নাস্তিকরা সব ধর্মের বিরুদ্ধেই বলে।
যেমন: ভারতের নাস্তিকরা হিন্দু ধর্মের, ইউরোপের নাস্তিকরা খ্রিস্টান ধর্মের এবং ইসরায়েলের নাস্তিকরা ইহুদি ধর্মের বিরুদ্ধেই বেশি বলে, অর্থাৎ নাস্তিকরা সর্বদা স্থানভেদে ক্ষমতাসীন বা সংখ্যাগরিষ্ঠ ধর্মের বিরুদ্ধে বলে। রোমান দার্শনিক সেনেকা বলেছেন, ধর্ম সাধারণ মানুষের কাছে সত্য, বুদ্ধিমানের কাছে মিথ্যা, আর শাসকের কাছে অস্ত্র। খুবই সুন্দর কথা বলেছেন। একজন মুমিন বললেন: একটি মোবাইলের সৃষ্টিকর্তা থাকলে মানুষের কেন সৃষ্টিকর্তা থাকবে না? নাস্তিক বললেন: মানুষের সৃষ্টিকর্তা থাকলে আল্লাহর কেন সৃষ্টিকর্তা থাকবে না? মুমিন: সৃষ্টিকর্তার সৃষ্টিকর্তা থাকে না। নাস্তিক: তাহলে মানুষেরও সৃষ্টিকর্তা নেই। কারণ মানুষ নিজেও সৃষ্টিকর্তা। তসলিমা নাসরিন বলেছেন, ধর্মও থাকবে, নারী স্বাধীনতাও থাকবে, এমনটি যারা ভাবে তারা হয় ধর্ম কী তা জানে না, অথবা নারী স্বাধীনতার মানে জানে না।
বার্ট্রান্ড রাসেল বলেছেন,
''ধর্ম দাঁড়িয়ে আছে মূলত ভয়ের উপর, রহস্যময়ের ভয়, পরাজয়ের ভয়, মৃত্যুর ভয়। ভয় নিষ্ঠুরতার উৎস। কাজেই এতে অবাক হওয়ার কিছু নেই যে নিষ্ঠুরতা আর হাত ধরাধরি করে চলছে। ধর্মকে আমি ভয় থেকে উৎসারিত একটি ব্যাধি আর মানবজাতির অবর্ণনীয় দুঃখ- দুর্দশার উৎস বলে মনে করি''। একজন বিশ্বাসীকে তার ধর্ম নিয়ে প্রশ্ন করলেই সে রেগে যায় এবং ধর্মের নামে রক্তপাত করতে উদ্যত হয়। কারণ তার অবচেতন মন জানে যে তাদের ধর্ম শিশুদের ঘুম পাড়ানোর গল্প ছাড়া কিছুই নয়। ধর্মগুলি আমাদেরকে আমাদের চারপাশের সবকিছু সম্পর্কে কোন প্রশ্ন না করে বরং কিছু উদ্ভট রূপকথা দিয়ে ভুলিয়ে রাখতে চায়।
ব্লগার ওয়াশিকুর বাবু বলেছিলেন,
ধর্মানুভূতি দিয়ে চাষাবাদ হয় না, উৎপাদন হয় না, শিক্ষা হয় না, গবেষনা হয় না, শিল্প-সাহিত্য হয় না। ধর্মানুভূতি দিয়ে সাম্প্রদায়িকতা হয়, দাঙ্গা হয়, লুটপাট হয়, ধর্ষন হয়, নোংরা রাজনীতি হয়। একদম বাস্তব কথা বলেছেন। Messiah Complex নামে একটি মানসিক রোগ আছে। এ রোগে ভোগা ব্যক্তি মনে করে, তাকে পৃথিবীতে পাঠানো হয়েছে স্পেশাল একটা মিশন নিয়ে। আর সেই মিশন হল, পৃথিবী থেকে সব মন্দ দূর করে মানুষকে রক্ষা করা। বাঙলা সিনেমার পুলিশের শেষ দৃশ্যের ডায়লগের মত, মেসিয়া কমপ্লেক্সের রোগীরা সব সময় আইন নিজের হাতে তুলে নিতে চায়। অন্য কর্তৃপক্ষের উপরে সে ভরসা করেনা।
চীনের ৯০ ভাগ মানুষই ধর্মহীন।
তারা মনে করে, ধর্ম মানুষকে লোভ দেখিয়ে ভাল কাজ করাতে চায়। জাপানের অধিকাংশ মানুষের ধারণাও এমন। তারা বলে, আমরা নিজেরাই যদি ভাল হয়ে উঠি, তবে কেন মিছেমিছি ধর্মের লোভের ফাঁদে পা দেবো? আপনি হয়তো জানেন, জাপানীরা প্রচন্ড বই পড়ুয়া, জ্ঞানী ও শিক্ষিত। তারা কাজের ক্ষেত্রে বাস্তববাদী, সৎ, ন্যায়নিষ্ট। তাই হয়তো ধর্মের কাল্পনিক লোভ ও ভয় তাদের মনে স্থান পায় নি। জাপানের কমপক্ষে ৬২ ভাগ লোক সরাসরি ধর্মকে অস্বীকার করে। বর্তমানেে ইসলাম ধর্মই সবচেয়ে মারাত্মক ভাইরাস। ইসলামিক দেশগুলোর দিকে তাকালে তা খুব ভালো ভাবেই লক্ষ করা যায়।
ইসলামের আল্লাহ তার নবী মুহাম্মদকে সাধারণ মুমিনদের চেয়ে বেশি বিবাহ করার বিধান দিয়েছেন। ইসলামের আল্লাহ তার নবী মুহাম্মদকে সমস্ত মানবজাতির সর্বশ্রেষ্ঠ এবং অনুকরণীয় আদর্শ ঘোষণা করেছেন। ইসলামের আল্লাহ অমুসলিমদের নিকৃষ্টতম জীব তথা জাহান্নামী ঘোষণা করেছেন। ইসলামের নবী মুহাম্মদ তার কন্যা ফাতিমাকে জান্নাতের সর্দারনী ঘোষণা করেছেন। ইসলামের নবী মুহাম্মদ তার পরে তার সাহাবীদের সমস্ত মুসলিমদের অনুকরণীয় বলেছেন। মার্ক টোয়েন খুব সুন্দর একটা কথা বলেছেন, ''মানুষকে বোকা বানানো সহজ। তবে তাকে এটা বোঝানো কঠিন যে তাকে বোকা বানানো হয়েছে''। যেদিন থেকে ধর্ম বলে কিছু নাই মনে করতে শুরু করেছিলাম। ভাবতে পেরেছিলাম। সেদিন থেকে আজ অবধি। কিছুটা হলেও মানুষ হয়েছি বলেই মনে হয়।
সর্বশেষ এডিট : ০১ লা মার্চ, ২০২১ ভোর ৪:১৪