শেখ হাসিনার অর্জন ও অপপ্রচারের রাজনীতি।
------------------------------------------------
বাংলাদেশের ভূরাজনীতি আজ এমন এক সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে, যেখানে নেতৃত্বের সঠিক সিদ্ধান্তই রাষ্ট্রের ভবিষ্যৎ নিরাপত্তা, সম্পদ ও আন্তর্জাতিক অবস্থান নির্ধারণ করে। স্বাধীনতার পরে বঙ্গবন্ধুর পর যে নেতা দীর্ঘমেয়াদে দেশের ভৌগোলিক, অর্থনৈতিক ও সামুদ্রিক স্বার্থকে সবচেয়ে সুসংগঠিতভাবে সংরক্ষণ করেছেন, তিনি শেখ হাসিনা এটি এখন আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও স্বীকৃত সত্য।
দীর্ঘদিন ধরে স্থবির থাকা ভারত–বাংলাদেশ ছিটমহল ইস্যু ছিল দুই দেশের কূটনৈতিক ইতিহাসের জটিলতম সমস্যাগুলোর একটি। চারপাশে বাংলাদেশ ঘেরা ভারতের ভেতর বাংলাদেশের ভূখণ্ড এবং বাংলাদেশের ভেতর ভারতের ভূখণ্ড এই অস্বাভাবিক বাস্তবতা সাধারণ মানুষের জীবনকে যেমন দুর্বিষহ করেছিল, তেমনি সীমান্ত নিরাপত্তা, শাসনব্যবস্থা ও মানবাধিকার রক্ষাতেও ছিল বড় বাধা। শেখ হাসিনার নেতৃত্বেই এই দীর্ঘসূত্রতা অবসান হয়। কূটনৈতিক দক্ষতা, সাহসী আলোচনার কৌশল ও পারস্পরিক আস্থার ভিত্তিতে বাংলাদেশ ভারত থেকে প্রায় ১০ হাজার একর জমি পুনরুদ্ধার করে। এ ছিল কেবল জমি আদায় নয়, বরং রাষ্ট্রীয় শৃঙ্খলা ও মানবিক মর্যাদা পুনঃপ্রতিষ্ঠার এক ঐতিহাসিক সাফল্য।
শুধু স্থল নয়, সমুদ্রসীমা নিয়েও বাংলাদেশ পেয়েছে যুগান্তকারী বিজয়। আন্তর্জাতিক আদালতের রায়ে বাংলাদেশ যে বিশাল সামুদ্রিক এলাকা পেয়েছে, সেখানে রয়েছে অপার খনিজসম্পদ গ্যাস, তেল, খনিজ বালু ও সামুদ্রিক সম্পদের বিপুল সম্ভাবনা। এই এলাকাকে ঘিরেই আন্তর্জাতিক আগ্রহ বাড়ছে; কিছু বিদেশি শক্তি সেন্টমার্টিনসহ কৌশলগত অঞ্চলগুলো নিয়ে আগ্রহ দেখায়। কিন্তু আইনি লড়াই, কূটনৈতিক চাপ-সংঘর্ষ ও আন্তর্জাতিক ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ সবকিছু সামলে বাংলাদেশ এই সম্পদ-সমৃদ্ধ সমুদ্রাঞ্চলের মালিকানা বজায় রাখতে পেরেছে কেবল দূরদর্শী রাষ্ট্রনেতৃত্বের কারণে।
তবুও দেশের রাজনীতিতে একদল মানুষ আছে, যারা চোখে আঙুল দিয়ে দেখানো সত্যও স্বীকার করতে চায় না। তারা গুজব ছড়ায়, অপপ্রচার করে যেন বাংলাদেশ ভারতের কাছে বিক্রি হয়ে গেছে। অথচ বাস্তবতা হলো ভারতকে জমি ফিরিয়ে দিতে হয়নি, বরং নিজেদের মানচিত্র ও সংবিধান পরিবর্তন করতে হয়েছে বাংলাদেশ–ভারত চুক্তির বাস্তবায়নের জন্য। এসবই প্রমাণ করে চুক্তিগুলো ছিল ন্যায়সঙ্গত, স্বচ্ছ ও দেশের স্বার্থবাহী।
ভারতের সঙ্গে শেখ হাসিনা সরকারের সময় যে যে চুক্তি হয়েছে সেসব নিয়ে বিরোধীরা বারবার ‘গোপন চুক্তির’ অভিযোগ তুলেছে। কিন্তু আন্তর্জাতিক বিশ্লেষক, বিরোধী নেতা এমনকি ড. মুহাম্মদ ইউনূস পর্যন্ত কাউকেই কোনও গোপন চুক্তি বা গোপন লেনদেনের প্রমাণ দেখাতে দেখা যায়নি। যদি সত্যিই এমন কিছু থাকত, তারা তা প্রকাশ করতে এক মুহূর্ত দেরি করতেন না। বাংলাদেশের মতো গণতান্ত্রিক দেশে কোনও সরকারের পক্ষে গোপনে রাষ্ট্র বিক্রি করা তো দূরের কথা কোনও ছোট সিদ্ধান্তও জনমতের বাইরে নেওয়া যায় না।
বাংলাদেশের স্বার্থ রক্ষায় যে নেতৃত্ব সাহসী, সৎ ও সফল তার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানানো দেশের প্রতি দায়বদ্ধতার অংশ। সমালোচনা অবশ্যই হতে পারে; কিন্তু সত্যের ভিত্তিতে, দেশকে নিয়ে। অপপ্রচার নয়, তথ্যভিত্তিক আলোচনা এই হোক আজকের রাজনীতির সবচেয়ে জরুরি নীতি।
-- সালাউদ্দিন রাব্বী
সংখ্যালঘু বাচাও আন্দোলন, বাংলাদেশ
১২৭ মতিঝিল, বা/এ,ঢাকা- ১০০০
বাংলাদেশ

সর্বশেষ এডিট : ২৫ শে নভেম্বর, ২০২৫ রাত ১০:২৩

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।


