আর ১৫ দিন পর নির্বাচন।
সব জাগায় এখন কথা বলার একটাই টপিক- নির্বাচন। দেশের সব মানুষ নির্বাচন নিয়ে বেশ চিন্তিত। অফিস, বাসা আর চায়ের দোকানে সবাই নির্বাচন নিয়েই আলাপ করছে। তবে ঢাকা শহরের চেয়ে গ্রামে নির্বাচন নিয়ে মাতামাতি খুব বেশি। গ্রামের মানুষ পলিট্রিক্স বেশি পছন্দ করে। শহর থেকে লোক গিয়ে গ্রামের নির্বাচনের মাঠ গরম করছে। পোস্টার দিয়ে সমস্ত দেশ ভরে গেছে। ছাপাখানার শ্রমিকরা বেশ ব্যস্ত সময় পার করছে। প্রার্থীরা পানির মতো টাকা খরচ করছে। হয়তো এই টাকা পরে উঠে আসবে এক শ' গুন লাভ সমেত। অলিতে গলিতে মিটিং আর মিছিল চলছে নিয়মিত। সত্যি কথা বলতে কি চারিদিকে একটা উৎসব-উৎসব ভাব বিরাজ করছে। বেকাররা একটা কাজ পেয়েছে। তারা নির্বাচন নিয়ে মহা ব্যস্ত। সারাদিন প্রার্থীর সাথে টো টো করে ঘুরে বেড়াচ্ছে। তাদের প্রার্থী জয়ী হলে তারা চাকরী পাবে এমন আশা তাদের মধ্যে আছে। দেশের উন্নতির জন্য অনেক পরিবর্তন দরকার আছে। কিন্তু এমন পরিবর্তন চাওয়া কারো উচিৎ নয় যা দেশকে গৃহযুদ্ধের দিকে ঠেলে দিতে পারে।
কেউ আওয়ামীলীগ করে, কেউ বিএনপি করে।
আবার কেউ কেউ অন্যান্য দলও করে। সবাই চায় তাদের দল জিতুক। রাজনীতির আরেক নাম ডিগবাজি। যে যত ডিগবাজি দিবে সে তত বড় নেতা। ধরুন ১০০ লোকের মধ্যে ২৫ জন আওয়ামীলীগ করে। এরা, (মানে এই ২৫ জন) সারা জীবনের জন্য আওয়ামীলীগ করে। আওয়ামীলীগ যদি হাজারও খারাপ কাজ করে তবুও তারা আওয়ামীলীগ করবেই। আবার ২৫ জন বিএনপি করে। তারা মরে গেলেও বিএনপি করবে। আমৃত্যু তারা বিএনপি'ই করে যাবে। বাকি ৫০ জনের মধ্যে ১০ জন অন্যান্য দল করে। আর ১০ জন কোনো দল করে না। তারা রাজনীতি নিয়ে মাথা ঘামায় না। দেশ নিয়ে তাদের কোনো চিন্তা ভাবনা নেই। তারা নিজেদের নিয়ে ব্যস্ত। বাকি থাকলো ৩০ জন। এই ত্রিশ জন হলো দেশের আসল জনগন। শিক্ষিত জনগন। তারা চিন্তা-ভাবনা করে কোন দল ক্ষমতায় এলে দেশের জন্য কাজ করবে। তারা অনেক চিন্তা ভাবনা করেই নিজের ভোট দেয়। তাদের মধ্যে আবেগ কাজ করে না। তারা লজিক ব্যবহার করে। তাদের কাছে আওয়ামীলীগ বা বিএনপি বড় কথা নয়।
আমরা কাকে ভোট দিবো ক্ষমতায় আনবো?
উন্নয়ন কী শুধু রাস্তাঘাট, ব্রিজ, কালভার্ট, সেতু নির্মাণ? গত দশ বছরে বৈষম্য কমেছে, না বেড়েছে? দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ গড়া কি কোনোদিন সম্ভব হবে? নেতাদের বলতে চাই- মিথ্যা আশ্রাস দিবেন না। আমাদের কথা বলার অধিকার দিন। লেখার অধিকার দিন। বেঁচে থাকবার অধিকার দিন। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা গাছে ধরে না। তাহা কাজের মধ্য দিয়া অর্জন করিতে হয়। বাম রাজনীতি করলে এখন কিছু পাওয়া যায় না, তাই মানুষ বাম রাজনীতি করে না। বরিশাল সদর-৫ আসনের বাম জোট মনোনীত সংসদ সদস্য পদ প্রার্থী কমরেড অধ্যাপক আব্দুস সাত্তার বেশ নির্বাচনী পথসভা করে বেড়াচ্ছেন। যাদের হাতে সীমাহীন সময় আছে, ঘরে বাজার আছে তারা নির্বাচন নিয়ে পড়ে থাকুক। আর যারা দিন আনি দিন খাই অবস্থা, তারা দেশ এবং নির্বাচন নিয়ে মধু পাগলার মতো নির্ভাবনায় থাকা দরকার। বট গাছের নিচে দাঁড়ালে বট গাছের ছায়া পড়ে। ঠিক তেমনি আপনি রাজনীতি করেন বা না করেন রাজনীতির ছায়া আপনার উপর ঠিকই পড়ে। কাজেই দেশে রাজনৈতিক পরিবেশ ভালো থাকলে- আপনার জন্য ভালো। তেমনি রাজনৈতিক পরিবেশ খারাপ থাকলে সেটাও আপনার উপর ছায়া ফেলবে। কাজেই রাজনীতিকে তুচ্ছ ভাবা যাবে না।
আগামী নির্বাচনে আওয়ামীলীগ জয় লাভ করবে।
সব কিছু মিলিয়ে বলা যায় আওয়ামীলীগ'ই জয়ী হবে। তারা গত দশ বছরে অনেক কাজ করেছে। গত দশ বছর যদি বিএনপি ক্ষমতায় থাকতো তাহলে দেশের কোনো উন্নতি হতো না। কালু, মালু, টালু আর হারিস-কারিস চৌধুরী বাংলাদেশের সেরা ধনীদের তালিকায় চলে আসতো। সহজ সরল সত্য কথা হলো- খালেদা জিয়ার প্রাইমারী স্কুলের শিক্ষিকা হবার যোগ্যতা নেই। এখন সে যদি দেশের প্রধানমন্ত্রী হোন তাহলে তার দ্বারা দেশের কি উপকার হবে? মাথা খাটান। বিবেগ কাজে লাগান। হুজুগে চলা বন্ধ করুন। আবেগ বাদ দেন। আমি রাজনীতি করি না। রাজনীতি নিয়ে আমার কোনো মাথা ব্যথাও নেই। খালেদা জিয়া আসলেও আমার কিছু না, শেখ হাসিনা আসলেও আমার কিছু না। আমাকে কাজ করেই ভাত খেতে হবে। কিন্তু সামগ্রিকভাবে চিন্তা করলে, দেশের উন্নতির কথা ভাবলে- মনে হয়- আওয়ামীলীগ'ই ক্ষমতায় আসুক।
এবার সেনাবাহিনী ক্ষমতা দখল করবে না।
৩০ তারিখেই নির্বাচন হবে। বিএনপি নির্বাচনে আসলেও কিছু না, না আসলেও কিছু না। মাঝপথে নির্বাচন থেকে চলে গেলেও কিছু যায় আসে না। ভোট হবে ৩০ তারিখেই। এবং আওয়ামীলীগই আবার সরকার গঠন করবে। দেশটাকে সম্ভাবনার দিকে এগিয়ে নিয়ে যায় সাহসী কিছু মানুষ। যাদের কাঁধে ভর দিয়ে এগোচ্ছে আমাদের দেশ। ১৯৯০ এর গণতন্ত্রায়নের পর দেশের মোট চারটি জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি মোট দুইটিতে জয়লাভ করে। তারা কি করেছিল দেশের জন্য? নির্বাচনের ইশতেহারে যা যা বলেছিল- সেই সব কথা কি রেখেছিল? আবেগে আর ভোট দিবেন না। দলকানাও হবেন না। সত্যিকার অর্থে যে দেশের জন্য কাজ করবে তাকেই ভোট দিবেন।
আপনাদের জন্য দোয়া ও শুভ কামনা রইল।
সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০১৮ রাত ৯:৫২