অনেক বছর আগের কথা।
কত বছর আগের কথা(?) তা আর আজ মনে নেই। তবে কোনো মানুষ'ই অতীতের কথা পুরোপুরি ভুলে যেতে পারে না। হুটহাট করে কিছুটা মনে পড়ে যায়। তারপর বুকটা হাহাকার করে উঠে। আনন্দের সৃতি আনন্দ দেয়। দুঃখের সৃতি কষ্ট দেয়। যাই হোক, ঘটনাটা বলি-
মাছ ধরতে গিয়েছিলাম।
ঢাকার কাছেই। বিশাল একটা পুকুর। সেই পুকুরে মাছ ধরতে গিয়েছিলাম। টিকিট কেটে মাছ ধরতে হয়। পুকুরের পাশেই একটা শ্মশান। একটা চিতায় সাজানো হচ্ছে এক তরুনীকে। সারা শরীরের উপর টুকরো টুকরো কাঠ দিয়ে মেয়েটিকে ঢেকে দেওয়া হচ্ছে। শুধু মেয়েটির মুখ আর পা বাদে। কি সুন্দর পা! এত সুন্দর পা আমি কোনোদিন দেখিনি। পায়ে সুন্দর করে আলতা দেওয়া। আর মুখটা কি মায়াময়। বছরের পর বছর ওই মুখের দিকে তাকিয়ে থাকলে একটুও বিরক্ত লাগবে না। একবার ইচ্ছা করলো- মেয়েটির কপালে একটি চুমু দেই। মেয়েটির নাকের ছিদ্র তুলা দিয়ে ভরাট করে রাখা হয়েছে।
এক সময় মেয়েটির গায়ে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হলো।
দূরে দাঁড়িয়ে থাকা বেশ কয়েকজন গ্রাম্য নারী চোখের জল ফেলছেন। কেউ কেউ ফিসফিস করে নিজেদের মধ্যে কথা বলছিলেন। জানতে পারলাম মেয়েটি বিষ খেয়ে আত্মহত্যা করেছে। কারণ তার প্রিয় মানুষটি তাকে ছেড়ে চলে গেছে অন্য কোনো নারীর সাথে। নিজের অজান্তেই বলে ফেললাম- আহারে আহারে। মেয়েটিকে চিনি না জানি না, অথচ মেয়েটির জন্য খুব কষ্ট লাগছে।
কী গভীর দুঃখে মেয়েটি নিজের জীবন নষ্ট করে দিল!
কেন যেন হঠাত আমার বুকটা মুচড়ে- চোখে পানি এসে যাচ্ছিল। ওই মেয়েটি আমার কেউ নয়। তবু ওর জন্য খুব কষ্ট হচ্ছিল। পটপট করে শব্দ হচ্ছে- আগুনের। পুড়ে যাচ্ছে মেয়েটি সারা শরীর। আমার মন প্রচন্ড খারাপ হলো। সেদিন আর মাছ ধরা হলো না আমার। আমি বাসায় ফিরে এলাম। রাতে একটা মেয়েকে স্বপ্নে দেখি। চমৎকার স্বপ্ন। মেয়েটাকে দেখেই চিনতে পারলাম- আজ শ্মশানে এই মেয়েটিকেই পুড়ানো হচ্ছিল।
সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই জুন, ২০১৯ রাত ৯:২১