বাজারে গেলে আমার মাথা ঘুরায়।
প্রতিটা জিনিসের দাম বেড়েই চলেছে। আমি মাসের শুরুতেই পুরো মাসের বাজার একেবারে করে ফেলি। আজ মাসের ১৩ তারিখ অথচ এ মাসে এখনও বাজার করি নি। এই তেরো দিন সুরভি কিভাবে পার করলে সে-ই ভালো জানে। এর মধ্যে আমি চার বার বাজার গিয়েছি এবং কিছু না কিনে বাসায় ফিরে এসেছি। সব কিছুর দাম বাড়তি। গরীব মানুষ বাঁচবে কি করে? বাজারের জিনিসপত্রের অবভাব নেই। অথচ দাম হাতের নাগালের বাইরে। আমাদের দেশ দরিদ্র দেশ। এদেশের বেশির ভাগ মানুষ'ই গরীব। আমি ভেবে পাই না, তারা কিভাবে খেয়ে বেঁচে আছে! সামান্য একটা ফুলকপি ৫০ টাকা। অথচ এই ফুল কপির দাম হওয়া উচিত সর্বোচ্চ পনের টাকা।
গতমাসে যা যা কিনেছি,
ঐ সমস্ত জিনিস এমাসে কিনতে গিয়ে দেখি দাম বেড়ে গেছে। আমি তো দরিদ্র মানুষ। আমার তো সীমাহীন টাকা না। একটা মাস পার করতে অনেক বেগ পেতে হয়। দম বন্ধ হয়ে আসে। দেশ উন্নয়নের মহাসড়কে গেলেও, আমি এই উন্নয়নের দেশে মন ভরে একটু বাজার করতে পারি না। আমার পরিবারে তিনজন মানুষ। তা-ই আমাকে হিমসিম খেতে হচ্ছে। আর যে পরিবারে ৫/৭ জন মানুষ তাদের কেমন কষ্ট, সে আমি খুব ভালোই বুঝতে পারছি। আজ সকালেও বাজারে গিয়েছি। পুরো বাজার ঘুরে ঘুরে দেখলাম- প্রচুর দাম। চাষ করা মাছও অনেক দাম। কোনো কিছু না কিনে বাসায় ফিরে এসেছি। অথচ একদল মানুষ পাগলের মতো বাজার করছে। তারা এত টাকা পায় কই?
বাসায় ফেরার পথে পত্রিকা কিনে এনেছি।
সুরভি আমাকে দেখেই বুঝতে পেরেছে বাজারে গিয়ে আমার মেজাজ খারাপ হয়েছে। সিদ্ধান্ত নিলাম আজ সারাদিন বসে বসে পত্রিকা পড়বো। দরকার নাই খাওয়া দাওয়া করার। মেয়ে গিয়েছে ভাই-ভাবীর সাথে রাঙ্গামাটি। সুরভিকে বললাম, চা দাও। অথচ আমার মনেই নেই- ঘরে চাপাতি, চিনি, দুধ কিছুই নেই। সামান্য চা বানাতেও কত কিছু লাগে! কমপক্ষে ২৫০ টাকার চাপাতি লাগে, ডানো দুধ পাঁচ শ' গ্রাম ২২০ টাকা। চিনি এক কেজি ৬০ টাকা। যাই হোক, সুরভি চা দিলো। কিভাবে ব্যবস্থা করলো কে জানে! সুরভির এই ব্যাপারটা আমার খুব ভালো লাগে। নাই এর মধ্যে থেকেও কিভাবে যেন ব্যবস্থা করে ফেলে। চায়ে চুমুক দিয়ে পত্রিকা পড়া শুরু করলাম। শালার পত্রিকা পড়লেও মেজাজ খারাপ হয়।
'শেখ হাসিনা বলেছেন- ঘুষ ও দুর্নীতির ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে।' ঘুষ তো লেনদেন করেই সরকারী লোকজনেরা। এমন কোনো সরকারী অফিস আছে যেখানে ঘুষের কারবার নেই?
'খালেদা জিয়ার জামিন আবেদন খারিজ হওয়ার পর সুপ্রিম কোর্টে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন বিএনপিপন্থি কয়েকজন আইনজীবী'। এটা লোক দেখানো কান্না। সত্যিকার কান্না নয়। এগুলারে কানে ধরে উঠবোস করানো দরকার।
'বিমানে করে যে পেঁয়াজ আনা হয়েছে। তার প্রতি কেজিতে খরচ হয়েছে ১৫০ টাকা।' তাহলে বিমানে করে পেঁয়াজ আনার দরকারটা কি ছিল? এত এত দেশ থেকে পেঁয়াজ আনা হলো। কিন্তু দাম তো কমে নাই।
''ডিসেম্বরের সৃতি' নামে মুহম্মদ জাফর ইকবালের লেখা আছে বেশ কয়েকটা পত্রিকাতে লিখেছেন। সব গুলোতে একই লেখা।' এটা ভালো হয়েছে, যে যেই পত্রিকা'ই পড়ুক স্যারের লেখা সকলে পড়তে পারবেন।
'চাঁদপুরের ফরিদ্গঞ্জে আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষ। আহত ২৫ জন।' আহত না হয়ে মরুক শালারা। দুষ্ট গরুর চেয়ে শূন্য গোয়াল অনেক ভালো। লুটেপুটে খেয়ে দেশটাকে শেষ করে দিচ্ছে হারামির বাচ্চারা!
'ঢাকা চিড়িয়াখানায় হাতি খেলছে ফুটবল। শিশুরা হাতির ফুটবল খেলা দেখে মুগ্ধ। জানা গেছে, কিছুদিন পর হাতি বাস্কেটবলও খেলবে।' হাতি বসে বসে খাবে তা হবে না। খেলুক তাতে মানুষ বিনোদন পাবে। পশুর বেলায়ও ফুড ফর ওয়ার্ক।
'কুষ্টিয়াতে জন্মদিনে মদ খেয়ে তিন বন্ধুর মৃত্যু। এবং তিন জন অসুস্থ।' শালারা জন্মদিনে মদ খায়। আরে বন্ধুর জন্মদিনে মদ না খেয়ে বন্ধুর জন্য নামাজ পড়ে দোয়া করলি না কেন? অথবা বন্ধুর জন্মদিন উপলক্ষ্যে পাঁচজন ভিক্ষুককে ভালো মন্দ খাওয়াতে পারতি।
'গাজীপুরে ডায়রিয়ায় ৫ জনের মৃত্যু।' এই আধুনিক যুগে এসেও ডায়রিয়ায় মানুষ মরে! অথচ দেশ উন্নয়নের মহাসড়কে।
'মানিকগঞ্জে চোর সন্দেহে এক প্রতিবন্ধীকে হত্যা করা হয়েছে।' তোদের সন্দেহ হইছে, পুলিশের কাছে দিয়ে দে। আইন তোরা নিজের হাতে তুলে নিলি কেন বদমাশের দল? এই সাহস তোদের কে দিলো? তোদের মধ্যে কি মানবতা নেই?
সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০১৯ রাত ১০:৪৯