somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

রাজীব নুর
আমার নাম- রাজীব নূর খান। ভালো লাগে পড়তে- লিখতে আর বুদ্ধিমান লোকদের সাথে আড্ডা দিতে। কোনো কুসংস্কারে আমার বিশ্বাস নেই। নিজের দেশটাকে অত্যাধিক ভালোবাসি। সৎ ও পরিশ্রমী মানুষদের শ্রদ্ধা করি।

এই আমি' আমার অস্তিত্ব, অনর্থক- অযথা

১৩ ই ডিসেম্বর, ২০১৮ দুপুর ২:২৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



নাম তার শাহেদ। শাহেদ জামাল।
শিক্ষিত ছেলে। নিজেকে সে যথেষ্ঠ বুদ্ধিমান মনে করে। আসলেই কি সে বুদ্ধিমান? তার কর্মকান্ড নির্বোধ লোকদের মতোন। অনেকে তাকে পাগল মনে করে। সবার জীবনের একটা উদ্দ্যেশ্য আছে, লক্ষ্য আছে। অথচ শাহেদ জামালের ছোটবেলা থেকেই তেমন কিছু লক্ষ্য বা উদ্দেশ্য নেই। তার লক্ষ্যহীন, উদ্দেশ্যহীন জীবন সুন্দর চলে যাচ্ছে। বেশ কিছুদিন ধরে শাহেদের ভীষন খারাপ সময় যাছে। এমনকি রাতে ঘুমের সময়টাও তার পক্ষে নেই। শাহেদ হয়তো জটিল মুভি দেখছে খুব মন দিয়ে- হুট করে তার ঘুম আসে। প্রচুর ঘুম। কিছুতেই চোখ মেলে রাখা যাচ্ছে না। এবং সে বালিশে মাথা রাখা মাত্র মুহুর্তের মধ্যে গভীর ঘুমে তলিয়ে যায়। বিশ পঁচিশ মিনিট পর তার ঘুম ভেঙ্গে যায়। এবং ঘুম্থেকে উঠার পর মনে হয়- যেন টানা আট/নয় ঘন্টা ঘুম দিয়ে উঠেছে। অথচ সে ঘুমিয়েছে মাত্র কুড়ি মিনিট।

তারপর অনেক চেষ্টা করেও সারারাত তার ঘুম আসে না।
তবু সে চুপ করে বিছানায় শুয়ে থাকে। তার পাশে তার স্ত্রী নীলা গভীর ঘুমে। মেয়ে পরী বাম পাশ ফিরে, বাম হাত- বাম গালের উপর রেখে আরামে ঘুমায়। শাহেদ তার ঘুমের সমস্যার কথা সে তার স্ত্রী-কন্যা কাউকেই বলে না। শাহেদ নিজেকে এই বলে শান্ত্বনা দেয়- ঘুম না এলেও সমস্যা নেই। সময়টা তো আর অপচয় হচ্ছে না। সে বিছানায় শুয়ে শুয়েই সিনেমা বানায়। সিনেমার নায়ক সে নিজেই। পরিচালকও সে নিজেই। তার সিনেমার কাহিনি চমৎকার- সে নিজেই মুগ্ধ হয়। সে নিজেকে নিজেই ধন্যবাদ দেয়। নিজের অভিনয় দেখে সে নিজেই বাহবা দেয় নিজেকে। এভাবেই পার হচ্ছে রাত। রাতের পর রাত। চোখের চারপাশ কালো হয়ে যাচ্ছে। মুখের চামড়া ভারী হয়ে যাচ্ছে। শাহেদ ফযরের আযানের আগেই বিছানা থেকে উঠে যায়। ফযরের আযান শুনতে তার দারুন লাগে। হুজুর ঘুম জড়ানো কন্ঠে আযান দেয়। আকাশ একটু একটু করে ফরসা হতে থাকে।

শাহেদ টানা আঠারো বছর সিগারেট টেনেছে।
মেট্রিক পরীক্ষা দেওয়ার পর শাহেদের মনে হলো- সে অনেক বড় হয়ে গেছে। তাই সে ভাবলো- এখন সিগারেট খাওয়া যেতে পারে। সেই থেকে খাওয়া শুরু। টানা আঠারো বছর সিগারেট চলতেই থাকলো। এর মধ্যে তার মা বুঝিয়েছেন, বাবা সিগারেট ভালো না। সে তার মায়ের কথা শুনে নাই। তার স্ত্রী নীলা বুঝিয়েছে- সিগারেট ছেড়ে দেবার জন্য। এমন কি তার আদরের কন্যা পরীও সিগারেট ছেড়ে দেবার কথা বলেছে। সে সিগারেট ছাড়েনি। কিন্তু সেদিন হুট করে শাহেদ সিগারেট খাওয়া ছেড়ে দিল। ঘটনাটা এরকম- বহস্পতিবার, রাত দশটা বাজে। শাহেদ সিগারেটের পেকেট নিয়ে বেলকনিতে বসলো। পেকেট খুলে সে প্রচন্ড অবাক। মাত্র একটা সিগারেট আছে। অথচ সারারাত পড়ে আছে। রাত জেগে সে মুভি দেখবে তার সিগারেটের প্রয়োজন আছে। প্রতিদিন বাসায় ফেরার পথে শাহেদ পাঁচটা সিগারেট কিনে নিয়ে আসে।

এখন শাহেদ কি করবে?
আবার ছয় তালা থেকে নিচে নামবে? টাকাও নেই। এখন সিগারেট কিনতে হলে- এটিএম কার্ড দিয়ে আগে টাকা তুলতে হবে। এদিকে আবার এটিএম বুথ অনেক দূরে। প্রতিদিন সিগারেটের পেছনে তার ১৫০ টাকা খরচ হয়। একটা সিগারেট বারো টাকা দাম। শাহেদের কাছে মনে হলো এখন, রাত দশটা। তার কাছে সিগারেট নেই। পুরো রাত পড়ে আছে! সে সিগারেট ছাড়া কিভাবে সারারাত পার করবে? শাহেদের মেজাজ খুব খারাপ হলো। এবং হুট করে তার মনে হলো সামান্য সিগারেট নিয়ে এত চিন্তার কি আছে? মন খারাপ করার কি আছে? সিগারেট না খেলে কি হবে? কিছুই হবে না। বরং মাসে প্রায় পাঁচ হাজার টাকা বেঁচে যাবে। তার স্ত্রী কন্যা খুশি হবে। নিজের শরীরের উপকার হবে। পেকেটে থাকা একটা সিগারেট ভেঙ্গে সে ছুড়ে ফেলে দিল ছয়তালা থেকে। এরপর থেকে সে আর একটাও সিগারেট খায়নি। তার কোনো সমস্যাও হয়নি। বরং সে অনেক ভালো আছে। টাকা বেঁচে যাচ্ছে, শরীরে সিগারেটের গন্ধ হয় না শরীরে।
সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০১৮ দুপুর ২:২৭
১৭টি মন্তব্য ১৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে মুক্তিযোদ্ধাদের মুমিনী চেহারা ও পোশাক দেখে শান্তি পেলাম

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৭ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৯:৫৮



স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে স্টেজে উঠেছেন বত্রিশ মুক্তিযোদ্ধা তাঁদের চব্বিশ জনের দাঁড়ি, টুপি ও পাজামা-পাঞ্জাবী ছিলো। এমন দৃশ্য দেখে আত্মায় খুব শান্তি পেলাম। মনে হলো আমাদের মুক্তিযোদ্ধা আমাদের মুমিনদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

দু'টো মানচিত্র এঁকে, দু'টো দেশের মাঝে বিঁধে আছে অনুভূতিগুলোর ব্যবচ্ছেদ

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১২:৩৪


মিস ইউনিভার্স একটি আন্তর্জাতিক সুন্দরী প্রতিযোগিতার নাম। এই প্রতিযোগিতায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সুন্দরীরা অংশগ্রহণ করলেও কখনোই সৌদি কোন নারী অংশ গ্রহন করেন নি। তবে এবার রেকর্ড ভঙ্গ করলেন সৌদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের দুই টাকার জ্ঞানী বনাম তিনশো মিলিয়নের জ্ঞানী!

লিখেছেন সাহাদাত উদরাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ২:৫৯

বিশ্বের নামীদামী অমুসলিমদের মুসলিম হয়ে যাওয়াটা আমার কাছে তেমন কোন বিষয় মনে হত না বা বলা চলে এদের নিয়ে আমার কোন আগ্রহ ছিল না। কিন্তু আজ অষ্ট্রেলিয়ার বিখ্যাত ডিজাইনার মিঃ... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমি হাসান মাহবুবের তাতিন নই।

লিখেছেন ৎৎৎঘূৎৎ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



ছোটবেলা পদার্থবিজ্ঞান বইয়ের ভেতরে করে রাত জেগে তিন গোয়েন্দা পড়তাম। মামনি ভাবতেন ছেলেটা আড়াইটা পর্যন্ত পড়ছে ইদানীং। এতো দিনে পড়ায় মনযোগ এসেছে তাহলে। যেদিন আমি তার থেকে টাকা নিয়ে একটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×