ইসলাম ধর্ম অবমাননার অভিযোগে বাংলাদেশের লালমনিরহাটের শহীদুন্নবী জুয়েল নামের এক নিরিহ ব্যক্তিকে দেশের অত্যুগ্র মর্দে মুজাহিদ, জঙ্গি মুসলমানরা তাকে নির্মমভাবে পিটিয়ে, মেরেকেটেই শুধু ক্ষান্ত হয়নি; পরে তার লাশকে পুড়িয়ে ছাই করে দিয়েছে! উল্লেখ্য যে, শহীদুন্নবী জুয়েল স্থানীয় কোনো এক স্কুল এন্ড কলেজর লাইব্রেরিয়ান ছিলেন।
তোমরা যারা পাকিস্তান-আফগানিস্তানকে ঘৃণা করো, তাদের উদ্দেশ্য বলি ... একবার আয়নায় অন্তত নিজের মুখটি দেখো। ভালোভাবে নিজের অবয়বটি দেখে নাও রে হিপোক্রেটস শুয়োরের বাচ্চারা!
১। এই দানবের সামনে শেখ হাসিনার বেল আছে?!! আপনার কি মনে হয় সিকিউরিটি না থাকলে এরা পৃথিবীর যে কোন ব্যক্তিকে এভাবে ধ্বংস করে দিতে এক সেকেন্ডও লাগবে না এটাই তাদের আনন্দ। নির্বোধ জম্বি মানসিকতার এই ভয়ানক শয়তানগুলোকে রুখে না দিলে কারো নিস্তার নাই!
২। লালমনিরহাটে লোকটাকে যখন পিটিয়ে মারা হলো তখন স্লোগান চলছিল, 'আল কোরআনের আলো ঘরে ঘরে জ্বাল'। পরে গায়ে আগুন দেয়া হয়।
(এই লোক গুলো যদি বেহেশতে যায় তাহলে সেখানকার অবস্থাটা একবার চিন্তা করেন?)
৩। ধর্মোন্মাদনার ফল একদিন সবাই টের পাবেন। নমুনা হিসাবে পেয়ারা পাকিস্তানের পরিনতি সামনেই আছে। এসব কথা বললেই অনেকে চেতে যান। মনে করে ইসলাম নিয়ে চুলকানি আছে। এরা সহীস মুসলমান নয় বলে পার পাওয়া যাবে না।
৪। ফ্রান্সের শিক্ষক হত্যার প্রতিবাদ না করে ফ্রান্সকে বয়কট করার যে আন্দোলন আপনারা করেছেন, চল্লিশ হাজার মুসল্লিদের নিয়ে যে মিছিল আপনারা করেছেন তারই রিএকশন এটা।
৫। আমরা ধর্ম রক্ষার নামে উগ্র হচ্ছি, হচ্ছি বেপরোয়া, হচ্ছি ক্ষেপাটে, হচ্ছি অসহনশীল, হচ্ছি কট্টর। অথচ ধর্ম নম্রতার কথা বলে, সহনশীলতার কথা বলে, বলে উদারতার কথা। কট্টর, ক্ষেপাটে, উগ্ররা যতদিন নিজেদের ধর্ম রক্ষার সৈনিক ভেবে আসবে ততদিন ধর্ম নিজেও অপমানিত হবে।
৬। ঘটনাটি অমানবিক এবং বিভৎস। পিঁপড়াকেও পুড়িয়ে মারা নিষেধ করা হয়েছিল। কোনো প্রাণীকেউ পুড়িয়ে মারার অনুমতি নাই।
৭। পিটিয়ে মারার পরে আগুনে পোড়ানো হচ্ছে, শেষ বারের মত তিনি হয়তো তার হাত বাড়িয়ে ছিলেন এই আশায় যদি কেউ এগিয়ে আসে, পিটিয়ে মারর লোকের অভাব হয় নাই, পুড়ানোর জন্য লোকের অভাব হয় নাই যারা এই কাজটা করেছে তারা সবাই কিন্তু সবাই ধার্মিক ছিল, তবে মানুষ ছিল না? সহে সহে এই পর্যন্ত চলে এসেছে... এদের থামাতে না পারলে পুরো দেশই এক সময় জ্বলে পুড়ে শেষ হয়ে যাবে।
৮। পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়া এই লোকেরও কোরান অবমাননার দায়ে নির্মম ভাবে মরতে হলো। আমার ধর্ম ইসলাম আসলেই শান্তির এবং শ্রেষ্ঠ।- অস্বীকার করার হিম্মত নাই।
৯। শত শত মানুষ যেখানে একজন মানুষকে পিটিয়ে মেরে ফেলার পর লাশ আগুন দিয়ে পুড়িয়ে ফেলেছে, সেখানে গিয়ে খোঁজ নিয়ে দেখুন, এই ঘটনায় কেউ ব্যথিত, বিস্মিত, ক্ষুব্ধ হয়েছে কি না।
১০। কোরান অবমাননার ধুঁয়ো তুলে একজন মানুষকে জীবন্ত পিটিয়ে মেরে ফেলে আগুনে পুড়িয়েছে ধর্মোন্মাদরা। রাসুলকে ভালোবেসে ফেইসবুক চ্যালেঞ্জ জানানো একজন মুসলমানকেও, ফ্রান্স বয়কট করার দাবীতে মিছিল করা লক্ষ লক্ষ ধর্মজীবি হুজুরদের একজনকেও এই বর্বরতম ঘটনার প্রতিবাদ করতে দেখিনি।
হায় মুসলমান!! হায় মুসলমানের দেশ!!!!! তোমাদের ধর্ম এ-ই!
১১। আল্লাহ্ র নাম নিয়ে একটা জ্যান্ত মানুষ পু্ড়িয়ে মারাও কত চমৎকার বৈধতা পায় সমাজে! হায় রে এ সমাজ, হায় রে ধর্ম, হায় অামার দেশের মানুষ! কিচ্ছু ভাবতে পারছি না! কেউ দয়া করে বুদ্ধিজীবিতা ফলিয়ে জ্ঞান দেবেন না প্লিজ!
১২। তারা কোরআন অবমাননা করেছে এর কোনো প্রমাণ আছে? আর অবমাননা করলেই যে তাদের পুড়িয়ে মারতে হবে এর দায়িত্ব আপনাদের কে দিয়েছে? বিচারের জন্য রাষ্ট্র আছে, আইন আছে। এমন কাজ করে আপনারা মূলত ইসলামের উপকার করেননি, উল্টো ক্ষতি করেছেন।
সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে অক্টোবর, ২০২০ দুপুর ১২:৪১