
কলকাতার লোকজন 'চড়ুই' পাখিকে 'চড়াই' পাখি বলে।
আমাদের বাসার ছাদে অনেক চড়ুই পাখি আসে। আমি ওদের নিয়মিত খাবার দেই। চড়ুই গুলো আমার জন্য অপেক্ষা করে। এটা আমি তীব্র ভাবে অনুভব করি। কারন, কোনো একদিন খাবার দিতে দেরী হলে- চড়ুই গুলো আমার ব্যলকনিতে এসে কিচির মিচির করতে থাকে। কথা হলো ওরা জানলো কিভাবে আমি ছয় তলায় থাকি?
আজ থেকে দশ বছর আগেও আমার প্রচুর ইংরেজি বাংলা কবিতা মুখস্ত ছিলো।
সুরভিকে তো কবিতা শুনিয়েই মুগ্ধ করেছিলাম। সুনীলের 'কেউ কথা রাখেনি' কবিতাটা দারুণ আবৃত্তি করতে পারবেন। রামায়ন- মহাভারত ভালো পড়া ছিলো। কে কার মা, কে কার বাপ, কে কার ছেলে এসব আমার ভুল হতো না। অথচ এখন সব কিছু কেমন ধূসর হয়ে গেছে। সামান্য বাজার করতে যাই। বাজারে গিয়ে ভুলে যাই- সুরভি কি কি নিতে বলেছে। আমি সুরভিকে ফোন দেই, কিন্তু বলি না সে আমাকে কি কি নিতে বলেছে। কৌশলে জেনে নিই।
আজকাল লোকজন চা টা পর্যন্ত ভালো করে বানায় না।
ভালো চা মানে কি? একগাধা চিনি? লিকার হালকা? দুধ বেশি? এটা কোনো চা! পানসে চা চুমুক দিতে ইচ্ছা করে না। ফালতু চা মুখে দিলেই মেজাজটা বিগড়ে যায়। নিজের অজান্তেই মুখে অতি কুৎসিত গালি চলে আসে। রমজান মাস চলছে, বলে বাসার কাউকে চায়ের কথা বলি না। নিজেই বানিয়ে খাই। এখন আমি ভালো চা বানাতে পারি। আজ মাকে চা বানিয়ে খাওয়ালাম। মা চা খেয়ে অবাক। খুশি হয়ে আমাকে দুই হাজার টাকা দিয়েছে।
মনটা আজ ভালো নেই। কি হয়েছে বুঝতে পারছি না।
পাগল হয়ে যাচ্ছি কিনা কে জানে! পাগল হয়ে গেলেই ভালো হয়। পাগলের তো স্মৃতি থাকে না। মাথার সব উলটোপালটা হয়ে যায়। এই শহরে পাগলের জীবনটাই সবচেয়ে আনন্দময়। সেটা অবশ্য সবার ভাগ্যে জোটে না। ঢাকা শহরে বা গ্রামের প্রতিটা এলাকাতেই এক দুইজন করে পাগল দেখা যায়। এদের কেউ চিকিৎসা করায় না কেন? আমৃত্যু এরা পাগলই থেকে যাবে? সরকারের উচিৎ তাদের ধরে নিয়ে চিকিৎসা করানো। সুস্থ করা।
বাইরে শীতল বাতাস। আকাশ ভরা মেঘ। অথচ জোছনা রাত। বেলি ফুলের গন্ধ চারিদিকে। আমি সব টের পাই। নীরা তুমি আমাকে এক কাপ চা দিবে?
অবেলায়?
তুমি বুঝ না কেন বারবার তোমার কাছে ছুটে আসি?
বুঝতে চাই না।
কেন স্বচ্ছ ভালোবাসা থেকে নিজেকে প্রত্যাহার করছো?
যখন আমি মালা গেথে ছিলাম, তুমি পরোনি। বলেছো, নিজে পরো। মালা ফিরিয়ে দিয়েছো। তবু বারবার তোমার কাছে ছুটে ছুটে এসেছি। কি আসিনি?
কিন্তু এখন আমি অনুভব করি, আমার মন তোমার কাছে পড়ে আছে। একটু মায়া হয় না আমার জন্য তোমার?
তুমি আমাকে দুর্বল করে দিচ্ছো অর্জুন। এখন তুমি যাও।
তাহলে একবার জড়িয়ে ধরে চুমু দাও। জানো কেউ আমাকে দু চোখে দেখতে পারে না। না আওয়ামীলীগ, না বিএনপি। না ধার্মিক। একমাত্র তুমি ছাড়া।
নীরা তুমি আমাকে ভালোবাসো। এই জন্যই বারবার তোমার কাছে ছুটে আসি। তুমি ছাড়া আমি কী ভীষণ একা।
সর্বশেষ এডিট : ২২ শে এপ্রিল, ২০২২ দুপুর ১:৫৯

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




