত রংধনু করে রাখা যাবে না। আমার আজকে তোলা ছবিটার মতো।

বিঃদ্রঃ মধ্যস্থতাকারী হিসেবে আমার জুড়ি নেই। এতটুকুতেই কাজ হয়ে যাবার কথা।

সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে নভেম্বর, ২০২৩ রাত ১১:৫১
৬টি মন্তব্য ৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

জীবন চলবেই ... কারো জন্য থেমে থাকবে না

লিখেছেন অপু তানভীর, ০২ রা মে, ২০২৪ সকাল ১০:০৪



নাইমদের বাসার ঠিক সামনেই ছিল দোকানটা । দোকানের মাথার উপরে একটা সাইনবোর্ডে লেখা থাকতও ওয়ান টু নাইন্টি নাইন সপ ! তবে মূলত সেটা ছিল একটা ডিপার্টমেন্টাল স্টোর। প্রায়ই... ...বাকিটুকু পড়ুন

যুক্তরাষ্ট্রে বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিলিস্তিনের পক্ষে বিক্ষোভ ঠেকাতে পুলিশি নির্মমতা

লিখেছেন এমজেডএফ, ০২ রা মে, ২০২৪ দুপুর ১:১১



সমগ্র যুক্তরাষ্ট্র জুড়ে ফিলিস্তিনের পক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসগুলোতে বিক্ষোভের ঝড় বইছে। যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিলিস্তিনের পক্ষে বিক্ষোভ কর্মসূচী অব্যাহত রয়েছে। একাধিক বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বিক্ষোভ দমনের প্রচেষ্টা চালালেও তেমন সফল... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছাঁদ কুঠরির কাব্যঃ ০১

লিখেছেন রানার ব্লগ, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ৯:৫৫



নতুন নতুন শহরে এলে মনে হয় প্রতি টি ছেলেরি এক টা প্রেম করতে ইচ্ছে হয় । এর পেছনের কারন যা আমার মনে হয় তা হলো, বাড়িতে মা, বোনের আদরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

হিটস্ট্রোক - লক্ষণ ও তাৎক্ষণিক করণীয়

লিখেছেন ঢাকার লোক, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:০৭

সাধারণত গরমে পরিশ্রম করার ফলে হিটস্ট্রোক হতে পারে। এতে দেহের তাপমাত্রা অতি দ্রুত বেড়ে ১০৪ ডিগ্রী ফারেনহাইট বা তারও বেশি হয়ে যেতে পারে।

হিটস্ট্রোক জরুরি চিকিৎসা প্রয়োজন। চিকিৎসা... ...বাকিটুকু পড়ুন

আল্লাহকে অবিশ্বাস করার সংগত কোন কারণ নাই

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৩



সব কিছু এমনি এমনি হতে পারলে আল্লাহ এমনি এমনি হতে সমস্যা নাই। বীগ ব্যাং এ সব কিছু হতে পারলে আল্লাহও হতে পারেন। সব কিছুর প্রথম ঈশ্বর কণা হতে পারলে আল্লাহও... ...বাকিটুকু পড়ুন

×