somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

রাজীব নুর
আমার নাম- রাজীব নূর খান। ভালো লাগে পড়তে- লিখতে আর বুদ্ধিমান লোকদের সাথে আড্ডা দিতে। কোনো কুসংস্কারে আমার বিশ্বাস নেই। নিজের দেশটাকে অত্যাধিক ভালোবাসি। সৎ ও পরিশ্রমী মানুষদের শ্রদ্ধা করি।

কিছু বই না পড়া অন্যায়

৩০ শে নভেম্বর, ২০২১ বিকাল ৫:৪৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



১। স্কুলে 'হাজার বছর ধরে' আর ইন্টারে পড়েছি 'পদ্মা নদীর মাঝি'।
দুটোই পরকীয়া প্রেমের গল্প। হাজার বছর ধরে উপন্যাস নিয়ে সিনেমা হয়েছে। উপন্যাসে অঙ্কিত গ্রামের মানুষ গুলোর সকলের ধর্ম ইসলাম। সকলেই ধর্মকর্মে অতটা উৎসাহী না হলেও জীবনাচরণের দিক থেকে ধর্ম মেনে চলতেই তাদের দেখা যায়। তাবিজ-কবচ, জিন-ভূতে এন্তার বিশ্বাস তাদের। বিশ্বাস অবৈজ্ঞানিক ঝাড়ফুঁকেও।
'পদ্মা নদীর মাঝি' সিনেমা হয়েছে। দেখেছি। ভালো লেগেছে। পদ্মা নদীর মাঝি উপন্যাসের পটভূমি বাংলাদেশের বিক্রমপুর-ফরিদপুর অঞ্চল। উপন্যাসে পদ্মার তীরবর্তী কেতুপুর ও পার্শ্ববর্তী গ্রামের পদ্মার মাঝি ও জেলেদের জীবনচিত্র সুনিপুণভাবে অঙ্কিত হয়েছে। শহর থেকে দূরে এ নদীর তীরবর্তী জেলে পাড়ার মাঝি ও জেলেদের জীবনের সুখ-দুঃখ, হাসি-কান্না-অভাব-অভিযোগ- এই উপন্যাসে খুব সুন্দর করে লেখক ফুটিয়ে তুলেছেন।

২। 'ক্র্যাচের কর্নেল' বইটি পড়লেই মন খারাপ হয়ে যায়।
কষ্ট হয়। আমরা যারা আশির দশকের জন্ম নিয়েছি, আমাদের সবাই পড়তে হয়েছে পরিবর্তিত ইতিহাস। নানান কারণে নানান জনের হাত ধরে আমাদের মুক্তিযুদ্ধ এবং যুদ্ধ পরবর্তি ইতিহাসের হয়েছে নানা পরিবর্তন। 'ক্র্যাচের কর্নেল' চমৎকার একটা বই। অথচ এই বই নিয়েও বহুজন বিরুপ মন্তব্য করেছেন। যা অত্যন্ত দুঃখজনক।

৩। 'সূর্য দীঘল বাড়ি' লেখক- আবু ইসহাক।
কুসংস্কার, ধর্মীয় গোঁড়ামি, পুরুষতন্ত্রের নির্যাতন ও ধনীর শোষণের যাঁতাকলে পিষ্ট গ্রামীণ বাংলাদেশের এক নারীর জীবন সংগ্রামের অনবদ্য দলিল ‘সূর্য দীঘল বাড়ি’। বাংলার গ্রামীণ জীবনের অসামান্য চিত্রায়ন। উপন্যাসে লেখক ধর্মকে হেয় করেননি। তিনি হেয় করেছেন ধর্মের অপব্যাখ্যা দেওয়া মানুষদের। যারা ধর্মের চেয়েও নিজের স্বার্থকেই বড় করে দেখে। ধর্মীয় গোঁড়ামি মনের ভেতর বেঁধে রাখা কুসংস্কারচ্ছন্ন মানুষদের নিন্দা জানিয়েছেন তিনি।

৪। মন প্রকৌশল লেখক- রাগিব হাসান।
আমাদের তরুণদের কিছু বাঁধাধরা সমস্যা আছে সেই সমস্যা গুলোর কথা বলা আছে। হতাশ হয়ে যাওয়া সেই তরুণদের কেউ না কেউ নিশ্চয়ই এই বইটা পড়ে এক ধরনের শক্তি পাবে, এক ধরনের সাহস পাবে, নিজের ভেতর অনুপ্রেরণা খুঁজে পাবে। চমৎকার একটা বই। সকলের পড়া উচিত। হতাশা গ্রস্ত লোকেরা এই বই পড়লে আশা খুঁজে পাবেন।

৫। সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় রচিত প্রথম আলো
দুটি খন্ডে রচিত এই উপন্যাসটির মোট পৃষ্ঠা সংখ্যা হল ১১৪১। প্রথম খন্ডে ৪২৪ পৃষ্ঠা। দ্বিতীয় খন্ডে ৭১৭ পৃষ্ঠা। এত মোটা বই কিন্তু পড়তে বিরক্ত লাগবে না। পুরো উপন্যাস জুড়ে অনেক চরিত্র। সবার সাথে সবার সামঞ্জস্য আছে। লেখক এত সুন্দর করে লিখেছেন, মনে হয় যেন চরিত্র গুলোকে চোখের সামনে দেখতে পাচ্ছি। সুনীলের আত্মজীবনী মূলক লেখা 'অর্ধেক জীবন'। দারুন একটা বই।

৬। সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায় রচিত "শ্বেতপাথরের টেবিল"।
সাহিত্যের জগতে থাকেন কিছু কিছু জহুরি, সম্ভাবনাময় নতুন লেখকদের তাঁরা এক নজরেই শনাক্ত করতে পারেন। ষাটের দশকে দেশ পত্রিকায় প্রকাশিত অজ্ঞাতনামা এক লেখকের একটি গল্প পাঠ করে আবু সয়ীদ আইয়ুব দেশ-এ চিঠি লিখেছিলেন- ''এই লেখক আর কোনো গল্প যদি নাও লেখেন ওই একটি গল্পের জন্যই বাংলা সাহিত্যে তাঁর স্থান পাকাপোক্ত হয়ে থাকবে''। গল্পটির নাম ছিল 'শ্বেতপাথরের টেবিল', লেখক সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়।

৭। কাকতাড়ুয়া সেলিনা হোসেন।
একটি বিখ্যাত শিশুতোষ উপন্যাস। উপন্যাসটি আমাদের ইতিহাসের এক গৌরবময় দলিল। বাংলাদেশের কোন একটি গ্রাম। এই গ্রামেরই বাস করে এতিম এক কিশোর নাম বুধা। কলেরায় মারা যায় তার ভাইবোন। প্রথমে চাচির বাড়িতে আশ্রয় নিলেও চাচি দারিদ্রের কথা তুললে সে বাড়ি ত্যাগ করে। পুরো গ্রাম আর হাটবাজার ছিল তার বিচরণ ক্ষেত্র। চেনাজানা সব মানুষ হয়ে উঠল তার আপনজন। একদিন ঐ গ্রামে মিলিটারি ঢুকলে তারা পুড়িয়ে দিল বাজারের দোকানপাট।

৮। শাপমোচন - ফাল্গুনী মুখোপাধ্যায়।
উক্ত উপন্যাসের গ্রামের একটি পরিবার আর শহরেরে একটি পরিবারকে ভিন্নভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে। বইটা শেষ করার পর এর রেশ যে অনেককাল পাঠকের মনে রয়ে যাবে এটা আমি হলফ করে বলতে পারি। যারা প্রেমের উপন্যাস পছন্দ করেন তাঁরা এটা পড়ে উদ্বেলিত হবেন।

৯। শ্রীকৃষ্ণের শেষ কটা দিন- সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়।
চমৎকার একটা বই। বইটির জন্য লেখক সাহিত্য আকাদেমি পুরস্কার পেয়েছেন। এই বইটা পড়ার পর আপনি অটোমেটিক এই লেখকের অন্যান্য বই গুলো খুঁজে পড়তে শুরু করবেন। বইটি পড়ুন এবং আমার কথা মিলিয়ে দেখুন।

১০ । প্রথম প্রতিশ্রুতি আশাপূর্ণা দেবী।
লেখিকা এই উপন্যাসে মেয়েদের স্বনির্ভরতার গুণগান গেয়েছেন। অর্থনৈতিক স্বাধীনতা যে নারীমুক্তির কেন্দ্রবিন্দু। গল্পের শেষে, স্বামী ও সংসার পরিত্যাগের পর, নায়িকা সত্যবতী ইঙ্গিত দেয় সে স্কুলের শিক্ষয়িত্রী হয়ে পেট চালাবে। কারোর কাছে হাত না পেতে তার নিজের পায়ে দাঁড়াবে।
সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে নভেম্বর, ২০২১ বিকাল ৫:৪৪
১৩টি মন্তব্য ১৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা ও পদ্মশ্রী পুরস্কার

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৫৬



এ বছরের পদ্মশ্রী (ভারতের চতুর্থ সর্বোচ্চ অসামরিক সম্মাননা) পদকে ভূষিত করা হয়েছে, বাংলাদেশের রবীন্দ্র সংগীত এর কিংবদন্তি শিল্পী রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যাকে।

আমরা গর্বিত বন্যাকে নিয়ে । ...বাকিটুকু পড়ুন

কষ্ট থেকে আত্মরক্ষা করতে চাই

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৯



দেহটা মনের সাথে দৌড়ে পারে না
মন উড়ে চলে যায় বহু দূর স্থানে
ক্লান্ত দেহ পড়ে থাকে বিশ্রামে
একরাশ হতাশায় মন দেহে ফিরে।

সময়ের চাকা ঘুরতে থাকে অবিরত
কি অর্জন হলো হিসাব... ...বাকিটুকু পড়ুন

রম্য : মদ্যপান !

লিখেছেন গেছো দাদা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৫৩

প্রখ্যাত শায়র মীর্জা গালিব একদিন তাঁর বোতল নিয়ে মসজিদে বসে মদ্যপান করছিলেন। বেশ মৌতাতে রয়েছেন তিনি। এদিকে মুসল্লিদের নজরে পড়েছে এই ঘটনা। তখন মুসল্লীরা রে রে করে এসে তাকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

= নিরস জীবনের প্রতিচ্ছবি=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৪১



এখন সময় নেই আর ভালোবাসার
ব্যস্ততার ঘাড়ে পা ঝুলিয়ে নিথর বসেছি,
চাইলেও ফেরত আসা যাবে না এখানে
সময় অল্প, গুছাতে হবে জমে যাওয়া কাজ।

বাতাসে সময় কুঁড়িয়েছি মুঠো ভরে
অবসরের বুকে শুয়ে বসে... ...বাকিটুকু পড়ুন

Instrumentation & Control (INC) সাবজেক্ট বাংলাদেশে নেই

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৫




শিক্ষা ব্যবস্থার মান যে বাংলাদেশে এক্কেবারেই খারাপ তা বলার কোনো সুযোগ নেই। সারাদিন শিক্ষার মান নিয়ে চেঁচামেচি করলেও বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরাই বিশ্বের অনেক উন্নত দেশে সার্ভিস দিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×