somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

রাজীব নুর
আমার নাম- রাজীব নূর খান। ভালো লাগে পড়তে- লিখতে আর বুদ্ধিমান লোকদের সাথে আড্ডা দিতে। কোনো কুসংস্কারে আমার বিশ্বাস নেই। নিজের দেশটাকে অত্যাধিক ভালোবাসি। সৎ ও পরিশ্রমী মানুষদের শ্রদ্ধা করি।

আজকের ডায়েরী - ২৮

৩০ শে আগস্ট, ২০১৯ রাত ৮:৫৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



গতকাল রাতে একটা থ্রিলার মুভি দেখেছি।
চমৎকার মুভি। সাতজন সাইকো বাসা বাড়িতে চুরী ডাকাতী করে। মেয়েদের খুন করে। খুন করার আগে ধর্ষন করে। কিন্তু কিছুতেই ধরা পড়ে না তারা। পুলিশের মাথা নষ্ট তাদের খুঁজতে খুজতে। পুলিশ কোনো তথ্য সংগ্রহ করতে পারে না। তারা সাত জন মিলে নিখুঁত ভাবে চুরী ডাকাতি, ধর্ষন আর খুন করেই যাচ্ছে। এই সাত জনের মধ্যে দুইজন আবার প্রতিবন্ধী। দুই প্রতিবন্ধী দূর্দান্ত বুদ্ধিমান। এই দুই প্রতিবন্ধী মিলে কফি খেতে খেতে একজন স্কুল শিক্ষককে ইলেকট্রিক করাত দিয়ে টুকরো টুকরো করে। একসময় তারা নিজেদের নিরাপত্তার কথা ভেবে সুন্দরবনে আশ্রয় নেয়। সেখানে আরো অনেক রোমাঞ্চকর ঘটনা ঘটে। পুরো মুভি আগ্রহ নিয়ে দেখলাম। একটুও বিরক্ত লাগে নি। এদিকে মুভি দশ মিনিট চলার সাথে সাথেই সুরভি গভীর ঘুমে। একাই দেখলাম। মাঝে মাঝে বেশ ভয় ভয় লাগছিল।

রাত দুইটায় মুভি শেষ হলো।
চোখে ঘুম নেই। কি করবো বুঝতে পারছি না। ঘুম না এলে তো বিছানায় যাওয়ার মানে হয় না। খুব চা খেতে ইচ্ছা করছে। সুরভি ঘুমে। অবশ্য ঘুম থেকে ডেকে যদি বলি, একটূ চা করে দাও। দিবে চা করে। কিন্তু এটা অমানবিক দেখাবে। আমার ভাগ্য ভালো ফ্লাক্সে দেখি এক কাপ চা রয়ে গেছে। আমার বেলকনি থেকে দেখা যায় যায়, আশে পাশের সমস্ত ঘর বাড়ির লোকজন ঘুমে। আমি ভাবছি রোহিঙ্গাদের নিয়ে। ঠিক এমন সময় ছাদে কিছু একটা শব্দ পেলাম। মনে হচ্ছে ছাদে কেউ হাঁটছে। অথবা কোনো মেয়ে নূপুর পায়ে নাচছে। অবশ্যই আমার মনের ভুল, এরকম হবার কোনো সম্ভবনাই নেই। সিনেমাতে এমন হয়, বাস্তবে নাক। আবার বাস্তব জীবনে অনেক কিছু হয়, সেসব সিনেমায় দেখায় না। না, মনের ভুল না। ছাদে আসলেই কেউ আছে। আমি কি একবার গিয়ে দেখে আসবো? এতটা সাহস কি আমার আছে?

ভয় লাগছে আমার। বেশ ভয় লাগছে।
ঘরে ঢুকলাম। সুরভি বিছানায় গভীর ঘুমে। অথচ মনে হচ্ছে এ মেয়ে সুরভি নয়। অন্য কোনো মেয়ে। সুরভি তো মিরপুর গিয়েছে তার বাবার বাড়ি। তাহলে এই মেয়ে কোথা থেকে এলো? আমি কি সুরভিকে একটা ফোন দিবো? নাকি মেয়েটির পাশে চুপ করে শুয়ে থাকবো। এবং সকালে রহস্য সমাধান করা যাবে। এই রহস্য সমাধান না হলে আমার কিছুতেই ঘুম আসবে না। নিকোটিনের অভাব বোধ করছি। ঘরে তো সিগারেট খাওয়া নিষেধ। সিগারেট খেতে হলে বেলকনিতে যেতে হবে। কিন্তু বেলকনিতে যাওয়ার সাহস সঞ্চয় করতে পারছি না। বেলকনিতে গেলেই হয়তো ছাদে কোনো অশরীরির ছাদে হেঁটে যাওয়ার ভয়ঙ্কর শব্দ শুনবো। যে শব্দ শুনলেই বুকের মধ্যে দুনিয়ার সমস্ত ভয় এসে জড়ো হবে। এই যে এখন এত ভয় পাচ্ছি, অথচ দিনের বেলা এই ভয়টা থাকবে না, জানি।

আমি কখন ঘুমিয়ে পড়েছি জানি না।
ঘুম ভাঙ্গলো সকাল সাড়ে দশটায়। ঘর অন্ধকার। দরজা, জানালা সব বন্ধ। জানালায় মোটা পর্দা। ঘুম ভাঙতেই গতকাল রাতের সব ঘটনা মনে পড়তে লাগলো। পাশে সুরভি নেই। তার মানে সুরভি মিরপুর গিয়েছে। গতকাল রাতে আমি একাই মুভি দেখেছি। আমার পাশে কেউ ছিল না। ছাদের শব্দটা হয়তো মনের ভুল। অথবা পুরো ঘটনাটাই আমি স্বপ্নে দেখেছি। মাঝে মাঝে স্বপ্ন আর বাস্তব মিশে একাকার হয়ে যায়। এখন ফ্রেশ হয়ে হোটেলে নাস্তা খেতে যাবো। ওয়াশ রুম থেকে ফিরে এসে দেখি, সুরভি খাটে বসে আছে। আমি অবাক হয়ে সুরভির দিকে তাকিয়ে আছি। সুরভি বলল, এইভাবে ভূতের মতোন তাকিয়ে আছো কেন? যাও, নাস্তা খাও। দুপুরে কি খাবে? আমি বললাম, তেহারী। সুরভি বলল, আমি জানতাম!

দুপুরে তেহারি রান্না করলো মা।
মার হাতের তেহারি টা খুব বেশি মজা হয়। সবাই মিলে একসাথে খেলাম। খুব খেলাম আমি। খাওয়া শেষ হতেই মনে মনে ভাবলাম, কোক- স্প্রাইট কি কিছু নেই? ঠিক তখন ভাবী ফ্রিজ থেকে বড় এক বোতল কোক বের করলো। কোক দেখে আমার স্প্রাইট খেতে ইচ্ছা করলো। আমি বললাম, ভাবী স্প্রাইট নেই? ভাবী ফ্রিজ থেকে এক বোতল স্প্রাইট বের করলো। স্বচ্ছ কাঁচের গ্লাসে এক গ্লাস স্প্রাইট খেলাম। শরৎচন্দ্রের দত্তা বইটি পড়তে পড়তে ঘুমিয়ে গেলাম। খুব সুন্দর একটা স্বপ্ন দেখলাম। স্বপ্ন দেখে মনটা খুশিতে ভরে গেল। ঘুম ভাঙ্গল ঠিক সন্ধ্যার আগে আগে। দেখি আকশে মেঘ জমতে শুরু করেছে। হোক একটা বৃষ্টি। সারাদিন বড্ড গরম গিয়েছে। যদি রাতে খুব বৃষ্টি হয় তাহলে আজ খিচুরী, ইলিশ মাছ ভাজা আর ডিম ভাজা খাবো। হে হে....
সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে আগস্ট, ২০১৯ রাত ৮:৫৪
১৫টি মন্তব্য ১৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। কালবৈশাখী

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৭ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:২৪



গত পরশু এমনটি ঘটেছিল , আজও ঘটলো । ৩৮ / ৩৯ সে, গরমে পুড়ে বিকেলে হটাৎ কালবৈশাখী রুদ্র বেশে হানা দিল । খুশি হলাম বেদম । রূপনগর... ...বাকিটুকু পড়ুন

একজন খাঁটি ব্যবসায়ী ও তার গ্রাহক ভিক্ষুকের গল্প!

লিখেছেন শেরজা তপন, ১৭ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:০৪


ভারতের রাজস্থানী ও মাড়ওয়ার সম্প্রদায়ের লোকজনকে মূলত মাড়ওয়ারি বলে আমরা জানি। এরা মূলত ভারতবর্ষের সবচাইতে সফল ব্যবসায়িক সম্প্রদায়- মাড়ওয়ারি ব্যবসায়ীরা ঐতিহাসিকভাবে অভ্যাসগতভাবে পরিযায়ী। বাংলাদেশ-ভারত নেপাল পাকিস্তান থেকে শুরু করে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইরান-ইজরায়েল যুদ্ধ

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ১৭ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:০৮

আমরা সবাই জানি, ইরানের সাথে ইজরায়েলের সম্পর্ক সাপে নেউলে বললেও কম বলা হবে। ইরান ইজরায়েলকে দুচোখে দেখতে পারেনা, এবং ওর ক্ষমতা থাকলে সে আজই এর অস্তিত্ব বিলীন করে দেয়।
ইজরায়েল ভাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

নগ্ন রাজা কর্তৃক LGBTQ নামক লজ্জা নিবারনকারী গাছের পাতা আবিষ্কার

লিখেছেন মুহাম্মদ মামুনূর রশীদ, ১৭ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:৪০

LGBTQ কমিউনিটি নিয়ে বা এর নরমালাইজেশনের বিরুদ্ধে শোরগোল যারা তুলছেন, তারা যে হিপোক্রেট নন, তার কি নিশ্চয়তা? কয়েক দশক ধরে গোটা সমাজটাই তো অধঃপতনে। পরিস্থিতি এখন এরকম যে "সর্বাঙ্গে ব্যথা... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে...

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:০৯

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে,
পড়তো তারা প্লে গ্রুপে এক প্রিপারেটরি স্কুলে।
রোজ সকালে মা তাদের বিছানা থেকে তুলে,
টেনে টুনে রেডি করাতেন মহা হুলস্থূলে।

মেয়ের মুখে থাকতো হাসি, ছেলের চোখে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×