somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পবিত্র ধূলো

২৭ শে এপ্রিল, ২০১৩ রাত ১২:১১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


দূর্ঘটনার সাথে সাথে উদ্ধারকাজে সেনাবাহিনী মোতায়েনের সিদ্ধান্ত সঠিক ছিল । দায়িত্ববোধের বাইরে আর্মি, দমকল, পুলিশ অসাধারণ মানবিক বোধের পরিচয় দিয়েছেন। ঘটনাস্থলে কৌতুহলী, উৎসুক, উদ্বিগ্ন জনতাকে অসীম ধৈর্য্যের সাথে তারা মোকাবেলা করেছেন।
তাদেরকে স্যালুট।

কিন্তু ... কিন্তু এবং কিন্তু ...

এর বাইরে একদল ''তরুণের'' কথা আমি বলতে চাই।

ঘটনার প্রথম রাতেই চমকে উঠি- বিডি সাইক্লিস্ট গ্রুপসহ আরও কয়েকটি গ্রুপের ফেসবুক স্ট্যাটাস দেখে।

তারা লিখলো, আমরা সাভার যাচ্ছি।

আমার হাসি পেলো, তারা সাভার যাচ্ছে। হা হা হা। সাথে গোটা দশেক টর্চ আর কিছু শুকনো খাবার । পুনরায় হা হা হা এবং হো হো হো।

এরপর টিভি দেখে আমার চোখ কপালে উঠলো। একদল তরুণ ধ্বংসস্তুপের উপর উঠে গেছে। জীবনের মায়া তুচ্ছ করে তারা চিপাচাপা দিয়ে ''জীবিত'' মানুষ খুঁজছে। শুধু তাই নয়, তারা বাইরে এসে চিৎকার করে জানাচ্ছে, ভেতরে জীবিত মানুষ আছে। ওদের বাতাস লাগবে, অক্সিজেন লাগবে, পানি লাগবে।

কয়েকজনকে দেখলাম, ঝুকিবহুল জায়গায় দাঁড়িয়ে, বড় বড় কাগজে ''পানি'', ''হাতুড়ি'', -ইত্যাদি লিখে ভবণের সামনে নিরাপদ দূরত্বে দাঁড়িয়ে থাকা মানুষদের দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা করছেন।

এরপর সাভারের দিকে একটা 'কাফেলা' তৈরী হলো। পানি, বিস্কুট, শুকনো খাবার নিয়ে ছেলেপেলে সাভারে ছুটলো।

এইসব অনামা, অখ্যাত তরুণদের জন্য সাভার পৌছানো খুব সহজ ছিল না।
তারা সেলিব্রেটি নন, দলীয় কর্মী নন, টকশোর ''বান্ধা'' অতিথি নন।
যতদূর পারলো তারা গাড়িতে গেলো, বাকিটা হেঁটে।

অবার্চীন, অবুঝ তরুণদের আরেকটি দল, জীবনের মায়া ভুলে ধ্বংসস্তুপের সম্ভাব্য সকল ফাঁক ফোকর দিয়ে ভেতরে ঢুকে গেলো। তারাই বাইরে খবর বয়ে আনলো, ভেতরে অসংখ্য জীবিত মানুষ আছে। তাদের 'অক্সিজেন' লাগবে।

ঢাকার সকল স্টোর ফাঁকা হয়ে গেল। লাজ ফার্মার মতো নিরেট ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ১০০০ টাকার অক্সিজেন সিলিন্ডার ৮৩০ টাকায় দেয়া শুরু করলো।
ম্যাজিকটা কোথায়? শুধু বললেই হবে, এই অক্সিজেন সাভার যাবে।

প্রশেফশাল বাহিনী ব্যাপক মাত্রায় ঝুঁকি নেবে না, নেয়া উচিতও নয়।

আর রাজনৈতিক ''তরুণ প্রজন্ম'' তো হিসাব আর মিডিয়া কাভারেজের বাইরে কোনো কাজ করে না, করবেও না, করেও নাই।

এর বাইরে এইসব ''অবুঝের দল'' এলোমেলোভাবে গত কয়েকদিনে যা করলো, তার ফল হয়েছে দুটি :

১. এতো ভয়াবহ দূঘর্টনার পরও দুই হাজারেরও বেশি জীবিত মানুষ উদ্ধার হয়েছে। আজই উদ্ধার হয়েছে ১০০ জীবিত মানুষ। আমার জানা মতে, এমন ঘটনা বাংলাদেশে পূর্বে কখনো ঘটেনি। এটা রেকর্ড।

২. এইসব তরুণদের কেউ কেউ আহত কিংবা অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। তাদের কেউ কেউ হাসপাতালে।

সেনাবাহিনী, দমকল, পুলিশ- দায়িত্ব পালনের জন্য এদেরকে আমি স্যালুট জানাবো।

কিন্তু এইসব তরুণদের আমি স্যালুট দেবো না।
এদের কাউকে আমি সামনে পেলে পায়ের ধুলো নেবো।
সেই ধুলো নিজের মাথায় ছোঁয়াবো।
সেই ধুলো আমার দুই কণ্যা সন্তানের গায়ে মেখে দেবো।

এতো পবিত্র ধুলো- আমি আর কোথায় পাবো ?
১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

স্মৃতিপুড়া ঘরে

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৩০



বাড়ির সামনে লম্বা বাঁধ
তবু চোখের কান্না থামেনি
বালিশ ভেজা নীরব রাত;
ওরা বুঝতেই পারেনি-
মা গো তোমার কথা, মনে পরেছে
এই কাঠফাটা বৈশাখে।

দাবদাহে পুড়ে যাচ্ছে
মা গো এই সময়ের ঘরে
তালপাতার পাখাটাও আজ ভিন্নসুর
খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

গরমান্ত দুপুরের আলাপ

লিখেছেন কালো যাদুকর, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৫৯




মাঝে মাঝে মনে হয় ব্লগে কেন আসি? সোজা উত্তর- আড্ডা দেয়ার জন্য। এই যে ২০/২৫ জন ব্লগারদের নাম দেখা যাচ্ছে, অথচ একজন আরেক জনের সাথে সরাসরি কথা... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাজীব নূর কোথায়?

লিখেছেন অধীতি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:২৪

আমি ব্লগে আসার পর প্রথম যাদের মন্তব্য পাই এবং যাদেরকে ব্লগে নিয়মিত দেখি তাদের মধ্যে রাজীব নূর অন্যতম। ব্যস্ততার মধ্যে ব্লগে কম আসা হয় তাই খোঁজ-খবর জানিনা। হঠাৎ দু'একদিন ধরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বৃষ্টির জন্য নামাজ পড়তে চায়।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৩৮



ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে বৃষ্টি নামানোর জন্য ইসতিসকার নামাজ পড়বে তার অনুমতি নিতে গিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এটির অনুমতি দেয়নি, যার জন্য তারা সোশ্যাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

=তুমি সুলতান সুলেমান-আমি হুররাম=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৩৬



©কাজী ফাতেমা ছবি

মন প্রাসাদের রাজা তুমি, রাণী তোমার আমি
সোনার প্রাসাদ নাই বা গড়লে, প্রেমের প্রাসাদ দামী।

হও সুলেমান তুমি আমার , হুররাম আমি হবো
মন হেরেমে সংগোপনে, তুমি আমি রবো।

ছোট্ট প্রাসাদ দেবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×