১। হুটহাট করে মাঝে মাঝে টুকরো টুকরো সৃতি খুব মনে পড়ে যায়। কত তুচ্ছ অর্থহীন সব ঘটনা।
তখন আমার চার কি পাঁচ বছর বয়স হবে-
একটা চকলেট হাতে নিয়ে ঘুমিয়ে পড়েছিলাম। মাঝরাতে অসংখ্য পিঁপড়া আমাকে ঘিরে ধরলো। পিপড়ার কামড়ে ঘুম ভেঙ্গে গেল, চিৎকার করে কাঁদতে শুরু করলাম আমি। মা আলো জ্বালালো। দেখা গেল লাল পিপড়ে দিয়ে ভরে গেছে আমার বালিশ- বিছানা। আব্বা তো হই চই শুরু করে দিল। একটাকেও আস্ত রাখবো না। সব ক'টা পুড়িয়ে মারবো। আমার ছেলেকে কামড় দিয়েছে। কেরাসিন আনো, দিয়াশলাই দাও। মা বলল, এত রাতে চিৎকার চেচামেচি করো না। ......
আর আমি তখন বসে বসে ভাবছি- পিঁপড়েদের খবর দিল কে? কি করে তারা জানতে পারল আমার হাতে চকলেট আছে? পিপড়া'রা কি রাতে ঘুমায় না?
২। মেডিক্যালের এক ছাত্র উচ্চতর ক্যালকুলাসে ফেইল করে প্রফেসরের কাছে গিয়ে ক্ষোভ ঝাড়ে, “হেই, ছাতার এই অঙ্ক করে আমার কি লাভ? আমি কেন ক্যালকুলাস পড়ব? এমন তো না যে আমি ডাক্তার হলে ক্যালকুলাস আমার হাতি ঘোড়া উপকার করবে!”
প্রফেসর শান্তভাবে উত্তর দেন, “আসলে তুমি যা বলেছ ঠিক নয়। ক্যালকুলাস মানুষের প্রাণ বাঁচায়।”
“কীভাবে? দেখান দেখি!” ছাত্র জানতে চায়।
“খুব সোজা। ডাক্তার হওয়ার মতো যোগ্যতা যাদের নেই, ক্যালকুলাসের কারণে আগে থেকেই তারা মেডিক্যাল স্কুল থেকে ঝরে পড়ে।”
৩। মনে রাখবেন সকল সফল এবং চোর বদমাশ, দূর্নীতিবাজ ব্যক্তিই এক সময় মায়ের কোলে কাঁদতে থাকা শিশু ছিলো। সব বড় অট্টালিকাই একসময় শুধু একটি নকশা ছিলো। আপনি আজ কোথায় আছেন তা গুরুত্বপূর্ণ নয়, ভবিষ্যতে আপনি কোথায় পৌছাবেন সেটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।
৪। গ্রিক দার্শনিক প্রবর নাকি দিনের বেলা বাতি জ্বালিয়ে কোনো কিছু খুঁজে বেড়াচ্ছিলেন। এক পথচারী তাকে জিজ্ঞাসা করেছিল, মহোদয় আপনি দিনের বেলায় এমন করে কী খুঁজছেন? উত্তরে দার্শনিক বলেছিলেন মানুষ। দার্শনিক প্রবরের খুঁজে বেড়ানোর ধারা আর উত্তরের মধ্যে বেশ অভিনবত্ব আছে এ কথা স্বীকার করতেই হবে। কারণ মানুষ যেখানে চারপাশেই ভিড় করে আছে সেখানে তাকে খুঁজে বেড়াতে হয় না। আবার দিনের বেলায় বাতি জ্বালিয়ে খোঁজা সে তো এক দেখার মতো ব্যাপার। কাজেই সব ব্যাপারটার মধ্যে যদি অন্য কোনো তাৎর্পয না থাকে তাহলে এটাকে পাগলামি বলা ছাড়া গত্যন্তর নেই।
বিচক্ষণ ব্যক্তি মাত্রই বলবেন, না, ব্যাপারটা পাগলামি নয় এর মধ্যে তাৎর্পয তো আছেই, তদপুরি আছে একটি শাশ্বত তথ্য। অর্থাৎ এমনি দিনের বেলায় বাতি জ্বালিয়ে মানুষ খোঁজার ব্যাপারটি দার্শনিকের সঙ্গেই শেষ হয়ে যায়নি। প্রতি যুগেই এমনি মানুষ খোঁজার একটা প্রচেষ্টা আমরা লক্ষ্য করে থাকি। অতীতেও তা ছিল, আর এখনো আছে। এতে বোঝা যাচ্ছে, মানুষ তাহলে মানুষ নয় আর দিনের আলোও আলো নয়। চারদিকে অজ্ঞানতার অন্ধকারে ছেয়ে আছে। এর সামনে দিনের আলো আর রাতের কালো সবই এক সমান। আর সেই অন্ধকারে মানুষের চেহারা নিয়ে যারা ঘুরে বেড়াচ্ছে। তারা সবাই মানুষ নয়, ভিন্নতর কোনো জীব। দার্শনিক জ্ঞানের মশাল নিয়ে তাই মানুষ খুঁজে বেড়াচ্ছেন।
৫। অনেকদিন আগে বেশ কিছু দিন পুরান ঢাকায় কলতা বাজার ছিলাম। তখন দেখতাম-গলির মাথায় ল্যাম্প পোষ্টের সামনে দাঁড়িয়ে- মধ্যেরাত্রে একলোক মদ খেয়ে অকথ্য ভাষায় আকাশের দিকে তাকিয়ে গালা-গালি করত।তারপর বউটা এসে কাঁদতে কাঁদতে তার স্বামীকে নিয়ে যেত।আমি সারারাত জেগে বই পড়তাম । ওই লোকের গালা-গালি শুনে ব্যলকনিতে এসে দাঁড়াতাম। একদিন ওই মাতালটার সাথে খুব সাহস করে আলাপ করে ফেললাম । প্রথমে লোকটা ভাব করতে চায়নি । পরে একটু একটু করে ভাব হয়েই গেল । আমি লোকটার কাছে অনেকবার জানতে চেয়েছি- সে মদ খেয়ে মধ্যরাত্রে কেন গালাগালি করে । লোকটা জবাব দিতে পারেনি । তখন বুঝতে পারলাম, ওর রাগটা বিশেষ কারো ওপর নয়। ওর মনটাই বিগড়ে গেছে । মদ খেলেই ভিতরের নানা রকম জমে- থাকা বিষ গালাগাল হয়ে বেরিয়ে আসে। তখন আরাম লাগে । এখন সে আমার বন্ধু ।
সামু কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করবো শ্রদ্ধেয় চাঁদগাজীকে পোষ্ট এবং মন্তব্য ব্যান করা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হোক। উনার পোষ্ট অসংখ্য ব্লগারগন মুগ্ধ হয়ে পড়েন। উনি ভালো মন্তব্য করেন। উনার মন্তব্য থেকে ব্লগাররা তাদের ভুল গুলো বুঝতে পারেন।
সর্বশেষ এডিট : ০৯ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৯ বিকাল ৫:৫৮