somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

রাজীব নুর
আমার নাম- রাজীব নূর খান। ভালো লাগে পড়তে- লিখতে আর বুদ্ধিমান লোকদের সাথে আড্ডা দিতে। কোনো কুসংস্কারে আমার বিশ্বাস নেই। নিজের দেশটাকে অত্যাধিক ভালোবাসি। সৎ ও পরিশ্রমী মানুষদের শ্রদ্ধা করি।

গল্প

০৭ ই আগস্ট, ২০১৬ সকাল ১০:২৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

রাত তিনটা। ঘুম আসছিল না। শুধু এপাশ আর ওপাশ করছিলাম। বুঝে গেলাম আর ঘুম আসবে না। ভাবলাম রান্না ঘরে গিয়ে এক কাপ চা বানিয়ে খাই। রান্না ঘরে গিয়ে আমি অবাক, দেখি- 'রবীন্দ্রনাথ'!!! আমি বললাম গুরুদেব কি করছেন? গুরুদেব বললেন, ওই, কতবার বলেছি আমাকে গুরুদেব বলে ডাকবি না। রবিবাবু বলে ডাকবি। তোর ঘুম আসছিল না, ভাবলাম তোর জন্য চা বানাই। আমার নিজেরও খেতে ইচ্ছা করছিল। আমি বললাম, গুড। আপনি চা বানিয়ে বেলকনিতে আসেন, আমি গিয়ে বসি। কিছুক্ষন পর কবি দুই মগ চা নিয়ে বেলকনিতে আসলেন। এক মগ আমার হাতে দিয়ে বললেন, আজ আমার মন ভালো নেই রে, তুই আমাকে একটা হাসির গল্প শুনিয়ে মন ভালো করে দে। আমি চায়ে চুমুক দিয়ে বললাম আচ্ছা। তার আগে বলি চা ভালো বানিয়েছেন। যদি ভালো চায়ের জন্য নোবেল দেওয়ার নিয়ম থাকত তাহলে আপনি আরেকটা নোবেল পেতেন। রবীন্দ্রনাথ বিরক্ত হয়ে বললেন, ওই বক বক বন্ধ কর, চায়ে তো চিনিই দেইনি। চিনির ডিব্বা খুঁজে পাইনি। গল্প বল। আমি রবি বাবুর মুখোমুখি বসে গল্প শুরু করলাম-

এক ছিল কাঠুরিয়া। তার ছিল একটা মাত্র বউ। বউটির মেজাজ ছিল খুব কড়া আর মারমুখী। এক কথায় সাংঘাতিক দজ্জাল আর কী! কাঠুরিয়ার পরিবার ছিল নিঃসন্তান। চার পাঁচ বছরের সংসার। তা হলে কী হবে, তাদের ঘর আলো করে কেউ আসে নি। না আসলেও কী হবে। কাঠুরিয়া বনে সারাদিন ঘাম ঝরিয়ে রক্ত পানি করে কাঠ কাটে। তারপর বাজারে বিক্রি করে- চাল, ডাল, তরকারি নিয়ে বাড়িতে আসে। বউ কোথায় আদর যত্ন করবে, তা না করে এত দেরি কেন? এগুলো কোনো বাজার হলো? এসব তো গরু-ছাগলের খাদ্য। বাপ দাদা চৌদ্দগোষ্ঠির মন্ডুপাত করতে থাকে। বেচারা কাঠুরিয়া শক্ত গাছ হয়ে দাঁড়িয়ে থাকে। সে যেমন নির্মমভাবে গাছ কাটে ঠিক তেমনি তার বউ কথা দিয়ে গালিগালাজ দিয়ে তাকে কাটতে থাকে, ছিলতে থাকে। ডেইলি মানে প্রতিদিন এমন ভিটামিনবিহীন উত্তেজক একতরফা গালিগালাজ আর কতদিন সহ্য করা যায়। জবাব দিলে আগুন আরও দ্বিগুন হয়ে যায়। কাঠুরিয়া ছিল সহজ সরল নিরীহ গোবেচারা টাইপের। তো আর কাহাতাক সহ্য করা যায়। তার কামাই খাবে আর তার বাপ-দাদাকে, মা-দাদি, নানা-নানিকে গালিগালাজ করবে? আর কতদিন?


গল্পের এই পর্যায়ে চা শেষ। আমার সিগারেটের জন্য হাস-ফাস লাগছিল। রবীন্দ্রনাথ ব্যাপারটা বুঝে বললেন- নো নেভার। গল্প শেষ কর। আমি একটু হাসি দিয়ে আবার গল্প শুরু করলাম- কাঠুরিয়া একদিন সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলে। এসপার কী ওসপার। হয় আমি থাকব না হয় মুখরা দজ্জাল বউ থাকবে। তো কাঠুরিয়া কী করলো? বড় দেখে একটা মজবুত ছালা আর মোটা তাজা দড়ি সংগ্রহ করল। তারপর? কথা নেই বার্তা নেই তার হাত-পা বেঁধে বস্তায় ভরে বস্তার মুখটা ভালো করে টাইট বান্ধা বেন্ধে ঘাড়ে তুলে সোজা গহিন বনের মধ্যে চলে গেল। তারপর একটা বড় গর্তের খোঁজ পেয়ে সেই গর্তে ফেলে দিয়ে পিছনে না তাকিয়ে সোজা বাড়ি এসে ঘরে খিল দিয়ে বিশাল এক ঘুমের রাজ্যে বিশ্রাম নিতে থাকে। তিনদিন খুব আরামে ঘুম দিল। চারদিনের দিন কাঠুরিয়ার মনে হলো বাড়িতে কী যেন নেই। বাড়িটা খালি খালি লাগে। সুনসান ফাঁকা বাড়ি। কেউ কোনো কথা বলে না। পাঁচ দিনের দিন কাঠুরিয়া চিন্তা করল, আর যেমনি থাক আমার একটা বউ ছিল, গালাগালি দিত। আচ্ছা আমার বউটা কি মরে গেল না বেঁচে আছে একটু দেখা দরকার তো নাকি! সাত পাঁচ চিন্তা করে একদিন সকালবেলা আস্তে আস্তে কাঠুরিয়া সেই গর্তের কাছে গিয়ে হাজির। যেই না কাছে গিয়ে দাঁড়িয়েছে অমনি অবাক কান্ড ....


রবীন্দ্রনাথ কখন আমার কোলে মাথা রেখে ঘুমিয়ে পড়েছেন খেয়াল করিনি। গল্পের বাকি অংশ পরে বলা যাবে। আকাশ ফরসা হতে শুরু করেছে। আমি রবীন্দ্রনাথের মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছি।
সর্বশেষ এডিট : ০৭ ই আগস্ট, ২০১৬ সকাল ১০:২৬
৩টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ১৮ ই মে, ২০২৪ ভোর ৬:২৬

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।
প্রথমত বলে দেই, না আমি তার ভক্ত, না ফলোয়ার, না মুরিদ, না হেটার। দেশি ফুড রিভিউয়ারদের ঘোড়ার আন্ডা রিভিউ দেখতে ভাল লাগেনা। তারপরে যখন... ...বাকিটুকু পড়ুন

মসজিদ না কী মার্কেট!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৮ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৩৯

চলুন প্রথমেই মেশকাত শরীফের একটা হাদীস শুনি৷

আবু উমামাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, ইহুদীদের একজন বুদ্ধিজীবী রাসুল দ. -কে জিজ্ঞেস করলেন, কোন জায়গা সবচেয়ে উত্তম? রাসুল দ. নীরব রইলেন। বললেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

আকুতি

লিখেছেন অধীতি, ১৮ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৩০

দেবোলীনা!
হাত রাখো হাতে।
আঙ্গুলে আঙ্গুল ছুঁয়ে বিষাদ নেমে আসুক।
ঝড়াপাতার গন্ধে বসন্ত পাখি ডেকে উঠুক।
বিকেলের কমলা রঙের রোদ তুলে নাও আঁচল জুড়ে।
সন্ধেবেলা শুকতারার সাথে কথা বলো,
অকৃত্রিম আলোয় মেশাও দেহ,
উষ্ণতা ছড়াও কোমল শরীরে,
বহুদিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

ক- এর নুডুলস

লিখেছেন করুণাধারা, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৫২



অনেকেই জানেন, তবু ক এর গল্পটা দিয়ে শুরু করলাম, কারণ আমার আজকের পোস্ট পুরোটাই ক বিষয়ক।


একজন পরীক্ষক এসএসসি পরীক্ষার অংক খাতা দেখতে গিয়ে একটা মোটাসোটা খাতা পেলেন । খুলে দেখলেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্প্রিং মোল্লার কোরআন পাঠ : সূরা নং - ২ : আল-বাকারা : আয়াত নং - ১

লিখেছেন মরুভূমির জলদস্যু, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:১৬

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
আল্লাহর নামের সাথে যিনি একমাত্র দাতা একমাত্র দয়ালু

২-১ : আলিফ-লাম-মীম


আল-বাকারা (গাভী) সূরাটি কোরআনের দ্বিতীয় এবং বৃহত্তম সূরা। সূরাটি শুরু হয়েছে আলিফ, লাম, মীম হরফ তিনটি দিয়ে।
... ...বাকিটুকু পড়ুন

×