somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

একটি কলমের ক্ষোভ জমানো কিছু কথা এবং তার শেষ ইচ্ছার করুণ মৃত্যু!!

২২ শে আগস্ট, ২০১১ রাত ৮:৫৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


এই পোষ্ট প্রকাশ হওয়ার সাথে সাথেই একটি কলমের শেষ ইচ্ছাটুকুর করুণ মৃত্যু ঘটলো! কলমের এই করুণ পরিণতির জন্য পোষ্টের লেখক কোন ভাবেই দায়ী নন। ডিজিটাল যুগের ডিজিটালায়নই একমাত্র দায়ী!
''
''
''

আমি একটি কলম। আমার সম্পর্কে জানে না এমন মানুষ দুনিয়ায় খুঁজে পাওয়া অসম্ভব। আমি প্রধানত লেখালেখির কাজে ব্যবহৃত হয়ে থাকি। বলপয়েন্ট কলম, ঝর্ণা কলম (ফাউন্টেন পেন), ফেল্ট-টিপ কলম, জেল কলম, পালকের কলম (কুইল), খাগের কলম ইত্যাদি হচ্ছে আমার প্রকারভেদ। অফিস আদালত, বিদ্যালয়ে লেখালেখির কাজ থেকে শুরু করে কবির কবিতা সৃষ্টিতেও আমার অনবদ্য অবদান আছে। শুধু লেখালেখি নয় বিনোদনমূলক কাজেও আমাকে ব্যবহার করা হয়ে থাকে। আমাকে নিয়ে স্কুলের ছোট ছোট ছেলেরা কলম-কলম খেলে মজা পায়। একজন আরেকজনের গায়ে কলম দিয়ে আঁচড় কেটে খেলা করে।

রবীন্দ্রনাথ থেকে শুরু করে এই পোষ্টের ফালতু লেখক পর্যন্ত আমাকে দিয়ে অনেক লেখালেখি করেছে!:|

ইদানীং আমি খেয়াল করে দেখছি কেউ আর আমাকে আগের মতো ব্যবহার করে না। আমার ব্যবহার অনেক কমে এসেছে। তাই ক্ষোভে ভরা কিছু কথা বলার জন্য আপনাদের সামনে এসেছি।

আজ এই ডিজিটালায়নের যুগে সাহিত্য থেকে শুরু করে বিদ্যালয়গুলোতে পর্যন্ত আমার ব্যবহার অনেকাংশে কমে এসেছে। আমাকে দিয়ে আগের মতো কোন কবি রাত জেগে কবিতা রচনা করে না। আমাকে দিয়ে আগের মতো কোন গল্পকার গল্প রচনা করে না। আমাকে এখন আর সুন্দর করে সবাই সাজিয়েও রাখে না। সবাই এখন কিবোর্ড নামক যন্ত্র দ্বারা নিজের কাজ চালিয়ে নেয়। অথচ এই আমি জন্ম দিয়েছি রবীন্দ্রনাথ, নজরুল, জীবনানন্দ দাশের মতো অনেক লেখককে। তাদের প্রতিভাকে তুলে ধরেছি বিশ্ব মানচিত্রে।

আজকে যারা কিবোর্ড নামক যন্ত্রে অবস্ত হয়ে পড়েছে তারা কি ভুলে গেছে যে আমাকে দিয়ে রবীন্দ্রনাথ গীতাঞ্জলি কাব্য রচনা করে নোবেল পেয়েছেন? তারা কি ভুলে গেছে আমাকে দিয়ে বাংলা সাহিত্যের তরুন কবি সুকান্ত তার ২১ বছরের জীবনে ছাড়পত্র, পূর্বাভাস, মিঠেকড়া, অভিযান ইত্যাদি কাব্য রচনা করেছেন?
কিবোর্ড নামক হারামজাদাটার জন্য এখন আর আমাকে সযত্নে রাখার জন্য কেউ কলম দানিও কেনে না। যারা আমাকে ভুলতে বসেছে তাদের কাছে একটি প্রশ্নঃ

কিবোর্ড দিয়ে সাহিত্য চর্চা করে সত্যি কি আপনারা আনন্দ পান ?

এরা সবাই হয়তো আস্তে আস্তে আমাকে ভুলতে বসেছে। বিদ্রোহী কবিতার ঐ বিদ্রোহী ব্যাক্তিটি বেঁচে থাকলে আমাকে হয়তোবা ভুলতো না। হয়তো সে আমার পক্ষ নিয়ে আমাকে নিয়েই আরেকটি কলম বিদ্রোহের কাহিনীর সূচনা করতো।

জীবনে শেষ একটা ইচ্ছা ছিল যে অন্তত আমার আত্মকথাটুকু আমাকে সাথে নিয়েই কেউ লিখবে। সেই ইচ্ছাটুকুও আজ এই পোষ্টের সাথে মাঠে মারা যাবে! আমার আত্মকথাটুকুও পর্যন্ত মানুষ আমাকে সাথে নিয়ে লিখলো না:((:(( এতো জীবন এতো সাহিত্য, এতো আনন্দ মানুষকে দিলাম আর সেই মানুষেরা আমার ছোট্ট আব্দারটাও রাখলো না ? আমার নিজের কথা, আমার মনের কথাটুকুও শেষ পর্যন্ত কিবোর্ড দিয়ে লেখা হলো ? আমার দিন মনে হয়ে ফুরিয়ে এসেছে। এই পৃথিবী থেকে যেকোন মুহূর্তে বিদায় নিতে পারি আমি। আমি বিদায় নিলেও আমার কীর্তি এই ধরণীতেই থাকবে। আমাকে দিয়ে এই পৃথিবীতে যা কিছু লেখা হয়েছে তা আমার সাক্ষী হয়ে এই পৃথিবীর বুকেই থাকবে। কেউ তা মুছতে পারবে না কেউ না!
সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে মার্চ, ২০১৩ দুপুর ১২:০৩
২৭টি মন্তব্য ২৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ব্লগটা তো ছ্যাড়াব্যাড়া হয়ে গেলো :(

লিখেছেন সাখাওয়াত হোসেন বাবন, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:৫৭



আমি আমার ব্লগিং শুরু করি প্রথম আলো ব্লগে লেখালেখির মাধ্যমে। ব্লগটির প্রতি আমি কৃতজ্ঞ। কারণ প্রথম আলো ব্লগ আমায় লেখালেখিতে মনোযোগী হতে শিখিয়েছে । সে এক যুগ আগের কথা... ...বাকিটুকু পড়ুন

লুঙ্গিসুট

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:২৪



ছোটবেলায় হরেক রঙের খেলা খেলেছি। লাটিম,চেঙ্গু পান্টি, ঘুড়ি,মার্বেল,আরো কত কি। আমার মতো আপনারাও খেলেছেন এগুলো।রোদ ঝড় বৃষ্টি কোনো বাধাই মানতাম না। আগে খেলা তারপর সব কিছু।
ছোটবেলায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্বর্ণাক্ষরে লিখে রাখার মত মুফতি তাকি উসমানী সাহেবের কিছু কথা

লিখেছেন নতুন নকিব, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:২৫

স্বর্ণাক্ষরে লিখে রাখার মত মুফতি তাকি উসমানী সাহেবের কিছু কথা

ছবি কৃতজ্ঞতা: অন্তর্জাল।

একবার শাইখুল হাদিস মুফতি তাকি উসমানী দামাত বারাকাতুহুম সাহেবকে জিজ্ঞেস করা হল, জীবনের সারকথা কী? উত্তরে তিনি এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

=মৃত্যু কাছে, অথবা দূরেও নয়=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:০৭



©কাজী ফাতেমা ছবি
দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে দিয়ে বলি, আমারও সময় হবে যাবার
কি করে চলে যায় মানুষ হুটহাট, না বলে কয়ে,
মৃত্যু কী খুব কাছে নয়, অথবা খুব দূরে!
দূরে তবু ধরে নেই... ...বাকিটুকু পড়ুন

সবুজ চোখের মানুষের ধাঁধা

লিখেছেন করুণাধারা, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:২৯



এই ধাঁধার নাম সবুজ চোখের মানুষের ধাঁধা; নিচের লিংকে এটার ভিডিও আছে।

স্বৈরশাসকের বন্দী

এই ধাঁধাটি আমার ভালো লেগেছিল, তাই অনেক আগে আমার একটা পোস্টে এই ধাঁধাটি দিয়েছিলাম। কিন্তু সেই পোস্টে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×