somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

রাজীব নুর
আমার নাম- রাজীব নূর খান। ভালো লাগে পড়তে- লিখতে আর বুদ্ধিমান লোকদের সাথে আড্ডা দিতে। কোনো কুসংস্কারে আমার বিশ্বাস নেই। নিজের দেশটাকে অত্যাধিক ভালোবাসি। সৎ ও পরিশ্রমী মানুষদের শ্রদ্ধা করি।

শহর ঢাকা

২২ শে এপ্রিল, ২০২২ ভোর ৪:১৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ছবিঃ গুগল।

ঢাকা একটা অদ্ভুত শহর। ঢাকা একটা নোংরা শহর।
ঢাকা একটা মন্দ মানুষদের শহর। ঢাকা একটা অমানবিক শহর। ঢাকা একটা জঘন্য শহর। ঢাকা শহরের চেয়ে বরিশালের শহরটা অনেক ভালো। সারা বাংলাদেশ থেকে সমস্ত দুষ্ট লোকজন ঢাকা এসে জড়ো হয়েছে। তাই ঢাকা এত কুৎসিত। যাই হোক, ঢাকা সম্পর্কে আপনাকে কিছু অজানা তথ্য দেই। ঢাকা শহরের গুলিস্তান এলাকায় ফুটপাত এবং রাস্তা কেনাবেচা হয়। অথচ এই ফুটপাত এবং রাস্তা সরকারের। কিন্তু স্থানীয় পাতি নেতারা ফুটপাত এঁর মালিক। তিন হাত, চার হাত জায়গার দাম ৫ লাখ টাকা। নেতারা বলে ভিটি। এই ভিটি ভাড়া দেওয়া হয়। গুলিস্তানের কাছেই আওয়ামীলীগের পাটি অফিস। সেই পাটি অফিসে নেতার অভাব নাই। সংগঠনের অভাব নাই। সেই নেতারা ফুটপাত, ও রাস্তা দখল করে ভাড়া দিচ্ছে। নিজেরা আয় করছে মাসে হাজার হাজার টাকা। ব্যস্ত রাস্তা আটকে সেখানে দোকান বসানো হয়েছে। পুলিশ চুপচাপ। সিটি কর্পোরেশন চুপচাপ। কেউ কিচ্ছু বলে না।

ফুটপাতের দোকানের জন্য অবৈধ্য বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া হয়।
লাইনম্যান বিদ্যুর সংযোগ দেয়। এভাবে লাখ লাখ টাকা লাইনম্যান ও স্থানীয় নেতারা আয় করছে। এই মুহুর্তে আপনাকে চলমান একটা উদাহরন দেই- গুলিস্তান এলাকায় একটা সরকারী বিল্ডিং আছে। টিসিবি'র বিল্ডিং। সেখানে এখন আর সরকারের কোনো কামকাজ হয় না। অথচ স্থানীয় নেতারা সে বিল্ডিং ভাড়া দিয়ে লাখ লাখ টাকা নিয়ে যাচ্ছে। এমন কি সেই বিল্ডিং এ বিদ্যুৎ সংযোগ নেই। অথচ গুলিস্থান এলাকায় এক নেতা অবৈধ্য ভাবে বিদ্যুৎ সংযোগ দিয়ে, মাসে লাখ লাখ টাকা নিচ্ছে। ঢাকা শহরে বেশ কিছু মাজার আছে। মাজারের ইনকাম ভালো। সেই টাকা কারা নিচ্ছে? কে পাচ্ছে? জানেন? আপনারা না জানলে কি হবে সরকার জানে। সিটি করপোরেশন জানে। গুলিস্তান এলাকায় একটা পার্ক আছে। সেই পার্কে দিনে রাতে কি কি ঘটছে জানেন? সেই পার্ক কার দখলে? সেখানে কি কি হচ্ছে- সরকার কি জানে? প্রতিদিন কারওয়ানবাজার থেকে ফার্মগেট মোড় পর্যন্ত রাস্তায় কিশোর গ্যাং এক থেকে দেড় শ' মোবাইল থাপা দিয়ে নিয়ে দৌড়ে পালাচ্ছে। অথচ পুলিশ নিরব। সায়দাবাদ থেকে যাত্রীবাড়ি কিশোর গ্যাং এঁর সদস্যরা প্রতিদিন সাধারন মানুষের কাছ থেকে মোবাইল ছিনিয়ে নিয়ে পালাচ্ছে। পুলিশ নিরব।

প্রতিদিন রাতের আঁধারে ঢাকার বাইরে থেকে মহিষ আসে।
সেই মহিষ গুলো ভোর হওয়ার আগেই জবাই হয়। দিনের আলোতে সেই মহিষকে গরুর মাংস বলে বিক্রি করা হচ্ছে। দিনের পর দিন একই ঘটনা। কেউ দেখার নেই। এই শহরে প্রতিদিন ছিনতাই হচ্ছে। একই রাস্তায় দিনের পর দিন ছিনতাই হচ্ছে। অথচ পুলিশ নিরব। যে রাস্তা সব সময়, প্রতিদিন ছিনতাই হয়, সেই রাস্তায় পুলিশ পাহাড়া দিতে দেখা যায় না। অথচ যে সব রাস্তায় ছিনতাই হয় না, কোনো রকম ঝামেলা হয় সেখানে পুলিশ পাহাড়া দেখা যায়। তাঁরা চুপচাপ বসে থেকে। মোবাইলে ফেসবুক চালায়। এই শহরে ফুটপাত থেকে পুলিশ এসে নিয়মিত চাঁদা তুলে। আমাদের এলাকার কথা বলি-থানার গাড়ি নিয়ে পুলিশ আসে। কসস্টবল সাহেব গাড়ি থেকে নেমে দাড়ালেই তাকে এসে প্রতিদিনকার চাঁদার হিসাব বুঝিয়ে দিয়ে যায়। তখন বড় অফিসার গাড়িতে বসে থাকেন। মোবাইল চালান। কেউ একজন তাকে ঠান্ডা কোক দিয়ে যায়। শুধু মাত্র পুলিশ, আমলা এবং নেতারা যদি এই দেশে সৎ হয়ে যায়- তাহলে এদেশের বেশির ভাগ সমস্যার সমাধান হয়ে যায়। এই ঢাকা শহরে আপনি ব্যবসায়িক কাজে ট্রেড লাইসেন্স করাতে গেলে আপনাকে বাড়তি টাকা দিতে হবেই। এই শহরের কিশোররা ছাত্রলীগের মতোই হিংস্র। খিলগাও তালতলা মার্কেটের দোতলায় গেলে আপনি অবাক হয়ে যাবেন। কিশোর গ্যাং অবাদে গাঁজা খাচ্ছে। একজন আরেকজনকে কুৎসিত গালি দিচ্ছে। বিশ টাকা দিয়ে এক ঘন্টার জন্য কম্পিউটার ভাড়া নিচ্ছে। নোংরা ছবি দেখছে। গেমস খেলছে। এখানে আমি এতিমখানার ছোট ছোট বাচ্চাদেরও দেখেছি।

ঢাকা শহরের প্রতিটা এলাকায় গাঁজা, ফেনসিডিল আর ইয়াবা পাওয়া যায়।
প্রতিদিন দেদারছে বিক্রি হচ্ছে। এমন কি বিদেশী মদও পাওয়া যায়। ফোন দিলেই বাসায় এসে দিয়ে যায়। সারা বাংলাদেশের মধ্যে ঢাকা শহরে পতিতাদের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। দালাল নিচে রাস্তায় দাঁড়িয়ে খদ্দের ধরে। দালাল বলে, কোন ধরনের মেয়ে চান? আমার কাছে সব ধরনের মেয়ে আছে? ইউনিভার্সিটির মেয়ে? স্কুল পড়ুয়া মেয়ে? নাটকের মেয়ে? সিনেমার মেয়ে? বিধবা? বিবাহিতা? অবিবাহিতা? ভার্জিন? গ্রামের মেয়ে? শিক্ষিকা? আমাদের এলাকায় একটা গরুর মাংসের দোকান আছে। ছোট্র দোকান। তাঁরা প্রতিদিন ব্যস্ত রাস্তার মধ্যে ১০ টা গরু জবাই দেয়। অসংখ্য মানুষ সেই রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করে। পাশে দুটা কোচিং সেন্টার। সেখানে ছোট ছোট ছেলেমেয়েরা পড়তে আসে। গরু জবাই দেখে তাঁরা ভয় পায়। পথচারীরা ভয় পায়। অথচ পুলিশ চুপ থাকে। কারন পুলিশ টাকা পায় নিয়মিত। ঢাকা শহরে দুদক নামে একটা সরকারী প্রতিষ্ঠান আছে। দুদকে কোনো সৎ লোক নাই। দূর্নীতিবাজরা তাদের বাসায় নিয়মিত টাকা পাঠিয়ে দেয়। ঈদের সময়, জামা কাপড় পাঠায়। কোরবানীর ঈদে আস্তো গরু পাঠায়। এজন্য দুদক দূর্নীতিবাজদের ধরে না। এমন কি দুদকে একটা অভিযোগ বাক্স আছে। দেশের সাধারণ মানুষ দূর্নীতিবাজদের নাম ও প্রমান সহ লিখে অভিযোগ বাক্সে ফেলে। কিন্তু যিনি সেই অভিযোগ বাক্স খুলেন তিনি, আগেই তার প্রিয় মানুষদের বিরুদ্ধে করা অভিযোগ গুলো সরিয়ে ফেলেন। কারন এজন্য তাকে মোটা অংকের টাকা দেওয়া হয়।

দেশের সমস্ত অনলাইন নিউজ পোর্টাল, দৈনিক পত্রিকা আর টিভি চ্যানেলের মালিক কারা?
দুর্নীতিবাজরা। দেশের নব্য ধনী কারা দূর্নীতিবাজরা। এই যে আর কিছু দিন পর ঈদ। দেশের সেরা ব্যবসায়ীরা ইদের দুদিন আগে টাকার বস্তা নিয়ে বসবেন। এবং তার কাছে বড় বড় রাজনীতিবিদরা যাবেন, মন্ত্রী, এমপি, পুলিশ, সম্পাদক, আমলারা যাবেন- বান্ডিল বান্ডিল নিয়ে আসবেন ব্যবসায়ীর কাছ থেকে। টাকাওলা লোকদের নারী সঙ্গ খুব পছন্দ। এজন্য তাঁরা এক রাতের জন্য লাখ লাখ টাকা খরচ করে। কেউ কেউ কলকাতা থেকে নায়িকা নিয়ে আসেন। প্রতিটা মন্ত্রী, এমপির জলসা ঘর আছে। সারারাত চলে মোজমাস্তি। সরকারী আমলারা বিদেশী মদ খুব পছন্দ করেন। তাদের তাই দেওয়া হয়। রাজনীতিবিদ এবং তাদের ছত্রছায়ায় থাকা লোকেরা অস্টেলিয়া, মালোশিয়া, কানাডা, আমেরিকাতে বাড়ি করেছে। দেশে সমস্যা হলেই আমেরিকায় দৌড় দিবে। দেশে সরকারী কলেজ গুলোকে ছাত্রলীগ এর পোলাপান মনে করে তাদের বাপ দাদার সম্পত্তি। প্রধান শিক্ষক এর রুমও এত জাকজমকপূর্ন নয়। ছাত্রলীগের নেতার রুমে এসি আছে। টিভি আছে। ফ্রিজ আছে। রাতে সেখানে তাঁরা মদ খায়। বিশ্বাস না হলে নিজের চোখে গিয়ে দেখে আসুন। প্রতিটা ছাত্রনেতা গাড়ি, বাড়ি, ফ্লাট করে ফেলেছে। ব্যাংকে আছে অনেক টাকা। টাকার জোরে এক বউ ছেড়ে আরেক বউ ধরে। গার্ল ফ্রেন্ড নিয়ে ট্যুর দেয় ইউরোপ।

আসলে এসব বিষয় এখন আর লিখতে ইচ্ছা করে না।
কারন বাংলাদেশ হলো সব সম্ভবের দেশ। আমাদের দেশে অনিয়মটাই নিইয়ম। বর্তমান প্রজন্মের স্কুল পড়ুয়া ছেলেরা ভয়াবহ ভয়ঙ্কর। এরা এখনই চাপাতি নিয়ে ঝাপিরে পরে। ওদের মুখের ভাষা ভয়াবহ খারাপ। অথচ বাপ মা মনে করে তাদের ছেলে স্কুলে পড়ছে। স্কুল পড়ুয়া ছেলেরা ছাত্রলীগের মতোই ভয়ঙ্কর। এক লোক আমেরিকাতে থাকে। সে দেশে তার বাবা মায়ের নামে একটা সংগঠন করেছে। তার ইচ্ছা তার সংগঠন সমাজ সেবা মূলক কাজ করবে। কিন্তু সেখানে কি হচ্ছে? আড্ডা হচ্ছে। মদ খাওয়া হচ্ছে। সংগঠনের নামে যে টাকা আমেরিকান প্রবাসী পাঠাচ্ছেন, সেই টাকা দিয়ে জনকল্যানকর কাজ হচ্ছে না। প্রবাসী ভদ্রলোক এসবের কিছুই জানেন না। তিনি যাকে বিশ্বাস করে দায়িত্ব দিয়েছেন, সে সব টাকা নিজের পকেটে ভরছে। এই ঢাকা শহরে কোথাও কিছু সঠিক নিয়ম হচ্ছে না। সব জাগায় অন্যায়। সব জায়গায় অবিচার। একজন আরেকজনকে ঠকাচ্ছে এই শহরে। এই শহরে কোনো ভালো মানুষ নেই। সবাই একটা মুখোশ পরে আছে। কারো মধ্যে কোনো মায়া দয়া নেই। পরিবার নিয়ে সুন্দরভাবে জীবনযাপন করতে চাইলে এই দেশে ছেড়ে পালিয়ে যেতে হবে।
সর্বশেষ এডিট : ২২ শে এপ্রিল, ২০২২ ভোর ৪:১৩
৯টি মন্তব্য ৯টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

তারেক ৩০০০ কোটী টাকার লোভেই দেশে ফিরেছে

লিখেছেন জেন একাত্তর, ২৮ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:১০



তারেক এসেছে, বলেছে, I have a plan; তারেকের প্ল্যানটা কি? এই মহুর্তে তার প্ল্যান হতে পারে, নমিনেশন বাণিজ্য করে কমপক্ষে ৩০০০ কোটি টাকা আয়। ৩০০ সীটে গড়ে ১০... ...বাকিটুকু পড়ুন

বই : টক অব দ্য টাউন

লিখেছেন স্বপ্নের শঙ্খচিল, ২৮ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:০৮

বই : টক অব দ্য টাউন



একটি বই হঠাৎ করে এতটা আলোচনায় আসবে আমরা কি ভাবতে পেরেছি ?
বাংলাদেশের মানুষ অতি আবেগপ্রবন , বর্তমান রাজনৈতিক অস্হিরতার মধ্যে ও
বাঙালীর স্বভাবসুলভ অনুসন্ধানী... ...বাকিটুকু পড়ুন

মাদ্রাসা শিক্ষা, বৈশ্বিক রাজনীতি, সহিংসতা ও জঙ্গিবাদ

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ২৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ ভোর ৪:৪৫


লেখাটির শুরুতে একটি ভূমিকা দেওয়া যাক। সর্বশেষ দেশে গিয়ে কয়েকদিন গ্রামের বাড়িতে ছিলাম। উত্তরবঙ্গে, নিতান্ত অনুন্নত আমাদের সেই গ্রামে এতগুলো কওমি মাদ্রাসা হয়েছে দেখে অবাক হয়েছিলাম। আগে গ্রামে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঢাকার মানুষের জীবন

লিখেছেন অপু তানভীর, ২৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:১৪


ঢাকাতে মানুষ বড় বিচিত্র ভাবে বেঁচে থাকে। নিয়মিত ঢাকার রাস্তার ঘুরে বেড়ানোর কারণে এই রকম অনেক কিছু আমার চোখে পড়ে। সেগুলো দেখে মনে হয় মানুষ কত ভাবেই... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশ কখনো এমন করে বলতে পেরেছে কি?

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ২৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:০৫


ভারতে গরু ও গোমাংস নিয়ে হত্যা বা সহিংসতার নির্দিষ্ট সংখ্যা বলা কঠিন কারণ এটি রাজ্য, সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গি এবং 'গরু রক্ষা' বাহিনী ইত্যাদীর কারণে একেক যায়গাতে একেক রকম। ভারত গোমাংস... ...বাকিটুকু পড়ুন

×