somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

রাজীব নুর
আমার নাম- রাজীব নূর খান। ভালো লাগে পড়তে- লিখতে আর বুদ্ধিমান লোকদের সাথে আড্ডা দিতে। কোনো কুসংস্কারে আমার বিশ্বাস নেই। নিজের দেশটাকে অত্যাধিক ভালোবাসি। সৎ ও পরিশ্রমী মানুষদের শ্রদ্ধা করি।

যেভাবে আমি সামুতে এলাম

১৫ ই ডিসেম্বর, ২০১৯ দুপুর ২:২২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



বহু বছর আগের কথা।
১২/১৩ বছর তো হবেই। আমার ছোট ভাইকে প্রায়ই দেখতাম সামু ওপেন করে কি যেন লিখে, পড়ে এবং হাসে। ছোট ভাই আবীর আইটি এক্সপার্ট। বর্তমানে একটা বেসরকারী প্রতিষ্ঠানে কাজ করছে। ছোট ভাই আমাকে সামু সম্পর্কে সব কিছু বুঝিয়ে বলল। ও সামুতে কম্পিউটার সংক্রান্ত পোষ্ট দিত। আমি ওর পাশে বসে টানা তিন মাস সামু দেখলাম, পড়লাম এবং বুঝতে চেষ্টা করলাম। তখন আমার লেখালেখি ডায়েরীর মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল। ছোট ভাই বলল, ডায়েরীতে লেখার দরকার নাই। দিন বদলে গেছে। আধুনিক হতে হবে। সামুতে লিখো। ব্লগাররা পড়বে, এমন কি লেখায় ভুলভাল থাকলে ব্লগাররা তা ধরিয়ে দিবে। শুধরে নেওয়ার সুযোগ আছে। ডায়রীতে লিখলে কেউ তা পড়বে না। ভুলভাল থেকেই যাবে।

ছোট ভাই সামুতে একাউন্ট খুলে দিলো।
আমি শুরু করলাম ব্লগিং। সেই ব্লগিং আজও অব্যাহাত আছে। দশ বছর হয়ে গেলো। লিখছি, পড়ছি, মন্তব্য করছি। ব্লগিং সে এক অন্য দুনিয়া। আনন্দময় দুনিয়া। এদিকে ছোট ভাই অফিসের কাজের চাপে ব্লগিং বন্ধ করে দিলো। কিন্তু আমি সমানে ব্লগিং করেই চলেছি। প্রথম প্রথম আমি একটিভ কম ছিলাম সামুতে। গত তিন বছর ধরে আমি সামুতে বেশ ভালো ভাবেই আছি। আমি জোর গলায় বলতে পারি, লাস্ট দুই-তিন বছর এমন কোনো পোষ্ট নাই আমি পড়ি নাই, মন্তব্য করি নাই। তবে প্রথম ৬/৭ বছর মন দিয়ে ব্লগিং করি নাই। আগে তো আমি, কেউ আমার পোষ্টে মন্তব্য করলেও আমি তার উত্তত দিতাম না। এই জন্যও কত কঠিন কথা যে আমাকে শুনতে হয়েছে। ব্লগের নিয়ম মেনে চললেই, ব্লগে শান্তিতে থাকা যায়।

এই সামুতে এসে আমি অনেক কিছু শিখেছি।
প্রতিদিন নানান বিষয় নিয়ে পোষ্ট আসতে থাকে। আসতেই থাকে। সেসব গুরুত্বসহকারে পড়ে যাই। সামুতে এমন দিন গেছে একটা পোষ্ট প্রথম পাতায় দশ মিনিটও থাকতো না। কেউ ভুলভাল তথ্য দিলে সিনিয়ররা তা শুধরে দিতেন। এই সামুতে দুষ্টলোকেরা কখনই সুবিধা করতে পারে নি। দিন শেষে তাদের চলে যেতে হয়েছে। বহু তথাকথিত ব্লগারকে দেখেছি ক্যাচাল লাগাতে এসে ধরাশায়ি হয়ে ফিরে গেছে। এমনও দেখেছি অন্য ব্লগ থেকে সামুতে এসে মাস্তানি করতে গিয়ে ধরা খেয়েছে। শেষে নাজেহাল হয়ে পালিয়ে গেছে। অন্য ব্লগের ব্লগারদের দেখেছি সামুতে এসে সামুর ব্লগার নিয়ে যাওয়ার জন্য চেষ্টা করতো। অনেক আড্ডাতেও আমি এটা দেখেছি। আমাকেও সামু থেকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য বলা হয়েছিল।

ফরিদপুর রাজেন্দ্র কলেজের একজন শিক্ষক।
উনি আমাকে খুব পছন্দ করেন। বিভিন্ন বিষয়ে লিখতে আমাকে দারুন উৎসাহ দিতেন। একদিন স্যার আমাকে বললেন, রবীন্দ্রনাথকে নিয়ে ১০০ পর্বের একটা ধারাবাহিক লেখা লিখো। উনি আমাকে অনেক বই পত্র দিয়েও সহযোগিতা করেছেন। আমি সামুতে রবীন্দ্রনাথকে নিয়ে ১০০ পর্বের একটা লেখা লিখলাম। পরে অবশ্য এটা বই আকারেও বের হয়েছে। এরপর স্যার বললেন, বাংলা এবং বিশ্ব সাহিত্যের একশ' সেরা বই নিয়ে লিখো। তার আগে সেই বই গুলো পড়ে নাও। সেই বই গুলো পড়লাম। আমি সামুতে বাংলা ও বিশ্ব সাহিত্যের সেরা এক'শ বই নিয়ে লিখলাম। এরপর স্যার বললেন, এক'শ সেরা মুভি নিয়ে লিখো। তাও লিখলাম এই সামুতে। পুরোনো ব্লগার যারা আছেন তারা আমার সেই সমস্ত লেখার কথা জানেন। আর নতুন ব্লগাররা সার্চ দিলেই লেখা গুলো পেয়ে যাবেন।

আজ সামু ব্লগের ১৪ তম বর্ষপূর্তি।
এটা একটা বিশাল ব্যাপার। এক যুগেরও বেশি সময়! আমাদের মতো একটা দেশে টিকে থাকা খুব মুশকিল। নিজের চোখেই দেখেছি- বহু ব্লগ এসেছে, আবার চলে গেছে। কেউ স্থায়ী হতে পারেনি। সামু এখনও ঠিকে আছে। দিনশেষে যোগ্যরাই টিকে থাকে। সামু জন্মের পর থেকে সামুর ওপর বিপদ-আপদ কম আসেনি। কিন্তু সামু সব বিপদ আপদ মোকাবেলা করে টিকে আছে। ইনশাল্লাহ টিকে থাকবে। একটা ব্লগে অনেক খরচ। সেই আলোচনায় এখন যাবো না। যাই হোক, আমি সামুর মঙ্গল কামনা করি। সামুর সমস্ত ব্লগাদের জানাই অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা। আসুন আমরা সবাই ব্লগে মিলেমিশে থাকি। কেউ কাউকে যেন খোঁচা দিয়ে কথা না বলি। একজনের প্রতি অন্যজনের শ্রদ্ধা থাকতেই হবে। সামুর জয় হোক। জয় বাংলা।
সর্বশেষ এডিট : ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০১৯ দুপুর ২:২২
৩৮টি মন্তব্য ৩৮টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আপনি কি বেদ, উপনিষদ, পুরাণ, ঋগ্বেদ এর তত্ত্ব বিশ্বাস করেন?

লিখেছেন শেরজা তপন, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৫২


ব্লগে কেন বারবার কোরআন ও ইসলামকে টেনে আনা হয়? আর এই ধর্ম বিশ্বাসকে নিয়েই তর্ক বিতর্কে জড়িয়ে পড়ে সবাই? অন্য ধর্ম কেন ব্লগে তেমন আলোচনা হয় না? আমাদের ভারত... ...বাকিটুকু পড়ুন

দুলে উঠে

লিখেছেন সাইফুলসাইফসাই, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:৫৬

দুলে উঠে
সাইফুল ইসলাম সাঈফ

মন খুশিতে দুলে দুলে ‍উঠে
যখনই শুনতে পাই ঈদ শীঘ্রই
আসছে সুখকর করতে দিন, মুহূর্ত
তা প্রায় সবাকে করে আনন্দিত!
নতুন রঙিন পোশাক আনে কিনে
তখন ঐশী বাণী সবাই শুনে।
যদি কারো মনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

তরে নিয়ে এ ভাবনা

লিখেছেন মৌন পাঠক, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১০:৩০

তরে নিয়ে এ ভাবনা,
এর শুরু ঠিক আজ না

সেই কৈশোরে পা দেয়ার দিন
যখন পুরো দুনিয়া রঙীন
দিকে দিকে ফোটে ফুল বসন্ত বিহীন
চেনা সব মানুষগুলো, হয়ে ওঠে অচিন
জীবনের আবর্তে, জীবন নবীন

তোকে দেখেছিলাম,... ...বাকিটুকু পড়ুন

আপনি কি পথখাবার খান? তাহলে এই লেখাটি আপনার জন্য

লিখেছেন মিশু মিলন, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১০:৩৪

আগে যখন মাঝে মাঝে বিকেল-সন্ধ্যায় বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দিতাম, তখন খাবার নিয়ে আমার জন্য ওরা বেশ বিড়ম্বনায় পড়ত। আমি পথখাবার খাই না। ফলে সোরওয়ার্দী উদ্যানে আড্ডা দিতে দিতে ক্ষিধে পেলে... ...বাকিটুকু পড়ুন

কষ্ট থেকে আত্মরক্ষা করতে চাই

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৯



দেহটা মনের সাথে দৌড়ে পারে না
মন উড়ে চলে যায় বহু দূর স্থানে
ক্লান্ত দেহ পড়ে থাকে বিশ্রামে
একরাশ হতাশায় মন দেহে ফিরে।

সময়ের চাকা ঘুরতে থাকে অবিরত
কি অর্জন হলো হিসাব... ...বাকিটুকু পড়ুন

×