আমাদের শাহেদ জামাল ঠিক করেছে সে আরেকটা বিয়ে করবে।
যদিও তার সুখের সংসার। ঝামেলা বিহীণ সংসার। ইদানিং শাহেদের স্ত্রী নীলা বারবার বলেছে- একটা সংসারে অনেক কাজ থাকে। সারাটা দিন নীলা'র একাএকা অনেক কাজ করতে হয়। কাজ করতে করতে নীলা শেষ। তার নখ পাতলা হয়ে গেছে। হাতের তালু খসখসে হয়ে গেছে। নীলার জন্য শাহেদের খুব মায়া হয়। আহা বেচারি! নীলার মুখের দিকে তাকিয়েই আরেকটা বিয়ের করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে শাহেদ। গ্রামের একটা দরিদ্র ঘরের মেয়ে বিয়ে করবে। বেশি লেখাপড়া না জানলেও সমস্যা নাই।
শাহেদের সংসার ছোট হলেও অনেক কাজ থাকে।
দিনের পর দিন ঘরের কাজ করতে করতে নীলা ক্লান্ত, বিধ্বস্ত। তার আর ভালো লাগে না। তাই সিদ্ধান্ত শাহেদ সিদ্ধান্ত নিয়েছে নতুন করে যে মেয়েটাকে বিয়ে করবে- সেই মেয়েটাকে দিয়ে সারাদিন ঘরের কাজ করাবে। আর নীলা সারাদিন শুয়ে বসে আরাম করবে, ঘুরে বেড়াবে। আড্ডা দিবে। গ্রামের মেয়েরা ভালো কাজ করতে পারে। তখন আর টাকা খরচ করে কাজের লোক রাখতে হবে না।
নতুন বিয়ে করা মেয়েটাকে শাহেদ বলবে, চা দাও।
সে চা দিবে। শাহদে বলবে, চায়ে চিনি বেশি হয়েছে। এক কাপ চা-ও ভালো করে বানাতে পয়ারো না! যাও আবার নতুন করে চা বানিয়ে নিয়ে আসো। দুই বালতি কাপড় আছে ধুয়ে রাখো। তার আগে ঘরটা ঝাড়ু দাও। রাতে গেস্ট আসবে রান্নার ব্যবস্থা করো। শাহেদ নীলাকে অনেক ভালোবাসে। নীলাও শাহেদকে অনেক ভালোবাসে। এখানে সন্দেহ'র কোনো অবকাশ নেই। আল্লাহ আল্লাহ করে বিয়েটা করে ফেললে আর সমস্যা নাই। নীলার শান্তি আর শান্তি।
শাহেদ নীলার আরামের কথা চিন্তা করে-
বাসায় একটা কাজের লোক ঠিক করে দিয়েছে। কাজের লোক কাপড় ধোয়, ঘর মোছে, হারি পাতিল ধোয় এমনকি রান্নার জন্য মাছ বা সবজিও কেটে দেয়। নীলার কাজ শুধু রান্না করে। এমনকি যেদিন কাজের লোক আসে না, সেদিন শাহেদ নীলাকে ঘরের কাজে সহযোগিতা করে। তারপরও নীলার একই গান কাজ করতে-করতে নীলা শেষ। প্রতিদিনই একই ঘ্যান ঘ্যান। শাহেদ রাতে বাসায় ফিরলে নীলা বলবে, আমি কাজ করতে করতে শেষ। আমার হাত পা ব্যথা করছে। এত কাজ। সারাটা দিন আমাকে কাজ করতে হয়। শাহেদের সহ্যের বাধ ভেঙ্গে গেছে।
তাই শাহেদ স্পষ্ট করে বলে দিয়েছে-
নীলা আমি তোমাকে অনেক ভালোবাসি। তোমার কষ্ট দেখে আমার ভীষন খারাপ লাগে। তোমার কথা ভেবেই আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমি আরেকটা বিয়ে করবো। সেই বউকে দিয়ে ঘরের সমস্ত কাজ করাবো। তুমি শুধু আরাম করবে। আর আমি মাঝে মাঝে মেয়েটার সাথে রাতে থাকব। খরচ কিছুটা বাড়বে। তাতে কি? শাড়ি কিনলে দু'টা কিনতে হবে। মেয়েটাকে নিয়ে মাঝে মাঝে ঘুরে বেড়াবো। মেয়েটার কোলে মাথা রেখে গল্প করবো। হাজার হোক মেয়েটা তো আমার বিয়ে করা বউ। বিয়ের পর যদি এই মেয়েটাও বলে কাজ করতে করতে আমি শেষ তাহলে, এই মেয়েটার শান্তির জন্য আরেকটা বিয়ে করবো।
সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে জানুয়ারি, ২০২০ দুপুর ২:১১