somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও পিতা-মাতার স্বপ্ন

১৯ শে জুন, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:৫৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বেলাল হোসাইন রাহাত
স্নাতক চূড়ান্ত পরীক্ষা শেষে গত ১৪ এপ্রিল আহ্ছানউল্লাহ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের চার ছাত্র নিখোঁজ হয়। তার মধ্যে দুজনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। এর আগে আরো পাঁচজনকে মুমূর্ষু অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। বাকী দু’জনের লাশ এখনো নিখোঁজ। স্নাতক চূড়ান্ত পরীক্ষা শেষে ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩৪ শিক্ষার্থী সেন্টমার্টিনে বেড়াতে আসেন। সেদিন বেলা দুইটার দিকে তাঁদের মধ্যে কয়েকজন সাগরে গোসল করতে নামলে নয়জন ভাটার টানে ভেসে যান। যার মধ্যে সাতজনকে উদ্ধার করা হয়েছে। এখনো নিখোজ আছে আরো দু’জন। যারা সেন্টমার্টিনে হারিয়ে গেছে, তাদের সাথে আমার ব্যক্তিগতভাবে কোনো পরিচয় ছিল না। তারপরেও আমার বিশ্ববিদ্যালয়ের বড় ভাইদের মত তারাও বড় ভাই। এই বয়সে ¯^াভাবিকভাবে বন্ধুদের সঙ্গে বেড়াতে ইচ্ছা কার না করে। তেমন ইচ্ছা নিয়ে উড়ে গিয়েছিলেন ইশতিয়াক বিন মাহমুদ, সাব্বির হাসান, শাহরিয়ার ইসলাম নোমান, এস এম গোলাম রহিম বাপ্পীসহ আরো অনেকে। যাদের নিয়ে তার পিতা মাতা বড় স্বপ্ন দেখতো, কিন্তু সেই স্বপ্ন আজ সেন্টমার্টিনের ঢেউয়ের সাথে মিশে গেল। বেড়াতে যাওয়ার আগে তারা ফেসবুকে স্টাটাস দিয়ে গিয়েছিল ‘বন্ধু চলে যাচ্ছি, নেটওয়ার্কের বাহিরে’। অবশেষে তারা সত্যিই দুনিয়ার নেটওয়ার্কের বাহিরে চলে গেল। পহেলা বৈশাখে এ খবর যখন শুনতে পেলাম, মনটা তখনই খারাপ হয়ে গেল। এমন তরুণদের এ অকালমৃত্যুতে আমরা গভীরভাবে শোকাহত। ঘটনার একদিন পর বিভিন্ন গণমাধ্যমে হারিয়ে যাওয়া বন্ধুদের ছবি প্রকাশিত হয়। দেখে সত্যিই খুব খারাপ লেগেছে। মনে হয়েছে ওই জায়গায় যদি আমি হতাম। তাহলে আমার পিতা-মাতা আমাকে নিযে যে স্বপ্ন দেখছেন তার কি হত। কক্সবাজার ও সেন্টমার্টিনে পর্যটকদের এ ধরনের অকালমৃত্যুতে আমাদেরকে ব্যথিত করেছে। এমন ঘটনা শুধু একদিন ঘটেনি। মাঝে মধ্যে আমরা পত্রপত্রিকায় এ ধরনের খবর শুনতে পাই। এমনিতেই সেন্টমার্টিনের সমুদ্র সৈকতের কিছু জায়গা রয়েছে বিপজ্জনক। সাধারণত এই সময়ে সমুদ্র অস্থির হয়ে উঠে। যে সময় পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচলের অনুমতি দেওয়া হয় না। এ বিপজ্জনক সময়ের মধ্যে সেখানে যাত্রা করেছেন অনেক পর্যটক। আমার জানি এ ধরনের দুর্ঘটনা বারবার ঘটার পর একটি সৈকত ব্যবস্থাপনা কমিটি হয়েছে। তারা পর্যটকদের নিরাপত্তার ব্যাপারে বিভিন্ন নির্দেশনা দিয়ে থাকেন। সেন্টমার্টিনে এ ধরনের কিছু থাকলে হয়তো দুর্ঘটনা এড়ানো সম্ভব হতো। যে পয়েন্টে পর্যটকেরা গোসল করতে নেমেছেন, সেটি অনেক সময় বিপজ্জনক হয়ে ওঠে। স্থানীয়রা এ পয়েন্টে নামতে সাধারণভাবে পর্যটকদের নিষেধ করেন। এ ক্ষেত্রেও শিক্ষর্থীদের সতর্ক করা উচিত ছিল। এর আগে ২০০৫ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই ছাত্রের অকালমৃত্যু হয়েছিল। সে সময় বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় বিষয়টি ভালভাবে উঠে এসেছিল। তারপরেও প্রশাসনিকভাবে সেন্টমার্টিনে পর্যটক নিরাপত্তার ব্যাপারে কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। শিক্ষামন্ত্রী যেমন প্রত্যেক প্রতিষ্ঠান প্রধানদের এ বিষয়ে সর্তক করবেন তেমনি বেসামরিক বিমান পরিবহণ ও পর্যটনমন্ত্রণালয়ের মুন্ত্রীকেও এ বিষয়ে যথাযথ উদ্যেগ নেওয়া প্রয়োজন বলে আমি মনে করি। যখন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্ররা প্রাতিষ্ঠানিক উদ্যোগে এ ধরনের ভ্রমণে যান, তাদের ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানেরও কিছু সতর্কমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা প্রয়োজন। একই সঙ্গে সংশ্লিষ্ট স্থানে যারা দায়িত্বে থাকেন তাদেরকেও যথাযথা বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন। যাতে কোনো পর্যটক নিজের জীবন বিপন্ন করে না ফেলেন।

শিক্ষার্থী, নৃবিজ্ঞান বিভাগ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়।




০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আজ রমনায় ঘুড়ির 'কৃষ্ণচূড়া আড্ডা'

লিখেছেন নীলসাধু, ১৮ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১২:২৬




আজ বিকাল ৪টার পর হতে আমরা ঘুড়ি রা আছি রমনায়, ঢাকা ক্লাবের পর যে রমনার গেট সেটা দিয়ে প্রবেশ করলেই আমাদের পাওয়া যাবে।
নিমন্ত্রণ রইলো সবার।
এলে দেখা... ...বাকিটুকু পড়ুন

আকুতি

লিখেছেন অধীতি, ১৮ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৩০

দেবোলীনা!
হাত রাখো হাতে।
আঙ্গুলে আঙ্গুল ছুঁয়ে বিষাদ নেমে আসুক।
ঝড়াপাতার গন্ধে বসন্ত পাখি ডেকে উঠুক।
বিকেলের কমলা রঙের রোদ তুলে নাও আঁচল জুড়ে।
সন্ধেবেলা শুকতারার সাথে কথা বলো,
অকৃত্রিম আলোয় মেশাও দেহ,
উষ্ণতা ছড়াও কোমল শরীরে,
বহুদিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

ক- এর নুডুলস

লিখেছেন করুণাধারা, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৫২



অনেকেই জানেন, তবু ক এর গল্পটা দিয়ে শুরু করলাম, কারণ আমার আজকের পোস্ট পুরোটাই ক বিষয়ক।


একজন পরীক্ষক এসএসসি পরীক্ষার অংক খাতা দেখতে গিয়ে একটা মোটাসোটা খাতা পেলেন । খুলে দেখলেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

কারবারটা যেমন তেমন : ব্যাপারটা হইলো কি ???

লিখেছেন স্বপ্নের শঙ্খচিল, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০২

কারবারটা যেমন তেমন : ব্যাপারটা হইলো কি ???



আপনারা যারা আখাউড়ার কাছাকাছি বসবাস করে থাকেন
তবে এই কথাটা শুনেও থাকতে পারেন ।
আজকে তেমন একটি বাস্তব ঘটনা বলব !
আমরা সবাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্প্রিং মোল্লার কোরআন পাঠ : সূরা নং - ২ : আল-বাকারা : আয়াত নং - ১

লিখেছেন মরুভূমির জলদস্যু, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:১৬

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
আল্লাহর নামের সাথে যিনি একমাত্র দাতা একমাত্র দয়ালু

২-১ : আলিফ-লাম-মীম


আল-বাকারা (গাভী) সূরাটি কোরআনের দ্বিতীয় এবং বৃহত্তম সূরা। সূরাটি শুরু হয়েছে আলিফ, লাম, মীম হরফ তিনটি দিয়ে।
... ...বাকিটুকু পড়ুন

×