আমার জীবনে আমি কোনো দিন রাস্তায় দাঁড়িয়ে প্রস্রাব করতে পারিনি। কিন্তু রাস্তা ঘাটে এই কাজটি করতে অনেককেই দেখেছি। আজ পান্থপথ দিয়ে হেঁটে যাচ্ছি, তখন আমার প্রস্রাব পেলো। রাস্তায় দাঁড়িয়ে এই কাজ করা আমার পক্ষে সম্ভব না। চলে গেলাম স্কয়ার হাসপাতালে। ওদের ওয়াশরুম বেশ ভাল। আগেও অনেকবার গিয়েছি। খুব বেশী পরিস্কার। কাজ শেষ করে হাসপাতাল থেকে বের হতেই দেখি- অধ্যক্ষ মাওলানা মাহমুদুর রহমান পীরসাহেব সোনাকান্দা হুজুর দুর্ঘটনায় আহত। তাকে হাসপাতালে আনা হয়েছে। এই মাওলানাকে আমি চিনি না। কিন্তু তার সাথেই লোকজন বেশ চিন্তিত।
আমি হাসপাতাল থেকে বের হয়ে চায়ের দোকানে গেলাম। সেখানে একজন আলাপ করছে- 'ভিকারুন্নিসা’ নামের পরিবর্তন চাই না। নাম কোনো দোষ করেনি। আমাদের সমাজে কিছু লোক আছে যারা কোন উছিলা পেলেই বিভিন্ন অবান্তর দাবী জনসমক্ষে নিয়ে আসে। এটা হাস্যকর। কেন নাম পরিরর্তন করতে হবে? কেন আমাদের মন এত ছোট? নীচে নামারও এটা সীমা থাকা দরকার।' এক কাপ চা হাতে নিয়ে আমি সবার কথা মন দিয়ে শুনছি। শুধু চা'ই খাই। সিগারেট না। সেদিন খুব মেজাজ খারাপ হলো- তারপর থেকে সিগারেট খাই না। একেবারেই খাই না। এই মজার ঘটনাটা নিয়ে পরে লিখব।
রমনা থানার সামনে দিয়ে যাবার সময় দেখি- একটা আহত কাক। কাকটাকে দেখে খুব মায়া লাগলো। বেচারা আমাকে দেখে ভয় পাচ্ছে অথচ উড়ে যেতে পারছে না। কিভাবে আহত হয়েছে কে জানে! কাকটাকে সাহায্য করার জন্য আশেপাশে অন্য কোনো কাক দেখলাম না। আর যদি কাকটা মরে যায় তখন একসাথে সব কাক আসবে। আহাজারি করতে। জীবিত অবস্থায় কেউ আসছে না। অথচ মরে গেলে এসে আহাজারি করবে! আমি তো পশু ডাক্তার না। কাকটার জন্য কিছুই করতে পারবো না। পকেট থেকে মোবাইল বের করে একটা ছবি তুলে নিলাম।
আমাদের দেশ হচ্ছে আন্দোলন-সংগ্রামের দেশ। আজ থেকে ছয় বছর আগে আমি ভাবতাম- ''অনেক হয়েছে আর না। এখন বিয়ে করতে হবে। ঘর সংসার করতে হবে। রাতে তাড়াতাড়ি বাসায় ফিরতে হবে। তা না হলে বৌ না খেয়ে বসে থাকবে। ছুটির দিন গুলোতে বৌকে নিয়ে বেড়াতে যেতে হবে। দু'জনের সংসার কোনো সংসার না। ঘর ভরতি থাকতে হবে বাচ্চা কাচ্চা। তাহলে'ই জীবন আনন্দময় হবে। আজন্ম লালিত ভালোবাসা, এই ছোট্র জীবনে, তাকে দিয়ে যেতে পারব তো''! বিয়ে করলাম, তারপর ঘর-সংসারের মায়ার জালে আটকে গেলাম।
দুপুরে আজ প্রচন্ড ক্ষুধা লেগেছে। কি করবো বুঝতে পারছি না। পকেটে টাকা নেই। ক্ষুধা লাগলে আমার কিচ্ছু ভালো লাগে না। তখন যে কাউকে মেরে বসতে পারি বিনা দ্বিধায়। যাকে আপনি করে বলি- তাকেও তুই করে বলে ফেলতে পারি। বেশ কয়েকদিন ধরেই- খুব তেহারি খেতে ইচ্ছা করছে। গরম গরম তেহারি। মাংসের পরিমান বেশি থাকবে। ভালো বাবুর্চি দিয়ে রান্না করা তেহারি। পকেটে টাকা না থাকলেই অনেক কিছু খেতে ইচ্ছা করে। মন খারাপ করে এক চায়ের দোকানে গেলাম। রুটি কলা খাবো। ঠিক তখন দেখি- এক বাসায় অনুষ্ঠান হচ্ছে। খোঁজ নিয়ে জানলাম। চল্লিশার অনুষ্ঠান। তারপর কবজি ডুবিয়ে খেলাম। খুব স্বাদ হয়েছে। এজন্য মানুষ বলে মন থেকে চাইলে পাওয়া যায়। মন থেকে তেহারি খেতে চেয়েছি, আল্লাহপাক ব্যবস্থা করে দিয়েছেন।
সর্বশেষ এডিট : ১০ ই ডিসেম্বর, ২০১৮ রাত ৯:১৭