somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

প্রবাসী ভাবীরা ;)

২২ শে অক্টোবর, ২০১৪ বিকাল ৪:০৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

অনেকের অভিমত, ব্লগে নাকি এখন আর হালকা পোষ্ট আসেই না; সব নাকি গুরু গম্ভীর আর জ্ঞান বিতরণ মূলক পোষ্ট! তাই একটা হালকা বিষয়ে লেখার, হালকা একটা প্রচেষ্টা আর কি ... ... ... ;)

প্রসংগ, যেমনটি টাইটেলে লিখেছি - প্রবাসী ভাবীদের নিয়ে... অসমর্থিত সুত্র মতে বাংলাদেশের এখন প্রায় এক কোটি লোক প্রবাসী; মানে জীবিকার প্রয়োজনে বা উন্নত জীবনের সন্ধানে বিদেশের বসবাস করছেন। প্রবাসী এই বিশাল জনগোষ্ঠীকে প্রধানত দুই ভাগে ভাগ করা যায়, এক- অশিক্ষিত বা অল্প-শিক্ষিত শ্রমিক; দুই- উচ্চশিক্ষিত বা হাইলি কুয়ালিফাইড প্রফেশনাল। প্রথম গুরুপের প্রবাসীরা সাধারণত পরিবার সঙ্গে করে আনতে পারেন না; পরিবার ছাড়া তাদের বছরের পর বছর কাটাতে হয়। দ্বিতীয় গুরুপের প্রবাসীরা, অর্থাৎ যারা বিদেশে স্কলারশিপ নিয়ে পড়তে আসেন বা ভাল চাকুরী নিয়ে আসেন, তারা অনেকেই সঙ্গে করে তাদের স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে আসতে পারেন। “প্রবাসী ভাবীরা” বলতে মূলত আমি সেইসব ভাবীদের কথাই বলছি, যারা স্বামীর সাথে বিদেশে এসেছেন, এবং সেখানেই সংসার করছেন। একটু দেখা যাক, কেমন আছেন আমাদের প্রবাসী ভাবীরা!!

সঙ্গত কারণে, অধিকংশ প্রবাসী ভাবীরা উচ্চ-শিক্ষিত, এবং তাদের মধ্যে অনেকেই দেশে ভাল জব করতেন; বিদেশে এসে তাদের অধিকংশ-ই বেকার হয়ে যান। অফুরন্ত সময় কিন্তু করার কিছু নেই। উনারা প্রথম যে সমস্যায় পড়েন সেটা হচ্ছে ‘কাজের লোকের’ সমস্যা। বাংলাদেশের শহরের অধিকংশ গৃহিণী-ই কাজের লোক নির্ভর; বিদেশে এসে উনারা পড়েন মহা ফ্যাসাদে। বাসার অন্যান্য কাজ যেমন তেমন, রান্না করতে গিয়ে বারবার দেশে মা বা বড় বোনদের ফোন দিতে হয় বা স্কাইপিতে মশলার মাপ দেখে নিতে হয়। প্রথম প্রথম অখাদ্য রান্না করলেও একসময় এসব ভাবীরা পাকা রাঁধুনি হয়ে যান। এমন অসংখ্য উদাহরন আছে, দেশে হয়ত আলুভর্তা ভাত ছাড়া কিছু রাঁধতে পারতেন না কিন্তু ইউটিউবের রেসিপি দেখে দেখে এখন সুস্বাদু মিষ্টি-মিঠাই বানাচ্ছেন।
:D

অনেকে প্রথম প্রথম খুব হোম-সীক থাকেন। প্রতিদিন ৪/৫ ঘন্টা মায়ের সাথে ফোনে কথা বলা বা ২৪ ঘন্টা স্কাইপি অন রাখার উদাহরন ভুরিভুরি। বিশেষ করে কেও যদি প্রেগন্যান্ট হন বা সন্তান জন্ম দেন, সেই সময় গুলোতে আসলেই তাঁরা আপনজনদের পাশে থাকার প্রয়োজনীয়তাটা উপলব্ধি করতে পারেন।

সংসারে কষ্ট যতই থাক, অনেক দিক দিয়ে উনারা বিদেশে খুব শান্তিতে থাকেন। আমার অব্জারভেশনে, আমাদের দেশের অধিকংশ শিক্ষিত মেয়ে নিরঝঞ্জাট-নিজের মত করে সংসার করতে ভালবাসেন। বিদেশে আর যাই হোক শশুর বাড়ী রিলেটেড ঝামেলা নেই বললেই চলে; মাসে মাসে কিছু টাকা পাঠিয়ে দিলে আর ২/১ দিন একটু ফোন করলেই দায়িক্ত সম্পন্ন হয়। :|

অনেকে আবার বিদেশের মুক্ত পরিবেশে এসে নিজের কৃষ্টি-কালচার ভুলে বিদেশীদের মত হতে চেষ্টা করেন। পোশাক-আসাকেও পরিবর্তন আসে; বিদেশীদের অনুকরনে পোশাক পরতে গিয়ে অনেকেই নিজের বয়স বা সবাস্থের কথা ভুলে গিয়ে অন্যের মুখটিপে হাসির কারণও হন। ;)

আর একটা কথা বলব কি না বুঝতে পারছি না, ঝাড়ি খাওয়ার সম্ভাবনা আছে! যা আছে কপালে, সাহস করে বলেই ফেলি...B-)

বিভিন্ন দেশের বিভিন্ন শহরে ছোট ছোট বাংলাদেশী কমিউনিটি আছে কোন কমিউনিটির পরিবারের সংখ্যা ৪ বা ৫ ক্রস করলেই তার ভিতর আবার গ্রুপিং শুরু হয়ে যায়। এই বিভেদগুলো প্রথমদিকে তেমন একটা চোখে পড়ে না। কারণ সবাই সুশিক্ষিত; সবাই প্রচন্ড বুদ্ধিমান... সামনাসামনি এমনভাবে কথা বলেন যেন সবার সাথে সবার কত খাতির! কিন্তু একটু ভিতরের খোজ নিলেই বুঝা যায় একজনের সাথে আরেকজনের কেমন রেষারেষি। বিদেশে দুইটা কমিউনিটিতে দীর্ঘদিন থাকার অভিজ্ঞতা এবং বেশ কিছু কমিউনিটির গল্প শোনার অভিজ্ঞতা থেকে বলছি; বিদেশে বাঙ্গালী কমিউনিটির মধ্যে যত ঝামেলা তার অধিকংশের সূত্রপাত হয় এই ভাবীদের দ্বারা। X( উনারা সামনাসামনি অন্যভাবীর সাথে বিগলিত ব্যবহার করলেও কেন জানি আড়ালে অন্য ভাবীর সম্পর্কে ভাল কথা বলতে পারেন না। ফোনে ঘন্টার পর ঘন্টা গল্পের অধিকংশ সময়ই ব্যয় হয় আরেক ভাবীর গীবত গেয়ে। একই কোম্পানীর ফোনের মধ্যে বিনা পয়সায় কথা বলা আর ভাইভারের সহজ লভ্যতা এই গীবত চর্চা’য় অণুঘটক হিসেবে কাজ করে। মেয়েরা মায়ের জাতী, তাছাড়া উনারা সবাই জানেন গীবত ধর্মীয় এবং সামাজিক ভাবে কতটা নিন্দনীয় কাজ, তারপরেও তাদের কাছে এই কাজটা এত পছন্দের আমার মাথায় ঢোকে না।

যাই হোক ভাবীদেরকে আর না ক্ষেপায়; তাইলে ভাত বন্ধ হবার সম্ভাবনা আছে! আর একটা অব্জারভেশন বলেই শেষ করছি, উচ্চশিক্ষা শেষে বা চাকুরীর নির্দিষ্ট মেয়াদ শেষে অনেকেই দেশে ফিরতে চান, দেশে ফিরলে ভাল জবের সম্ভাবনাও থাকে; কিন্তু অনেক সময় দেশে আর ফেরা হয় না মূলত ভাবীদের আপত্তির কারণে। /:)

এনি ওয়ে, হাজার সমস্যা আর নিঃসঙ্গতা সত্ত্বেও আমাদের প্রবাসী ভাবীরা ভালই আছেন; কি বলেন???
২৫টি মন্তব্য ২৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বাংলাদেশের লোকসংস্কৃতিঃ ব্যাঙের বিয়েতে নামবে বৃষ্টি ...

লিখেছেন অপু তানভীর, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:০০



অনেক দিন আগে একটা গল্প পড়েছিলাম। গল্পটা ছিল অনেক এই রকম যে চারিদিকে প্রচন্ড গরম। বৃষ্টির নাম নিশানা নেই। ফসলের মাঠ পানি নেই খাল বিল শুকিয়ে যাচ্ছে। এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশি ভাবনা ও একটা সত্য ঘটনা

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:১৭


আমার জীবনের একাংশ জুড়ে আছে; আমি চলচ্চিত্রাভিনেতা। বাংলাদেশেই প্রায় ৩০০-র মত ছবিতে অভিনয় করেছি। আমি খুব বেছে বেছে ভাল গল্পের ভাল ছবিতে কাজ করার চেষ্টা করতাম। বাংলাদেশের প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাকি চাহিয়া লজ্জা দিবেন না ********************

লিখেছেন মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:৩৫

যখন প্রথম পড়তে শিখেছি তখন যেখানেই কোন লেখা পেতাম পড়ার চেষ্টা করতাম। সেই সময় দোকানে কোন কিছু কিনতে গেলে সেই দোকানের লেখাগুলো মনোযোগ দিয়ে পড়তাম। সচরাচর দোকানে যে তিনটি বাক্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

=এই গরমে সবুজে রাখুন চোখ=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:২১

০১।



চোখ তোমার জ্বলে যায় রোদের আগুনে?
তুমি চোখ রাখো সবুজে এবেলা
আমায় নিয়ে ঘুরে আসো সবুজ অরণ্যে, সবুজ মাঠে;
না বলো না আজ, ফিরিয়ো না মুখ উল্টো।
====================================
এই গরমে একটু সবুজ ছবি দেয়ার চেষ্টা... ...বাকিটুকু পড়ুন

কুড়ি শব্দের গল্প

লিখেছেন করুণাধারা, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:১৭



জলে ভাসা পদ্ম আমি
কোরা বাংলায় ঘোষণা দিলাম, "বিদায় সামু" !
কিন্তু সামু সিগারেটের নেশার মতো, ছাড়া যায় না! আমি কি সত্যি যাবো? নো... নেভার!

সানমুন
চিলেকোঠার জানালায় পূর্ণিমার চাঁদ। ঘুমন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

×