মাওয়া থেকে শিবচরে লঞ্চ ভাড়া ৩০ টাকা। লকডাউন চলছে তাই লঞ্চ বন্ধ, কিন্তু দেদারসে স্পিডবোট চলছে। ভাড়া ২৫০ টাকা। ১০ জন ধারণক্ষমতার একটি বোটে ৩৬ জন যাত্রী তোলা হয়। মাওয়া এলাকায় কোনো প্রশাসন নেই, তদারকি সংস্থা নেই। সব আল্লাহর মাল, আল্লাহই চালায়।
ওহ, ফেরীও চলছে, বড়লোকদের গাড়ি পারাপারে কোনো সমস্যা নেই। সব সমস্যা গরীবের ৩০ টাকা ভাড়ায়। ভাগে খুব কম আসেতো, মাত্র ৩০ টাকায়-কিইবা আর আসবে। এরচেয়ে ২৫০ টাকার ভাগ অনেক ভালো।
মাওয়ায় এক্সিডেন্টে মৃত্যু নিত্যদিনের ঘটনা। সংখ্যার উপর নির্ভর করে হাউকাউ হয়। স্পিড বোট উল্টিয়ে একসঙ্গে ৩০ জনের মতো মারা গেছে, তাই আওয়াজটা একটু বেশি। ভাগ্য ভালো হলে কাল থেকে আবার ২/৪ জন করে মারা যাবে। হাউকাউ কম হবে। বাণিজ্য চলছে-চলবে।
ঘাট এলাকায় এ নিয়ে কথা বলার দু:সাহস কারো নেই। পিটিয়ে শরীরের ছাল-বাকল তুলে ফেলবে। অনেককে বেঁধে রেখে ঘন্টার পর ঘন্টা নির্যাতন করে। আদিম, বর্বর এক শাসনব্যবস্থা নদীর দুই পাশের ঘাটকে ঘিরে।
সারাদেশে মানুষ আটকে আছে। অনেকে জীবিকার তাগিদে, অনেকে নানা প্রয়োজনে। ঢাকাসহ প্রধান শহরগুলোতে বিপুলসংখ্যক শিক্ষার্থীও আটকে আছে, দূরপাল্লার গাড়ি নেই, যেতে পারছেন না। সবার অপেক্ষা ছিল-ঈদের আগে পরিবহণ খুলে দিবে।
কিন্তু না, সিদ্ধান্ত এসেছে মার্কেট, শহরগুলোতে করোনা নেই। তাই শহরের সব খোলা রেখে গরিব শালাদের শিক্ষা দেওয়া হবে। ওরা বাড়ি যেতে পারবে না, না খেয়ে মরুক শহরে।
আকাশ পথেও সমস্যা নেই। সেখানেও যে ভিআইপিদের চলাচল। সব পাগলের এক রা ! মধ্যবিত্ত শ্রেণীটাকে নানানভাবে ঠেঙ্গিয়ে, পদে পদে ঠকিয়ে, দেয়ালে পিঠ ঠেকায়। এরপর এ শ্রেণীটা কোনো পথ না পেয়ে কোনোরকমে একটা চেয়ার পেলে ইচ্ছেমতো টাকা কামায়। কারণ এরা বুঝে গেছে রাষ্ট্রটা টাকাওয়ালারা চালায়। সব সিদ্ধান্ত টাকাওয়ালাদের পক্ষে।
ঢাকায় বসে সাধারণ মানুষ মুড়ি খাবে না। কর্মহীন শ্রমিকরা গ্রামে ছুটে যাবেই। কিন্তু সবজির ট্রাক, গরুর ট্রাকে যাবে। মাছের ড্রামের মধ্য উপুড় হয়ে যাবে। মাঝেমধ্যে ট্রাক উল্টিয়ে কিছু মারা যাবে। অল্প টাকায় ট্রলারে করে পদ্মা পাড়ি দিবে। ঝড়ের দিন চলছে, মাঝেমধ্যেই উল্টে যাবে ট্রলার। সলিল সমাধি হবে মানুষের। তখন কাদোঁ কাঁদো এক্সপ্রেশন দিয়ে মিডিয়ার সামনে কথা বলবে দায়িত্বশীলরা। মিডিয়া হন্য হয়ে খুজঁবে কোনো ভাইরাল স্যাড স্টোরি পাওয়া যায় কিনা !!
শালারা সব গরিব মরে যাক। রাষ্ট্র হবে বড়লোকদের। কোনো বাস থাকবেনা। গণপরিবহন বলতে কিছু থাকবেনা। ঢাকার রাস্তায় বিমান চলবে, পদ্মায় চলবে উভচর বিমান। নিদেনপক্ষে ব্যক্তিগত গাড়ি না থাকলে বাসায় বসে মুড়ি খাবে, কারো রাস্তায় বের হওয়া যাবে না।
শালা গরিব, কোনো কথা হবে না। তোরা মর।