আমার বন্ধু শাহেদ। শাহেদ জামাল।
বলল, তুই কি ইশ্বর বিশ্বাস করিস?
আমি সাধারনত এই রকম প্রশ্ন গুলো এড়িয়ে চলি। কোনো রকম ঝামেলায় জড়াতে চাই না। যার যার বিশ্বাস নিয়ে সে থাকুক। আমার কি? আমি বললাম, বন্ধু ধর্ম নিয়ে আমি কোনো আলাপে যাবো না। ধর্ম সম্পর্কে আমার জ্ঞান একেবারেই কম।
শাহেদ বলল, তুই শুধু বল তোর ইশ্বরে বিশ্বাস আছে কি না?
আমি বললাম, বিশ্বাস আছে। অবশ্যই বিশ্বাস আছে।
শাহেদ বলল, আমার বিশ্বাস নেই। আমি ইশ্বরে বিশ্বাস করি না। এক সময় বিশ্বাস করতাম। খুব বিশ্বাস করতাম। নিয়মিত নামাজ পড়তাম। চিল্লায় যেতাম। রোজা রাখতাম। কিন্তু যেদিন ধর্মীয় কিতাব গুলো পড়তে শুরু করলাম। সেদিন থেকেই আমি নাস্তিক হতে শুরু করলাম। এখন আমি ধর্মীহীন হয়ে বেশ ভালো আছি। আনন্দে আছি। ধর্ম তো একটা কুসংস্কার। এর থেকে পৃথিবীর সব মানূষের বাইরে আসা দরকার। তবেই পৃথিবীটা আনন্দময় হবে।
আমি চুপ করে আছি। শাহেদ বেশ উত্তেজিত।
শাহেদ বলল, দিন দিন মানুষ ধর্মহীন হয়ে পড়ছে। ধর্মের প্রতি মানূষের আস্থা কমে যাচ্ছে। উপাসনালয় গুলোতে আজকাল লোকজন কম যায়। তারা বুঝে গেছে ধর্ম তাদের কিছু দিতে পারবে না। একজন আস্তিকের চেয়ে নাস্তিকের লেখাপড়া বেশী। সে বেশী জানে বলেই নাস্তিক হতে পেরেছে। নাস্তিক হতে বড় কলিজা লাগে। আর ধর্মওয়ালা হতে কিছু লাগে না। শুধু মাত্র নির্বোধ হলেই হলো। যে যত নির্বোধ সে তত বড় ধর্মওয়ালা। দরিদ্র লোকেরা ধর্মকে বেশি আকড়ে ধরে। তাদের শেষ হাতিয়ার ধর্ম। ধর্মের মিথ্যা বানোয়াট বুলি তাদের বেশ শান্তি দেয়। জ্ঞানী লোকদের ধর্ম আটকে রাখতে পারেনি।
আমি বললাম, পৃথিবী থেকে কি ধর্ম বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে? আচ্ছা, ডারউইন কি নাস্তিক ছিলেন?
শাহেদ বলল, আমার কথা মাঝে কথা বলবি না। আমি আগে শেষ করি।
শাহেদ আবার শুরু করলো-
চীন আজ এত উন্নত কেন? তারা ধর্মটাকে আকড়ে ধরে রাখেনি। ধর্ম থেকে পুরোপুরি বেরিয়ে আসতে পেরেছে বলেই তারা আজ উন্নত এক জাতিতে পরিনত হয়েছে। আমি এই দেশে জন্মেছি। এই দেশটাকে অনেক ভালোবাসি। আমাদের দেশটা অনেক দরিদ্র আর দরিদ্র দেশের লোকজন বেশী ধর্মপ্রান হয়। কচ্ছপের মতোন তারা ধর্মটাকে না বুঝেই আকড়ে রেখেছে। আর এই জন্যই এই দেশের উন্নতি হচ্ছে না। দেশের মানুষকে সচেতন করার দায়িত্ব সরকারের। কিন্তু স্বার্থপর সরকার নিজেই ধর্মকে ব্যবহার করে ক্ষমতায় থাকছে। দেশে স্বাধীন হয়েছে। কিন্তু ধর্মওয়ালাদের মন মানসিকতা স্বাধীন হয়নি। তারা আছে অন্ধকারে। তসলিমা নাসরিন আজও দেশে ফিরতে পারছেন না। অথচ এই দেশে কত চোর, ডাকাত আর দূর্নীতিবাজ বহালতবিয়তেই আছে। এই সমাজের লোকজন মুখে মুখে ধর্মের কথা বলেন, অথচ জীবনযাপনে ধর্মীয় বিধান মেনে চলেন না। আসলে বেশির ভাগ লোক ধর্মের মুখোশ পড়ে আছে।
আমি বললাম, বন্ধু একটু জিরিয়ে নে।
এই বিশ্বব্রহ্মাণ্ড এমনিতেই সৃষ্টি হয়েছে, এর কোনো স্রষ্টা নেই?
শাহেদ বলল, আমি আমার কথা শেষ করে নিই। ধর্মকে বিলুপ্ত করতে পারলেই কেবল আমাদের এই পৃথিবী স্বর্গের পৃথিবী হতে পারবে। আনন্দময় একটা পৃথিবী। কোনো হানাহানি থাকবে না। ধর্মগুলো সত্য নয় বরং মিথ্যার সমূদ্র। আগামী পৃথিবী হবে ঈশ্বর-মুক্ত পৃথিবী। বর্তমান বিশ্বে জনসংখ্যার একটা বড় অংশই ধর্মহীন।
ধার্মিকদের মধ্যে ১০০% ভুল ধারনা রয়েছে। তাদের জীবনটা গেল ভুলে ভুলে। পৃথিবী ধ্বংসের আগে কম পক্ষে ৫০ বছর আগে পৃথিবীর সমস্ত মানুষ কঠিন কঠিন অসুখে মারা যাবে। এমন সব জটিল ভাইরাস সারা পৃথিবীময় ছড়িয়ে পড়বে যে মুহুর্তের মধ্যে মানুষ টপাটপ মরতে থাকবে। অদ্ভুর সব রোগ হবে। কোনো চিকিৎসা থাকবে না।
সর্বশেষ এডিট : ১০ ই মে, ২০১৯ রাত ১০:৪৫