somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

রাজীব নুর
আমার নাম- রাজীব নূর খান। ভালো লাগে পড়তে- লিখতে আর বুদ্ধিমান লোকদের সাথে আড্ডা দিতে। কোনো কুসংস্কারে আমার বিশ্বাস নেই। নিজের দেশটাকে অত্যাধিক ভালোবাসি। সৎ ও পরিশ্রমী মানুষদের শ্রদ্ধা করি।

কয়েকটা খুচরো কথা

২৯ শে জুলাই, ২০২১ দুপুর ২:৩৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ছবিঃ আমার তোলা।

লেখার শুরুতে আগে বলে নিই-
এখন সময় দুপুর দেড়টা। সকাল থেকেই আকাশ মেঘলা ছিলো। এখন ঝুম বৃষ্টি হচ্ছে। আকাশের অবস্থা দেখে মনে হচ্ছে আজ আর রোদ উঠবে না। আমি সকালে এক মগ দুধ চা আর দুই পিছ পাউরুটি দিয়ে খেয়েছি। দুপুরে গরুর কলিজা ভূনা আর ভাত। সাথে চিচিংগা ভাজি। চিচিংগাতে চিংড়ি মাছ থাকবে। যদি ফ্রিজে চিংড়ি মাছ না থাকে তাহলে দুইটা ডিম ভেঙ্গে দেওয়া ভবে। ডাল তো থাকবেই। সাথে থাকবে আলু ভর্তা। যদিও সুরভি আজ বলেছিলো মিরপুর যেতে। সুরভি নাকি আজ কাচ্চি রান্না করেছে। ইদানিং কাচ্চি আমার পছন্দ হয় না। ঝরঝরে সাদা ভাত সবচেয়ে ভালো লাগে। ভাতের সাথে ভাজি ভর্তা খুবই ভালো লাগে। গত পরশু পাশের বাসার মালা আপা তিন পদের ভর্তা দিয়েছিলেন। সেই ভর্তা দিয়ে খুব আরাম করে খেয়ে ছিলাম। কিন্তু আজ কেন জানি আমার তেহারি খেতে ইচ্ছা করছে। বৃষ্টির দিনে সাধারনত মানুষ খিচুড়ি পছন্দ করে।

আমার যখন ৫/৬ বছর বয়স-
তখন আমি দেখেছি আমাদের এলাকার অনেক গাছপালা ছিলো। প্রায় প্রতিটা বাড়িতেই নানান রকম গাছপালা ছিলো। অনেক বাড়িতে আমি কুয়াও দেখেছি। কুয়া থেকে পানি তুলে লোকজন গোছল করতো। কাপড় ধুতো। অবশ্য ৪০/৫০/৬০/৭০ সালের দিকে ঢাকা শহরের প্রায় সব বাড়িতে একটা করে কুয়া ছিলো। কুয়ার পানি ছিলো ঠান্ডা এবং পরিস্কার। আমাদের বাড়ি বিল্ডিং করার সময় দেখেছি আমাদের বাড়িতেও কুয়া ছিলো। ছোট কুয়া কিন্তু অনেক গভীর। ৮৫ সালের পর থেকে ঢাকা শহরে কুয়া বিলীন হয়ে গেছে। কুয়া নিয়ে আমার কোনো সমস্যা নেই। আমার সমস্যা গাছ নিয়ে। এখন আমাদের এলাকায় কোনো গাছ নেই। আমাদের এলাকায় কোনো টিনসেড বাড়ি নেই। বিন্ডিং করতে গিয়ে সবাই গাছ কেটে ফেলেছে। ছাদে দাড়ালে কোনো গাছ দেখা যায় না। একটুও সবুজ নেই। আর কিছুদিন পর গাছ দেখা যাবে শুধু রমনা পার্কে।

ছোটবেলার কাহিনীগুলো এখন হুটহাট কিছু কিছু মনে পড়ে।
আমাদের এলাকায় প্রচুর গাছ ছিলো। প্রতিটা বাড়িতে কোনো না কোনো ফলের গাছ ছিলোই। আমি নিজে সে সব ফল খেয়েছি। এমনও হয়েছে স্কুলে যাবো। মা টিফিন দেয়নি। কোনো বাড়ির দেয়ালের উপর উঠে গাছ থেকে দুইটা আনার পেড়ে নিয়ে স্কুলের বন্ধুদের নিয়ে খেয়েছি। আম গাছ ছিলো অনেক। হালকা বাতাসে আম পড়ে যেত। কুড়িয়ে নিয়ে খেতাম। কি মিষ্টি ছিলো সেই আম! আমাদের পাশের বাসায় ছিলো কামরাঙ্গা গাছ। এত মিষ্টি কামরাঙ্গা আমি আর দেখি নি। একসাথে ৫/৭ টা খেয়ে ফেলতাম। জাম গাছও ছিলো। মোটা মোটা জাম। আর কি মিষ্টি! জাম্বুরা গাছ ছিলো। এখন আমাদের এলাকা গাছ শূন্য। এজন্য আমার ভীষন কষ্ট হয়। চারিদিকে বড় বড় দালান। আকাশ দেখা যায় না। এলাকার কাউকে সেই সব গাছদের কথা কাউকে বলতে শুনি না। গাছ নিয়ে কারো চিন্তা নেই। গাছ কাটো। সেখানে ঘর করো। প্রতিমাসে ভাড়া পাওয়া যাবে।

আমার মা খালারা দুই বোন।
আমার মা ছোট, খালা বড়। খালার তিন মেয়ে। খালার বড় মেয়ের একমাত্র মেয়ে আগামীকাল আমেরিকা যাচ্ছে। আমি তাকে এয়ারপোর্ট পৌঁছে দিব। আমার ভাগ্নী মারশা ট্যুরিজম এর উপর একটা কোর্স করবে। এক বছরের জন্য। স্কলারশীপ পেয়েছে। ভাগ্নী মারশাকে ছোটবেলা কোলে কোলে রাখতাম। খুব আদর করতাম। মারশা আমাকে বলতো প্রিয় মামা। এখন সংক্ষেপে ডালে 'পি' বলে। গতকাল ভাগ্নী বাসায় এসেছিলো। বাসার সবার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে গেলো। আমাকে জড়িয়ে ধরে কিছুক্ষন কান্না করলো। আমি বললাম, কান্নার কি আছে? এটা তো আনন্দের ব্যাপার। মন দিয়ে পড়। আমার কাছে একশ' ডলার ছিলো। ভাগ্মীকে দিয়ে দিলাম। দুই বছর ধরে ডলার টা আমার কাছে ছিলো। ভাগ্নীকে বলেছি, আমেরিকাতে চাদ্গাজী আছেন। একবার তার সাথে দেখা করবি। ভাগ্নী লেখাপড়া করবে জেমস টাউন কমিউনিটি কলেজে। সেখানে একমাত্র বাংলাদেশের ছাত্রী আমার ভাগ্নী। তার খাওয়া দাওয়া, থাকা এবং লেখা পড়ার খরচ সব দিবে আমেরিকার সরকার। বাংলাদেশ থেকে মোট আট জন যাচ্ছে।

আজ লেখা এখানেই শেষ করছি।
বৃষ্টি থেমেছে। এখন গোছল করবো। খাবো। তবে গরুর কলিজা ভূনা এখন খাওয়া হবে না। চিচিংগা ভাজিও খাওয়া হবে না। এখন খাবো তেহারি। পাশের বাসার মালা আপা তেহারি পাঠিয়েছেন। এটাকেই বলে রিজিক। এটাকেই বলে নিয়তি। আল্লাহপাক বলেছেন, নিয়তিকে গালি দিও না। আমার ছোট ভাই অল্প কিছু দিন আগে বিয়ে করেছে। ওর বউ ব্যাংকার। ছুটির দিন গুলোতে ছোট ভাইয়ের বঊ অদ্ভুত সব খাবার রান্না করে। সেদিন রান্না করে কিসমিস দিয়ে মূরগীর মাংস। আরেকদিন বিকেলের রান্না করলো- সিদ্ধ করা আলু টুকরো টুকরো করে কেটে তার মধ্যে কালিজিরা ছিটিয়ে দিলো। এবার লুচি দিয়ে খাও। আরেকদিন রান্না করলো পায়েস। সেই পায়েস আবার এমনি এমনি খাওয়া যায় না। লুচি দিয়ে খেতে হয়। আগামীকাল শুক্রবার। তার ডে অফ। আল্লাহই জানে আগামীকাল সে কি রান্না করে! একদিন সকালে দেখি ছোট ভাইয়ের বউ নারকেল দিয়ে আটা রুটি খাচ্ছে।
সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে জুলাই, ২০২১ দুপুর ২:৩৯
৭টি মন্তব্য ৭টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

=এই গরমে সবুজে রাখুন চোখ=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:২১

০১।



চোখ তোমার জ্বলে যায় রোদের আগুনে?
তুমি চোখ রাখো সবুজে এবেলা
আমায় নিয়ে ঘুরে আসো সবুজ অরণ্যে, সবুজ মাঠে;
না বলো না আজ, ফিরিয়ো না মুখ উল্টো।
====================================
এই গরমে একটু সবুজ ছবি দেয়ার চেষ্টা... ...বাকিটুকু পড়ুন

হালহকিকত

লিখেছেন স্প্যানকড, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:১২

ছবি নেট ।

মগজে বাস করে অস্পষ্ট কিছু শব্দ
কুয়াসায় ঢাকা ভোর
মাফলারে চায়ের সদ্য লেগে থাকা লালচে দাগ
দু:খ একদম কাছের
অনেকটা রক্তের সম্পর্কের আত্মীয় ।

প্রেম... ...বাকিটুকু পড়ুন

কুড়ি শব্দের গল্প

লিখেছেন করুণাধারা, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:১৭



জলে ভাসা পদ্ম আমি
কোরা বাংলায় ঘোষণা দিলাম, "বিদায় সামু" !
কিন্তু সামু সিগারেটের নেশার মতো, ছাড়া যায় না! আমি কি সত্যি যাবো? নো... নেভার!

সানমুন
চিলেকোঠার জানালায় পূর্ণিমার চাঁদ। ঘুমন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্ম ও বিজ্ঞান

লিখেছেন এমএলজি, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:২৪

করোনার (COVID) শুরুর দিকে আমি দেশবাসীর কাছে উদাত্ত আহবান জানিয়ে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম, যা শেয়ার হয়েছিল প্রায় ৩ হাজারবার। জীবন বাঁচাতে মরিয়া পাঠকবৃন্দ আশা করেছিলেন এ পোস্ট শেয়ারে কেউ একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

×