সহজ সরল সত্য কথা হলো-
পৃথিবীর কোনো ধর্ম এবং ধর্ম গ্রন্থ গুলো করোনা থেকে বাচাতে পারবে না মানুষকে। এই সহজ সত্য মানুষকে বুঝতে হবে। মানতে হবে। যদি সত্যিই ধর্ম আর ধর্ম গ্রন্থ গুলো মানুষকে বাঁচাতে পারতো তাহলে এত লোক মারা যেত না। সবাই ধর্ম আর ধর্ম গ্রন্থ গুলো আকড়ে বসে থাকতো। যারা করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন তারা কি মৃত্যুর আগে মহান প্রভুর কাছে করুনা চায় নি? অবশ্যই চেয়েছেন। অদৃশ্য প্রভু তাদের করুনা করেন নি। করার কথাও না। এখন দুনিয়ার সব মানুষ চেয়ে আছে বিজ্ঞানের দিকে। আধুনিক এবং শিক্ষিত মানুষ বুঝে গেছে ধর্ম বা ধর্ম গ্রন্থ তাদের বাঁচাতে পারবে না। তাদের বাঁচাতে পারবে শুধু মাত্র বিজ্ঞান। মধু বা কালো জিরা দিয়ে হাত ধুলে হাতের জীবানু যাবে না। আপনাকে জীবানু ধ্বংস করতে হলে সাবান দিয়েই হাত ওয়াশ করতে হবে।
জীবনের গল্প শিরোনামে আমি সাধারণত মানুষের জীবনের সত্য গল্প গুলি লিখি।
কিন্তু আজ দেশের পরিস্থিতি বদলে গেছে। মাথার উপরে যে বিপদ দাঁড়িয়ে আছে, সেই বিপদ টপকে জীবনের গল্প গুলোর চেয়ে বড় হয়ে দাঁড়িয়েছে বাঁচার লড়াই। যাই হোক, দেশে তো নেতার অভাব নেই। আজ জাতির এই করুন পরিস্তিতে তারা কোথায়? তাদের কোনো সাড়া পাওয়া যাচ্ছে না কেন? তাদের দেখা যাচ্ছে না কেন? এখন তারা গর্তে লুকিয়ে আছে কেন? কেন সাধারণ মানুষের পাশে এসে দাড়াচ্ছেন না? কেন খোঁজ নিচ্ছেন না তারা খেয়ে পড়ে বেঁচে আছে কিনা? তাদের নেতাগিরি কি ফুরায়ে গেল? যারা ভবিষ্যৎ নেতা, এমপি, মন্ত্রী হওয়ার জন্য নিজ নিজ অঞ্চলে নানান রঙ ঢং করেছেন- আজ তারা চুপ কেন? একজনকেও তো দেখলাম না- কাউকে সাবান, মাস্ক বা চাল-ডাল দিয়ে সহযোগিতা করেতে? গর্ত থেকে বের হোন নেতা, প্লীজ।
নানান রকম পোস্টার ব্যানার করেছেন।
তাতে বঙ্গবন্ধু, আর শেখ হাসিনার ছবি দিয়েছেন- নিজের ছবিও বড় করে দিয়েছেন। নানান দিবসে দেশবাসীকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। এখন দেশবাসীর এই করুন মুহুর্তে আপনাদের দেখা যাচ্ছে না কেন? ওহে দূর্নীতিবাজ? ওহে নব্য ধনী? যাই হোক, এদিকে দেশের মানুষ খুব বেশি অস্থির হয়ে পরেছে 'করোনা' নিয়ে। তারা ভাবছে গ্রামে গেলেই বুঝি বাঁচা যাবে। গ্রামে গিয়েও বাচা যাবে না, যদি সচেতন না হোন। নির্বোধ বাঙ্গালীরা গুজব বেশি বিশ্বাস করে। আর একদল বদমাইশ নারী পুরুষ আছেন যাচাই বাছাই না করেই দায়িত্ব মনে করে গুজব ছড়ায়। এবং গাধার বাচ্চারা সেই সমস্ত গুজব বিশ্বাস করে। 'করোনা' থেকে বেশি মারাত্মক হলো গুজব। সত্য কথা কেউ বিশ্বাস করে না কিন্তু গুজব বিশ্বাস করে অতি সহজেই। যারা গুজব বিশ্বাস করে এবং গুজব ছড়ায় এদের জুতা পিটা করা দরকার। গুজবের আড্ডাখানা হলো ফেসবুক। বহু মহিলা সারাদিন বাসায় বসে ফেসবুকে নানান রকম পেজ খুলেছে, সেই পেজ গুলোতে তারা সারাদিন গুজব ছড়ায়। অথচ তারা মনে করে তারা মানুষকে সচেতন করছে। মহৎ কাজ করছে।
গুজব বা বিদ্বেষ নয়- মানুষের উচিত আন্তরিক ভালোবাসা চারিদিকে ছড়িয়ে দেওয়া। একজন মানুষের প্রতি অন্য একজন মানুষের ভালোবাসা দেখতেও ভালো লাগে। দুইদিন আগে যারা প্রশ্ন তুলেছিলো, প্রবাসীরা বিদেশ থেকে দেশে কেন আসছে? তাদের প্রতি একটা প্রশ্ন, তোমরা এখন গ্রামের বাড়ি যাও কেন? এখন দেশে যে সমস্যা- এটা সমস্ত দেশের মানুষ এক হয়ে মোকাবেলা করতে হবে। সম্ভব হলে যাকাত দিয়ে দিন এখনই। বছরের যে কোনো সময় যাকাত দেওয়া যায়। রমজানে দেওয়া হয় এই জন্য যে, সে সময় আদায় করলে সওয়াব ও বরকত বহুগুণ বৃদ্ধি হয়। আপনার সম্পদের ওপর যাকাত ফরয হলে, হিসেবে করে আদায় করে ফেলুন। এতে কিছু অসামর্থ্যবান মানুষের বড় ধরণের উপকার হবে। দুর্যোগকালীন সময়ে এমপি, মেয়র, মন্ত্রীদের কাজ কি? নব্য ধনী এবং দূর্নীতিবাজরা এতদিন যে টাকাপয়সা চুরিচামারি করছে, এখন সময় হয়েছে গরিবদের বিলিয়ে দেবার! কথা ঠিক কিনা বলেন?
আসুন, আমরা রাষ্ট্রীয় নীতিমালা গুলো মেনে চলি।
সক্রেটিস বিষপানে মৃত্যুর আগে বলছিলেন, আমি মরে যাচ্ছি, আপনারা থাকছেন; আমি জানি না এদুটোর মধ্যে কোনটি উত্তম। আবারও বলি- যেসব দুর্নীতিবাজ ঠিকাদার, ব্যবসায়ী, রাজনীতিক, ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার... কোটি কোটি টাকার মালিক, তাদের আদেশ দেন, খেটে খাওয়া সাধারণ মানুষদের জন্য বিশেষ অনুদান দিয়ে 'সাধারণ মানুষের জন্য জরুরি তহবিল' গঠন করতে। এদের অবৈধ সম্পদ দেশ বিদেশে কম পাচার হয় নি! এদের শরীরে তেল কম জমে নি সাধারণ মানুষকে ঠকিয়ে, রাষ্ট্র ও জনগণের সম্পদ লুটপাট করে। লুটপাটের হাজার হাজার কোটি টাকা। এদের সম্পদের পাহাড় ছেঁটে এখনি জরুরি তহবিল গঠন করেন। কোনো অসহায় গরিব মানুষ যেন লকড ডাউনের সময় না খেয়ে না থাকে।
সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে মার্চ, ২০২০ রাত ১০:১৫