ভারতের স্বাধীনতার আগেই মহাত্মা গান্ধী জনগণকে গ্রামে ফিরে যেতে বলেছিলেন। গ্রামের হতশ্রী অবস্থা অনুধাবন করে তিনি এ আহবান করেছিলেন। আজ শুধু গ্রামের উন্নয়নের কথা চিন্তা করেই গ্রামে যেতে হবে তা নয়, এখন শহরের অধিবাসীদের চরম দুরবস্থার কথা ভেবেই শহর ছেড়ে গ্রামে যেতে হবে। ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, খুলনা, সিলেট এবং বরিশালসহ দেশের প্রায় সব শহর জনতায় সয়লাব। শহরগুলোতে না আছে সুষ্ঠু স্যানিটেশন ব্যবস্থা না আছে সবার বসবাসের উপযোগী বাসস্থান। জনসংখ্যার চাপে শহরের সেবামূলক পরিকাঠামোগুলো ধ্বংসের মুখে। এত জনসংখ্যার চাপের মধ্যেও গ্রাম থেকে লোকজন শহর অভিমুখে আসছে তো আসছেই। গ্রামের অর্থনৈতিক, সামাজিক অবস্থা ভালো নয়। খেটে খাওয়া মানুষের সারা বছর চলার মতো কাজ নেই। সন্ত্রাস ও চোর-ডাকাতের অত্যাচারে একটু ভালো অবস্থার লোকেরা শহরে এসে বাসা বেঁধেছে। এরপর রয়েছে নদী ভাঙন। এতে প্রতিবছর হাজার হাজার লোক বসতবাড়ি ও জমি-জিরাত হারিয়ে কিছু উপার্জন করে বাঁচার আশায় শহরগুলোতে এসে ভিড় জমাচ্ছে। যত শিগগির সম্ভব শহরে আসার এই প্রবণতা ঠেকাতে হবে। আর তা না হলে শহরগুলো বৃহৎ বস্তিতে পরিণত হবে। রোগ-বালাইসহ বিভিন্ন প্রতিকূলতার মধ্যে শহরবাসীকে দিন যাপন করতে হবে। তাই শহরগুলোকে বাঁচাবার জন্য এবং অন্যদিকে গ্রামগুলোর মানুষ যাতে গ্রামেই থাকতে পারে সে ব্যাপারে পদক্ষেপ গ্রহণ করা যেতে পারে। এজন্য যা প্রয়োজন-
গ্রামে সবসময়ের জন্য খেটে খাওয়া মানুষের কাজের ব্যবস্থা করতে হবে। গ্রামে অধিকহারে কুটিরশিল্প প্রতিষ্ঠা করতে হবে এবং এতে মেয়েদের আরো বেশি করে অংশগ্রহণের ব্যবস্থা করতে হবে। হাঁস, মুরগি ও কুটিরশিল্প স্থাপনের জন্য সরকারের তরফ থেকে ঋণ দিতে হবে। পাঁচ হাজার টাকা এবং এর কম অঙ্কের অর্থের সুদহীন ঋণ দিতে হবে। তবে এ ঋণ এক পরিবার শুধু একবারই পাবে। নদী ভাঙা লোকদের সুদবিহীন ঋণ দিতে হবে। নদী ভাঙনের সঙ্গে সঙ্গে এদের বাসস্থানের জন্য জায়গা, জমি এবং ঘর তৈরির সরঞ্জাম দিতে হবে। কিছুদিনের ফ্রি খাবারের ব্যবস্থা করতে হবে। গ্রামের আইন-শৃংখলার উন্নতি ঘটাতে হবে। ছেলেমেয়েদের পড়াশোনার পাশাপাশি খেলাধুলায় আগ্রহী করে তুলতে হবে। মানুষকে মোটিভেট করে সুন্দর জীবনের স্বপ্ন দেখাতে হবে এবং স্বপ্নকে বাস্তবে পরিণত করার যথাযথ কার্যক্রম গ্রহণ করতে হবে। প্রশাসনকে যতোটা সম্ভব বিকেন্দ্রীকরণ করতে হবে এবং স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলোকে অধিক শক্তিশালী করতে হবে।
সর্বশেষ এডিট : ১৮ ই মার্চ, ২০১১ রাত ৯:১৪

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




