
রাশিয়ান ঋন ৯১০০০ কোটি টাকা, সরকারের নিজস্ব অর্থায়ন ১৩০০০ কোটি টাকা। মোট প্রকল্প ব্যয় ১০৪০০০ কোটি টাকা। সাথে তিরিশ বছরে পরিশোধ্য ঋনের সুদ ৬৯০০০ কোটি টাকা। নীট খরচ ১৭৩০০০ কোটি টাকা।
আরো আছে.....
পারমানবিক বর্জ্য কে বা কাহারা ব্যবস্থাপনা করবে সে বিষয়ে এখনো চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত নাকি হয় নাই। রাশিয়ান ভাইয়েরা যদি বর্জ্য ফেরত নেয়, নিশ্চিত তার জন্য তাদের আরো টাকা দিতে হবে। সেটা কত আমার কোন ধারনা নাই। তবে এ প্রকল্পের সব হিসাব ই হাজার কোটি টাকায়। কয়েক হাজার কোটি তো হবেই।
তবে কিনা রাশিয়ান সংবিধানে নাকি অন্য কোন দেশে ব্যবহৃত পারমানবিক প্রকল্পের বর্জ্য ফেরত নেয়ার নিয়ম নাই। আমাদের শক্ত বিদেশ মন্ত্রনালয়ের যা যোগ্যতা তাতে তারা রাশিয়ার সংবিধান পরিবর্তন করতে পারবেন বলে বিশেষ আস্থা পাই না।
যদি বর্জ্য ফেরত দিতে না পারি তবে তা আগামী কয়েকশত বছর পর্যন্ত আমাদের ই রক্ষনাবেক্ষন করা লাগবে। আমাদের কর্মকর্তাদের যে সাগরসম সরকারী টাকা খরচের হৃদয় তাতে বর্জ রক্ষনাবেক্ষন ব্যয় লক্ষ্য কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাওয়া কোন অবাস্তব বিষয় নয়।
এর পরে আছে নিরাপত্তা খরচ, এ পারমানবিক প্রকল্প ঘিরে উন্নত সামরিক ও প্রযুক্তিগত নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিতে হবে। টেকনিকা ব্যপারে তো আমার তেমন ধারনা নেই, সামরিক নিরাপত্তায় আরো খরচ কয়েক বিলিয়ন। সামরিক সরঞ্জাম ও রাশিয়া থেকে আমদানি করা হচ্ছে হয়ত।
এবার আসি এ প্রকল্পের পরিবেশগত ক্ষতির ব্যপারে। ক্ষতির ব্যপারে একটা নাকি সমীক্ষা হয়েছিল কোন কালে, সে ব্যপারে কোন উন্মুক্ত মঞ্চে আলোচনা তো হয় নি, এমন কি প্রকাশ হয়েছে বলেও শুনিনি।
এ তো গেল ভালর ভাল.....
আল্লাহ না করুক, এ প্রকল্পে যদি কোন দুর্ঘটনা ঘটে তবে পরিবেশ, বাস্তু, ফসল, খাদ্য ও পানির উপর যে প্রভাব পরবে তা টাকার অংকে কত সে ব্যপারে আমাদের বিশেষ ভাবে অজ্ঞ সরকারী কর্মকর্তা ও নেতাদের কোন হিসেব নিকেশ আছে বলে মনে হয় না। যদিও বালিশ তোলার খরচের হিসাব তারা পাক্কা জানেন।
খরচের পালা শেষ, এবার আয়ের পালা......
এতদিনে এইটুকু বুঝেছি লাভ করতে হলে পন্য কিনে বা উতপাদনে লাভ করা না গেলে, বিক্রি করে বিশেষ একটা লাভ করা যায় না। আমাদের সম্ভাব্য উৎপাদন খরচ নাকি প্রতি কিলোওয়াট ৫৫০০ ডলার। সে তো গেল যদি স্থাপন ব্যয় ১৭৩০০০ কোটি টাকার মধ্যে থাকে। অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে শেষ পর্যন্ত প্রতি কিলোওয়াট উৎপাদন খরচ যদি ১০০০০ ডলারের মদ্ধ্যে থাকে তো আল্লাহর বিশেষ কৃপা।
তামিলনাড়ুতে নাকি ভারত একটা প্লান্ট ভারত রাশিয়ান ভাইদের সহযোগিতায় ২০০৬ সালে চালু করেছিল। সেখানে প্রতি কিলোওয়াট খরচ ২৫০০ ডলার। সেই প্রকল্প এখন বাংলাদেশের প্রকল্পের সাথেই সমসাময়িক সময়ে এক্সটেনশন চলছে। নতুন প্লান্টে কিলোওয়াট খরচ ধরা হয়েছে ৩৫০০ ডলার।
মাশাআল্লাহ আমারা অনেক এগিয়ে।
প্রথম প্রকল্প শেষ করার আগেই আমরা দ্বিতীয় পারমানবিক প্রকল্প নিয়ে চিন্তা শুরু করেছি। মনে হচ্ছে প্রথম প্রকল্প থেকে আমাদের প্রচুর লাভ হচ্ছে।
একটা ১০০০ টাকার বালিশ যদি ৫০০০ টাকায় বিক্রি হয় (যদিও আরো বেশি), ১৮০০০ টাকার শোকেস যদি ৯০০০০ হাজার টাকায় বিক্রি হয় তো লাভ ৪০০%। অনেক লাভ। বালিশ কেনার প্রকল্পটি ১৭৩০০০ কোটি টাকার মধ্যে মাত্র ২৫ কোটি টাকার কাজ। তাতে ২০ কোটি লাভ। চেনা বালিশে যদি এত লাভ হয় তো অচেনা পারমানবিক কনায় যে কত লাভ তা আন্দাজ করা আমার সামর্থের বাইরে।
যাই হোক আমরা পারমানবিক জাতীতে উন্নিত হচ্ছি, খুব লাভ করছি। ভবিষ্যতে আমাদের পাড়ায় পাড়ায় রিয়াক্টর বসবে। অনেক লাভ হবে। যদি কোন দুর্ঘটনা ঘটে আমরা ফ্রি তেজস্ক্রিয়া খাব আর ওনারা তখন টেমস নদীর তীরে হাওয়া খাবেন।
যাই হোক আমি এখন ঢাকার ক্যালিফোর্নিইয়ায় আছি সেটাই বা কম কিসে?
সর্বশেষ এডিট : ২১ শে মে, ২০২২ রাত ১১:৩১

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



