somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

রাজীব নুর
আমার নাম- রাজীব নূর খান। ভালো লাগে পড়তে- লিখতে আর বুদ্ধিমান লোকদের সাথে আড্ডা দিতে। কোনো কুসংস্কারে আমার বিশ্বাস নেই। নিজের দেশটাকে অত্যাধিক ভালোবাসি। সৎ ও পরিশ্রমী মানুষদের শ্রদ্ধা করি।

আজকের ডায়েরী- ২২

২৫ শে জুন, ২০১৯ রাত ৮:২২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



রবীন্দ্রনাথের গান গুলো আমাকে শান্তি দেয়, আনন্দ দেয়। দুশ্চিন্তা মুক্ত রাখে। বারবার মুগ্ধ হই। গানের কথা আর সুর অসাধারন। আজ সকালে ঘুম থেকে উঠেই এই গানটা শুনলাম-
‘’ফাগুন, হাওয়ায় হাওয়ায় করেছি যে দান--
তোমার হাওয়ায় হাওয়ায় করেছি যে দান--
আমার আপনহারা প্রাণ আমার বাঁধন-ছেড়া প্রাণ॥‘’


গানটা অনেকবার শুনলাম। একসময় মা যখন রবীন্দ্রনাথের গান শুনতেন তখন আমার বিরক্ত লাগতো। আর আজ আমি নিজের সেই সব গান গুলো মুগ্ধ হয়ে শুনি।

খুটখুট শব্দে ঘুম ভেঙ্গে গেল।
ঘুম ভেঙ্গে গেলেও আমি চোখ বন্ধ করে রেখেছি। আমার ধারনা রাত তিনটা বাজে। খুট খাট শব্দ আসছে রান্না ঘর থেকে। এত রাতে রান্না কে করবে? হাত দিয়ে দেখলাম সুরভি আমার পাশেই শুয়ে আছে। তাহলে রান্না ঘরে কে? অথচ রান্না ঘর থেকেই শব্দ আছে। কে যেন ডিম বাজছে। ডিম ভাজার গন্ধ পাচ্ছি। যেহেতু আমি একজন আধুনিক মানুষ, কোনো প্রকার কুসংস্কারে বিশ্বাস নেই। তাই লাইট অন করে রান্না ঘরে না ঢুকে চিন্তা করতে লাগলাম- এত রাতে রান্না ঘরে ডিম কে ভাজছে।

কোনো ভূত রান্না ঘরে ডিম ভাজতে যায়নি।
আমার মাথার কাছে একটা জানালা আছে। জানালায় পর্দা ঝুলানোর জন্য স্টীলের স্ট্যান্ড লাগানো। সেই স্ট্যান্ডে সকালে হেঙ্গার থেকে শার্ট নিয়ে, হেঙ্গারটি পর্দার স্ট্যান্ডে ঝুলিয়ে রেখেছি। হেঙ্গারটি ফ্যানের বাতাসে কেঁপে ঠক ঠক শব্দ হয়েছে। আমার কাছে সেই শব্দ মনে হয়েছে রান্না ঘর থেকে এসেছে। আর ডিম ভাজার গন্ধটা মনে হয় আমার মস্তিস্ক তৈরি করেছে। অথবা পাশের বাসার কেউ সত্য সত্য ডিম ভাজছে।

রবীন্দ্রাথের আরেকটি গান আমাকে মুগ্ধ করে-
আমার বেলা যে যায় সাঁঝ-বেলাতে
তোমার সুরে সুরে সুর মেলাতে॥
বিশ্বহৃদয়্পারাবারে রাগরাগিণীর জাল ফেলাতে—
তোমার সুরে সুরে সুর মেলাতে?।


অসাধারন গান। অসাধারন সুর। তুলনা হয়। জাস্ট গ্রেট। রবীন্দ্রনাথ একজন ম্যাজিশিয়ান। সবার মনের কথা লিখে গেছেন।

প্রায় ছয় মাস ধরে বেকার বসে আছি।
জমানো টাকা সব শেষ। সারাদিন মুভি দেখি, বই পড়ি, গান শুনি আর বই পড়ি। ক্ষমতাবান মামা চাচা নেই- তাই আমার কপালে চাকরীও নেই। ঘুষ দিয়ে যে চাকরী নিবে সেই টাকাও নেই। আমার মতো বেকার যুবকের অভাব নেই। যখন আমি ভাবি আমি একাই বেকার না, আরো বহু লোক বেকার- তখন শান্তি শান্তি লাগে। পরিচিত সবার কাছেই গিয়েছি। সবাই ফিরিয়ে দিয়েছে। চাকরী পাওয়ার আশা পুরোপুরি ছেড়ে দিয়েছি। এখন আর সেই চেষ্টা করিও না। কিন্তু সংসার চলবে কি করে? এই চিন্তা করতে গেলেই দম বন্ধ হয়ে আসে। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, দেশে বেকার লোক কম, তাই গ্রামে ধান কাটার জন্য লোক পাওয়া যায় না। গ্রামে গিয়ে যে ধান কাটবো, ধান কি করে কাটে তা-ও তো জানি না।

অনেক প্রতিভা নিয়েই জন্মেছিলাম।
কিন্তু কিচ্ছু হলো না। চলছে আষাঢ় মাস। অথচ বৃষ্টির দেখা নেই। গ্রীষ্ম কালের চেয়ে বেশি গরম এখন। চামড়া জ্বলে যায়, পুড়ে যায়। সেদিন উত্তরা যাবো। লাফ দিয়ে এক বাসে উঠলাম। ভাগ্য ভালো ছিট পেলাম। বাইরে কড়া রোদ। প্রচন্ড গরম। কিছু দূর যেতেই অনেক যাত্রী উঠলো। একযাত্রী আমার সামনে দাঁড়ালো। ভয়াবহ বাজে গন্ধ। ঘামের বাজে গন্ধে আমার বমি এসে যাচ্ছে। দম বন্ধ হয়ে আসছে। এর চেয়ে ডাস্টবিনের ময়লার গন্ধও অনেক ভালো। ঘামের গন্ধ এমন ভাজে হতে পারে- আমার ধারনার বাইরে। আমি লাফ দিয়ে যেভাবে বাসে উঠেছিলাম, ঠিক সেভাবেই লাফ দিয়েই নেমে গেলাম। বাস থেকে নেমেও শান্তি নেই। ঘামের গন্ধ পিছু ছাড়ছেই না। ঘটনা কি যেখানেই যাচ্ছি ঘামের গন্ধ পাচ্ছি। শেষে আবিস্কার করলাম- ঘামের বাজে গন্ধ আমার গা থেকেই আসছে।
সর্বশেষ এডিট : ২৫ শে জুন, ২০১৯ রাত ৮:২৬
১৪টি মন্তব্য ১৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে...

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:০৯

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে,
পড়তো তারা প্লে গ্রুপে এক প্রিপারেটরি স্কুলে।
রোজ সকালে মা তাদের বিছানা থেকে তুলে,
টেনে টুনে রেডি করাতেন মহা হুলস্থূলে।

মেয়ের মুখে থাকতো হাসি, ছেলের চোখে... ...বাকিটুকু পড়ুন

অহমিকা পাগলা

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১৪


এক আবেগ অনুভূতি আর
উপলব্ধির গন্ধ নিলো না
কি পাষাণ ধর্মলয় মানুষ;
আশপাশ কবর দেখে না
কি মাটির প্রণয় ভাবে না-
এই হলো বাস্তবতা আর
আবেগ, তাই না শুধু বাতাস
গায়ে লাগে না, মন জুড়ায় না;
বলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

হার জিত চ্যাপ্টার ৩০

লিখেছেন স্প্যানকড, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩




তোমার হুটহাট
চলে আসার অপেক্ষায় থাকি
কি যে এক ছটফটানি
তোমার ফিরে আসা
যেন প্রিয় কারো সনে
কোথাও ঘুরতে যাবার মতো আনন্দ
বারবার ঘড়ি দেখা
বারবার অস্থির হতে হতে
ঘুম ছুটে... ...বাকিটুকু পড়ুন

জীবনাস্ত

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৪৪



ভোরবেলা তুমি নিশ্চুপ হয়ে গেলে একদম,
তোমার বাম হাত আমার গলায় পেঁচিয়ে নেই,
ভাবলাম,তুমি অতিনিদ্রায় আচ্ছন্ন ,
কিন্তু এমন তো কখনো হয়নি
তুমি বরফ জমা নিথর হয়ে আছ ,
আমি... ...বাকিটুকু পড়ুন

যে দেশে সকাল শুরু হয় দুর্ঘটনার খবর দেখে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:১১

প্রতি মিনিটে দুর্ঘটনার খবর দেখে অভ্যস্ত। প্রতিনিয়ত বন্যা জলোচ্ছ্বাস আসে না, প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার খবর আসে। আগে খুব ভোরে হকার এসে বাসায় পত্রিকা দিয়ে যেত। বর্তমানেও প্রচলিত আছে তবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×