এক কৃষকের সখ বিভিন্ন জাতের ঘোড়া সংগ্রহ করার।
তার সংগ্রহ সম্পূর্ণ করতে এখন শুধু এক ধরনের ঘোড়ার প্রয়োজন, যেটা তার প্রতিবেশীর কাছেই রয়েছে। কিন্তু প্রতিবেশী সেটা বিক্রয় করতে ইচ্ছুক নয়। তারপরও সে প্রতিদিন প্রতিবেশীকে বিরক্ত করেই যাচ্ছে ঘোড়াটা বিক্রি করার জন্য।
শেষ পর্যন্ত সে তার প্রতিবেশীকে রাজী করাতে সক্ষম হয় কিন্তু তার এই আনন্দও বেশী দিন সইলো না। এর একমাস পরেই ঘোড়াটি অসুস্থ হয়ে পড়ল। পশু ডাক্তার এসে ঘোড়াটিকে দেখে বলল- এটি একটি মারাত্মক ক্ষতিকর ভাইরাসে আক্রান্ত। সে কিছু ওষুধ লিখে দিয়ে বলল, এগুলো তিন দিন ধরে খাওয়াতে হবে। এর মধ্যে সুস্থ না হলে তিন দিন পরে ঘোড়াটিকে মেরে ফেলতে হবে।
ডাক্তারের কথা গুলো গোপনে একটি ভেড়া মনোযোগ দিয়ে শুনছিল।
ভেড়াটি অসুস্থ ঘোড়াটির বন্ধু ছিলো। তারা সারাদিন প্রায় একঙ্গেই থাকতো। যাই হোক, কিছুক্ষন পরে কৃষক এসে ঘোড়াটিকে ওষুধ খাইয়ে আবার নিজের কাজে গেল। তখন ভেড়াটি এসে ঘোড়াটিকে বলল, শক্ত হও বন্ধু, তোমাকে সুস্থ হতেই হবে, না হলে ওরা তোমাকে মেরে ফেলবে। প্লীজ। চেষ্টা করো।
দ্বিতীয় দিনেও কৃষক ঘোড়াটিকে ওষুধ খাইয়ে যাওয়ার পর ভেড়াটা ঘোড়াটিকে বলল, ওঠো বন্ধু, তোমাকে কষ্ট করে হলেও হাঁটতে হবে, আসো আমি তোমাকে সাহায্য করছি। তা না হলে তোমাকে মেরে ফেলবে।
তৃতীয় দিন কৃষক এর সাথে সেই পশু ডাক্তার আসলো। ওষুধ খাওয়ানোর পরে ডাক্তার বলতে লাগলো, নাহ আর কিছু করার নেই, কালকে ঘোড়াটিকে মেরে ফেলতে হবে, নাহলে তোমার অন্য ঘোড়াগুলোও সংক্রমিত হতে পারে, কোন সুযোগ নেয়া ঠিক হবে না। কৃষক নিরুপায় হয়ে তাতে সায় দিল।
এবার তারা চলে যাওয়ার পর ভেড়াটি এসে ঘোড়াটিকে বলল, আজকেই শেষ সুযোগ বন্ধু, উঠে দাঁড়াও, তোমাকে পারতেই হবে, দৌড়াতে হবে, এইতো এইতো হচ্ছে, তুমি পেরেছ, আর একটু, চমৎকার, তুমি পারবেই। গ্রেট।
অবশেষে ঘোড়াটি দৌড়াতে শুরু করলো। এমন সময় হঠাৎ কৃষক চলে এসে দেখতে পেল ঘোড়াটি দৌড়ুচ্ছে, সে আনন্দে আত্মহারা হয়ে বলতে লাগলো, 'অবিশ্বাস্য! আমার ঘোড়া সুস্থ হয়ে গেছে, কোথায় সবাই, এই আনন্দে আজকে পার্টি হবে, এই কে আছিস, ভেড়াটাকে জবাই কর।
গল্পের শিক্ষাঃ আমাদের সমাজেও এরকম হচ্ছে প্রতিনিয়ত, কর্মক্ষেত্রে হোক আর দৈনন্দিন জীবনে হোক। কিছু মানুষ কখনই জানতে পারে না প্রকৃত সাফল্যের পেছনে আসলে কারা থাকে, কারা পুরস্কৃত হয়, আর কারা অন্যের মঙ্গলে নিজেদের উৎসর্গ করে দেয়।
সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে জুন, ২০২০ রাত ৯:১৮