ফুটবল বিশ্বকাপ দেখা শুরু করি সেই ২০০২ থেকে। তখন বয়স মাত্র আট।আব্বু আম্মু দুইজন ই খেলার পাগল,রাত জেগে খেলা দেখত।আমিও না ঘুমিয়ে আব্বুর কোলে বসে চুপচাপ খেলা দেখতাম।বুঝতাম না কিছুই।আর্জেন্টিনা কে তখন থেকেই সাপোর্ট করি।সেই আট বছর বয়সে আর্জেন্টিনাকে সাপোর্ট করতাম শুধুমাত্র নাম সুন্দর বলে।আর্জেন্টিনা নাম টা কেন জানি খুব ভাললাগত আমার। .
এরপর ২০০৬,সেই এক কাহিনী।কিন্তু ততদিনে বুঝি গোল দেয়া কাকে বলে।দুই একটা প্লেয়ার এর নাম ও জানলাম।আমার পরিবার বরাবর ই খেলা প্রেমিক।এমনকি আমার আম্মুও।রাত জেগে খেলা দেখাটা আমার কাছে উৎসব এর মতো মনে হত।
এরপর যতো দিন গেছে,আর্জেন্টিনা কে আরো ভালো লেগেছে।ভালোলেগেছে মেসি কে।আর্জেন্টিনার গোলকিপার দুর্বল,ডিফেন্সে দুর্বল,ভালো খেলেনা,নক আউট এই হেরে যায়,কথাগুলো বহু শুনেছি।খারাপ লেগেছে। তবুও আর্জেন্টিনা কে ছাড়িনি।সবসময় মনে হয়েছে কাপ জেতাটাই তো বড় কথা নয়।আমার কাছে খেলার পারফরমেন্স টাই বড়।
কিন্তু কাল আর্জেন্টিনা মনে হল একটা স্বপ্ন পুরন করল।পুরোটা সময় কেটেছে আনন্দে,টেনশন এ।পর্দার পেছনের মানুষ,প্লিজ টেক মাই স্যালুট।.পাবলো জাবালেতা,মার্কস রোহো,মার্টিন ডেমিকেলিস,এজেকিয়েল গারায়,পেরেজ আর মাসচেরানো
হোয়াট এ ম্যাচ ! সেলুট টু ইউ।
ডি মারিয়া,হিগুয়েন,অ্যাগুয়েরো তোমরা ক্লাব সেরা ছিলে,এখন ওয়ার্লড কাপ এ সেরা :*
আর মেসি,তোমাকে কি বলব,তুমি আসলেই অন্য গ্রহের মানুষ।হয় নিজে গোল দাও,নাহলে অপরকে দিয়ে গোল দেয়াও। তুমি সবসময় বিশ্বসেরা।
৫বার কাপ নিয়েছো বলে সাপোর্ট করবো,সবসময় ভালো খেল বলে সাপোর্ট করবো,শুধু ভালোর দিক এ আকৃষ্ট হয়ে সাপোর্ট করবো,এমন সাপোর্টার না আমি।আমি মন থেকে,মনের টান থেকে তোমাদের সাপোর্ট করি।আর মন মানেনা কোনো লজিক
হ্যাঁ,আর্জেন্টিনার ডিফেন্স অনেক দুর্বল।গোলকিপার রোমেরো ও দুর্বল।কিন্তু কাল এই দুর্বলতা তোমরা পুরোপুরি কাটিয়ে দিয়েছ।অ্যাটাক না,আর্জেন্টিনার এবারের সাফল্যের আসল ভুমিকা এই ডিফেন্সের ই।আসল ভুমিকা রোমেরোর ই।ব্যাপারটা যে এমন হবে ঘুনাক্ষরেও ভাবিনি
চোখের সবখানে পানি আগে থেকেই জমা ছিলো।আত্মবিশ্বাসের এক একটা পেনাল্টি সফল হবার সাথে সাথে বাড়ছিল পানির ঘনত্ব।অতঃপর জয় নিশ্চিত হতেই ফর্সা চেহারার সরল ছেলেটার সেকি কান্না! আচ্ছা,একটা মানুষ হাসতে হাসতে এত সুন্দর করে কাঁদে কিভাবে?
একেই বুঝি বলে আত্মার টান।মাসচেরানো,আজকের খেলার কোনো কমতি ছিলনা।উল্টো দলকে রক্ষা করতে যেয়ে মাঠে পড়ে মাথায় আঘাতে অজ্ঞান হতে হতে নিজের মানসিক জোরে সব সামলে নিয়েছে।খেলার এই দৃশ্যটা আমার হৃদয়ে খুব গভীরভাবে দাগ দিয়েছে।
রোমেরোর প্রতি আমি বেশ আগে থেকেই তেমন ভরসা করতে পারতাম না,ভাবতাম ভালো কিপিং পারেনা।গোল খায় বেশি।কিন্তু নিজের কাছে নিজেই ভুল প্রুভ হতে মোটেই খারাপ লাগ্লনা আমার।নাহ্,আমি আর ভুল হবনা।দরকার নেই অর বিশ্বসেরা গোলকিপার হবার।ও যেন কেবল জার্সির প্রতিক্টার দিকে খেয়াল রাখে।এটাই ঢের।ফাইনাল এ যদি ও একশোটা গোল খায়,তবুও আমি বলব"বেস্ট অফ লাক রোমেরো"
(একটাই আর্জেন্টিনা,একটাই মেসি)