সূরা আল আনআম কুরআনের ৬ নম্বর সূরা।
এর আয়াত সংখ্যা ১৬৫টি এবং এর রূকুর সংখ্যা ২০টি। এই সূরাটি মক্কায় অবতীর্ণ হয়। এই সূরাতে আল্লাহর একত্ববাদ, পূণরুত্থান, জান্নাত এবং জাহান্নাম সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে। হযরত মুয়াজ ইবনে জাবালের চাচাত বোন হযরত আসমা বিনতে ইয়াযিদ বলেন, আল্লাহর রাসূল উটনীর পিঠে সওয়ার থাকা অবস্থায় এ সূরাটি নাযিল হতে থাকে। যে রাতে এ সূরাটি নাযিল হয় সে রাতেই আল্লাহর রসূল এটিকে লিপিবদ্ধ করান।
এ সূরার ১৬ ও ১৭ রুকূতে কোন কোন আন’আমের (গৃহপালিত পশু) হারাম হওয়া এবং কোন কোনটির হালাল হওয়া সম্পর্কিত আরববাসীদের কাল্পনিক ও কুসংস্কারমূলক ধারণা বিশ্বাসকে খণ্ডন করা হয়েছে। এ প্রেক্ষিতে এ সূরাকে আল আন’আম নামকরণ করা হয়েছে। সুরা আনআম-আয়াত ৪২ নং এ বলা হয়েছে- তারপর আমি তাদের উপর রোগব্যাধি, অভাব, দারিদ্র্য, ক্ষুধা চাপিয়ে দিয়ে ছিলাম, যেন তারা আমার কাছে নম্রতাসহ নতি স্বীকার করে। সূরা আনআম বাংলা অর্থসহ পড়তে চাইলে- সূরা আনআম।
আল্লাহর রসূল যখন মানুষকে ইসলামের দিকে দেওয়াত দেবার কাজ শুরু করেছিলেন। তারপর থেকে বারোটি বছর অতীত হয়ে গিয়েছিল। কুরাইশদের প্রতিবন্ধকতা, জুলুম ও নির্যাতন চরমে পৌঁছে গিয়েছিল। ইসলাম গ্রহণকারীদের একটি অংশ তাদের অত্যাচার নিপীড়নে অতিষ্ঠ হয়ে দেশ ত্যাগ করেছিল। তারা হাবশায় (ইথিওপিয়া) অবস্থান করছিল। নবী (স.) সাহায্য-সমর্থন করার জন্য আবু তালিব বা হযরত খাদীজা (রা) কেউই বেঁচে ছিলেন না। ফলে সব রকমের পার্থিব সাহায্য থেকে বঞ্চিত হয়ে তিনি কঠোর প্রতিবন্ধকতার মধ্য দিয়ে ইসলাম প্রচার ও রিসালতের দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছিলেন। তাঁর ইসলাম প্রচারের প্রভাবে মক্কায় ও চারপাশের গোত্রীয় উপজাতিদের মধ্য থেকে সৎ লোকেরা একের পর এক ইসলাম গ্রহণ করে চলছিলো।
১। আল্লাহ পৃথিবীতে কাউকে কম ও কাউকে বেশি সম্পদ দিয়েছেন। এটা মানুষের জন্য হীনতা বা মর্যাদার বা একে-অপরের ওপর শ্রেষ্ঠত্বের মাধ্যম নয়, বরং এসবই পরীক্ষার মাধ্যম।
২। এ ধরনের পরীক্ষায় ফেল করা মানুষকে দ্রুত শাস্তি দেবেন আল্লাহ। আর পরীক্ষায় উত্তীর্ণ বান্দাদের প্রতি আল্লাহ করুণাময় ও ক্ষমাশীল।
৩। আমাদের যা কিছু আছে তা আল্লাহরই সম্পদ। একথা মনে রাখলে আল্লাহর পথে তাঁরই দেয়া সম্পদ দান করা সহজ হবে।
সূরা আনআম'ই একমাত্র এমন একটি সূরা যা আদ্যপান্ত এক সাথে একই সময়ে নাযিল হয়। এটি রাতের বেলা নাযিল হয়। কয়েকজন কুরাইশ নেতা রাসূলুল্লাহ (স.)-এর নিকট দিয়ে যাচ্ছিল। তাঁর নিকটে তখন ছুহাইব, আম্মার, বেলাল, খাববাব প্রমুখ হতদরিদ্র মুসলমানগণ উপবিষ্ট ছিলেন। তখন তারা বলল, হে মুুহাম্মাদ! আপনি আপনার কওমকে ফেলে কিভাবে এদের নিয়ে সন্তুষ্ট আছেন? আমাদের মধ্য হতে কি আল্লাহ তা‘আলা কেবল এদেরই অনুগৃহীত করেছেন, আমরা কি এদের তল্পিবাহক হবো? আপনি এদের তাড়িয়ে দিন, আপনার নিকটে এদের বসতে দিবেন না। তাহ‘লে হয়ত আমরা আপনাকে অনুসরণ করতে পারি। তখন আল্লাহ উক্ত সূরার ৫২ নং আয়াত নাযিল করেন।
আগের পোষ্ট গুলোঃ
১। সূরা আল ফাতিহা
২। সূরা বাকারা
৩। সূরা আল ইমরান
৪। সূরা আন নিসা
৫। সূরা মায়েদা
সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে ডিসেম্বর, ২০২০ দুপুর ২:৪১