somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

রাজীব নুর
আমার নাম- রাজীব নূর খান। ভালো লাগে পড়তে- লিখতে আর বুদ্ধিমান লোকদের সাথে আড্ডা দিতে। কোনো কুসংস্কারে আমার বিশ্বাস নেই। নিজের দেশটাকে অত্যাধিক ভালোবাসি। সৎ ও পরিশ্রমী মানুষদের শ্রদ্ধা করি।

আজকের ডায়েরী- ৪৪

১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২০ রাত ১১:২৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



আজ বাসায় চার দিন ধরে আমি একা।
সুরভি গিয়েছে তার বাবার বাড়ি। ইতালি থেকে সুরভির বোন এসেছে। সে খুব খুশি। দুই জমজ বোন সারাদিন ঘুরে বেড়াচ্ছে। বান্ধবীদের বাসায় যাচ্ছে, শপিং করছে, বইমেলায় যাচ্ছে, দুপুরে এবং রাতে তারা বাইরে খাচ্ছে। আমি ফেসবুকে সুরভির ছবি দেখি। লাইক দেই। সুরভি আমাকে যেতে বলেছে। আমি বলেছি আমি বিশেষ ব্যস্ত আছি। সে গাল ফুলিয়ে আছে। আমি গিয়ে তাকে না আনলে সে বাসায় ফিরবে না। এদিকে আমি একা বেশ ভালোই আছি। মুভি দেখছি, বই পড়ছি, লিখছি। ভোরে পার্কে বেড়াতে যাচ্ছি। জীবনটা বেশ আনন্দময় মনে হয়। বেশ উপভোগ্য।

সমস্যা হলো আমি রাতে ভয় পাই।
আমি একা থাকতে পারি না। ছোটবেলা মার কাছে ঘুমাতাম। ছোটবেলা কি(?) বিয়ে করার আগ পর্যন্ত মার সাথেই ঘুমাতাম। ঘুমের মধ্যেও একটা হাত মায়ের গায়ে দিয়ে রাখতাম। কোনো ভয়ডর কিছুই করতো না। এখন আমি থাকি ছয় তলায়। মা থাকে নিচ তলায়। এখন তো আমি মাকে গিয়ে বলতে পারি না- মা আমি ভয় পাই। তোমার কাছে থাকবো। মুভি দেখে ঘুমাতে যাই রাত তিনটায়। বিছানায় যাওয়া মাত্র ভয় হতে শুরু করে। মনে হয় ঘরে আমি ছাড়া অন্য কেউ আছে। সে হাঁটে, তার নিঃশ্বাসের শব্দ পর্যন্ত শুনতে পাই। মনে হয় আমি ঘুমালে সে আমাকে গলা টিপে আমাকে মেরে ফেলবে।

রাতে তীব্র ভয় আমাকে গ্রাস করে।
ভয়ের চোটেই কম্বল দিয়ে চোখমুখ ঢেকে ঘুমিয়ে যাই। গভীর ঘুম। ঘুমিয়েও শান্তি নাই। অদ্ভুত সব স্বপ্ন দেখি। স্বপ্নে দেখি মরুভূমিতে আমি পথ হারিয়ে ফেলেছি। চারিদিকে ধু ধু মরুভূমি। আশে পাশে কেউ নেই। আমি একা। হাঁটছি তো হাঁটছি'ই। পথ আর শেষ হয় না। তৃষ্ণায় গলা বুক শুকিয়ে গেছে। কোথাও পানি নেই। গতকাল স্বপ্ন দেখলাম- অচেনা অজানা শহরের পথে আমি হাঁটছি। আমার পেছনে অদ্ভুত চেহারার সব লোকজন আসছে। আমি থামলে তারাও থামে। তাদের দেখে আমি ভয় পেয়ে দৌড় দেই। তারাও তখন দৌড় দেয়। তাদের হাতে রাম দা। দা'য়ে তাজা রক্ত লেগে আছে। দৌড়াতে দৌড়াতে আমি ক্লান্ত। বিধ্বস্ত।

কাল রমনা পার্কে গেলাম।
কি মনে করে বাচ্চাদের দোলনায় বসলাম। বেশ কিছুক্ষন দুললাম। খুব ভালো লাগলো। কিন্তু বেশিক্ষন বসতে পারি নি। পার্কের লোক এসে আমার সামনে ফুঁ দিয়ে বাশি বাজালো। বাশি বাজিয়ে বুঝিয়ে দিলো এই দোলনা তোমার জন্য না। শিশুদের জন্য। তুমি বড় হয়ে গেছো। ইচ্ছা হলো গার্ডকে বলি, ভাই প্লীজ আর দশ মিনিট বসতে দেন। দোলনায় বসার সাথে সাথে আমার ছোটবেলা ফিরে এসেছে। ছোটবেলা মা আমাকে নিয়ে যেত রমনা পার্কে। মা একটা বিশাল গাছের নিচে বসে থাকতো। আমি ইচ্ছা মতোন দৌড়ঝাপ দিতাম। দোলনা ছিলো আমার ভীষন প্রিয়। আমি দোলনায় বসতাম, মা পেছন থেকে ধাক্কা দিতো। সন্ধ্যা হয়ে গেলেও আমি বাসায় ফিরতে চাইতাম না।

সুরভি বাসায় নেই, তাই সকালে হোটেলে নাস্তা খাই।
আমি যে হোটেলে নাস্তা খাই। সেই হোটেলের ওয়েটার গুলো আমাকে দেখলে ভীষন খুশি হয়। একজন বলে আমার এখানে বসেন, আরেকজন বলে আমার এখানে বসেন। খুব খাতির যত্ন করে আমাকে খাওয়ায়। আমি তাদের প্রত্যককে দশ টাকা করে দেই। যে আমাকে না খাওয়ায় তাকেও দশ টাকা দেই। যে ছেলেটা পানি দেয় বা যে ছেলেটা সালাত বানিয়ে দেয় তাদেরও দশ টাকা করে দেই। মাত্র চল্লিশ টাকায় ওরা এত খুশি কেন হয় আমি বুঝি না। সামান্য চল্লিশ টাকায় আজকের দিনে কি হয়! যাই হোক, মা ফোন করে বলল, সারাদিন কই থাকিস? কি করিস? দুপুরে বাসায় খাবি। আজ আমি রান্না করেছি।
সর্বশেষ এডিট : ১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২০ রাত ১১:২৮
৪টি মন্তব্য ৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে মুক্তিযোদ্ধাদের মুমিনী চেহারা ও পোশাক দেখে শান্তি পেলাম

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৭ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৯:৫৮



স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে স্টেজে উঠেছেন বত্রিশ মুক্তিযোদ্ধা তাঁদের চব্বিশ জনের দাঁড়ি, টুপি ও পাজামা-পাঞ্জাবী ছিলো। এমন দৃশ্য দেখে আত্মায় খুব শান্তি পেলাম। মনে হলো আমাদের মুক্তিযোদ্ধা আমাদের মুমিনদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

দু'টো মানচিত্র এঁকে, দু'টো দেশের মাঝে বিঁধে আছে অনুভূতিগুলোর ব্যবচ্ছেদ

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১২:৩৪


মিস ইউনিভার্স একটি আন্তর্জাতিক সুন্দরী প্রতিযোগিতার নাম। এই প্রতিযোগিতায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সুন্দরীরা অংশগ্রহণ করলেও কখনোই সৌদি কোন নারী অংশ গ্রহন করেন নি। তবে এবার রেকর্ড ভঙ্গ করলেন সৌদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের দুই টাকার জ্ঞানী বনাম তিনশো মিলিয়নের জ্ঞানী!

লিখেছেন সাহাদাত উদরাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ২:৫৯

বিশ্বের নামীদামী অমুসলিমদের মুসলিম হয়ে যাওয়াটা আমার কাছে তেমন কোন বিষয় মনে হত না বা বলা চলে এদের নিয়ে আমার কোন আগ্রহ ছিল না। কিন্তু আজ অষ্ট্রেলিয়ার বিখ্যাত ডিজাইনার মিঃ... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমি হাসান মাহবুবের তাতিন নই।

লিখেছেন ৎৎৎঘূৎৎ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



ছোটবেলা পদার্থবিজ্ঞান বইয়ের ভেতরে করে রাত জেগে তিন গোয়েন্দা পড়তাম। মামনি ভাবতেন ছেলেটা আড়াইটা পর্যন্ত পড়ছে ইদানীং। এতো দিনে পড়ায় মনযোগ এসেছে তাহলে। যেদিন আমি তার থেকে টাকা নিয়ে একটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×