পঁচাত্তর সালের পনের আগস্ট বঙ্গবন্ধু- কে হত্যা করা হলো।
তারপর জেনারেল জিয়া ক্ষমতায় বসলেন। সামরিক এই রাষ্টপতির নতুন নীতির ফলে বাংলাদেশের রাজনীতিতে রাজাকার, আলবদর, ব্যবসায় ক্ষেত্রে পাকিস্তানিরা আবার জাঁকিয়ে বসবার সুযোগ পেল। রাজাকারদের সুযগ করে দেওয়া জিয়ার জীবনের সবচেয়ে বড় ভুল। এই অপরাধ ক্ষমার অযোগ্য।
মাত্র ৪৩ বছর বয়সে জেনারেল জিয়া বাংলাদেশের ৭ম প্রেসিডেন্ট।
জিয়াউর রহমানের পাঁচ বছরের শাসনে কোনো দুর্যোগ হয়নি। বন্যা, খরা, জলোচ্ছাস- কিছুই না। দ্রব্যমূল্য লাগামছাড়া হয়নি। মজার ব্যাপার হলো- নদীতে প্রচুর ইলিশ ধরা পড়ল। বাংলাদেশের মানুষ এই রাষ্ট্র প্রধানকে পেয়ে অনেক খুশি। আওয়ামীলীগের লকজন যেন বোবা হয়ে গেছে। তাদের কোন সারা শব্দ নেই।
সৌদি বাদশার আমন্ত্রনে জিয়া সৌদি গেলেন-
সাথে করে বাদশার জন্য পাচ'শ নিম গাছের চারা নিয়ে গেলেন। অদ্ভুত উপহার পেয়ে বাদশা তো মহা খুশি। সৌদির লোকজন এই গাছের নাম দিলো- জিয়া গাছ। এরপর জেনারেল জিয়া বেলজিয়ামের রাজা রানীকে দিলেন- দুটি হস্তিশাবক। রাজা রানি মহা খুশি। তারা কথা দিলনে, সব সময় বাংলাদেশের পাশে থাকবেন।
জিয়াউর রহমান গোলাম আযম-কে পাকিস্তান থেকে ফিরিয়ে এনে নাগরিকত্ব দিলেন এবং বিশেষ ক্ষমতায় বসালেন। ইহা তাঁর জীবনের সবচেয়ে বড় ভুল। পাপের ফল মানুষকে ভোগ করতেই হয়। জিয়া মৃত্যুবরন করেন- জেনারেল মঞ্জুরের পাঠানো ঘাতক বাহিনীর হাতে। জেনারেল মঞ্জুর ছিলেন একজন মেধাবী অফিসার। মুক্তিযুদ্ধে বীরত্বের জন্য 'বীর উত্তম' খেতাব পান।
১৯৭৫ সালের ৭ই নভেম্বর সিপাহি জনতা বিপ্লবের পর জেনারেল জিয়া রাজনীতির কেন্দ্রবিন্দুতে চলে আসেন।
জিয়াউর রহমান ১৯৭৬ সালের ৮ই মার্চ মহিলা পুলিশ গঠন করেন।
১৯৭৬ সালে গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনী গঠন করেন।
১৯৭৮ সালের ৩রা জুন রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে জিয়াউর রহমান জয়লাভ করেন। তিনি দলের কর্মীদের উদ্দেশ্যে বক্তব্য দিতে গিয়ে বলেন, কোন রাজনৈতিক আদর্শ ধর্মকে ভিত্তি করে হতে পারে না। ধর্মকে কেন্দ্র করে কখনই রাজনীতি করা যেতে পারে না। ধর্মের অবদান থাকতে পারে রাজনীতিতে, কিন্তু রাজনৈতিক দল ধর্মকে কেন্দ্র করে হতে পারে না। এটা মনে রাখবেন, এটা খুব গুরুত্বপূর্ণ।
তথ্যসুত্র-
হুমায়ুন আহমেদের 'দেয়াল' উপন্যাস।
সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই মে, ২০২১ রাত ২:৩৯