somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

রাজীব নুর
আমার নাম- রাজীব নূর খান। ভালো লাগে পড়তে- লিখতে আর বুদ্ধিমান লোকদের সাথে আড্ডা দিতে। কোনো কুসংস্কারে আমার বিশ্বাস নেই। নিজের দেশটাকে অত্যাধিক ভালোবাসি। সৎ ও পরিশ্রমী মানুষদের শ্রদ্ধা করি।

বল তোর শেষ ইচ্ছা কি?

২৪ শে মে, ২০২২ দুপুর ২:৫০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ছবিঃ আমার তোলা।

আমি সাধারণত দুপুরে ঘুমাই না।
গত শুক্রবার দুপুরে খুব বেশি খেয়ে ফেলেছিলাম। আমি টিভি দেখি আর খাই। এজন্য খাবার বেশী খেয়ে ফেলি। খাওয়ার সময় টিভি দেখা উচিৎ না। খাবের মেন্যু ছিলো- লাউ শাক দিয়ে রুই মাছের মাথা ভেঙ্গেচুড়ে রান্না করে ছিলো। জিনিসটা খেতে দারুন হয়েছিলো। চাপিলা মাছ। কড়কড়া করে ভাঁজা। গরম ভাতের সাথে চাপিলা মাছ ভাঁজা খেতে ভালো লাগে। চাপিলা মাছের স্বাদ অনেকটা ইলিশ মাছের মতোন। চিংড়ি দিয়ে করলা ভাজি করেছিলো। দূর্দান্ত হয়েছিলো। করলা নাকি তিতা। আমাদের বাসায় কখনও করলা ভাজি করলে তিতা লাগে না খেতে। আমার এক চাচা গ্রাম থেকে পদ্মা নদীর একটা পাঙ্গাস মাছ নিয়ে এসেছিলেন। বিরাট পাঙ্গাশ। সেই মাছের দুটা পেটি খেয়েছি। মাছের গায়ে শুধু তেল আর তেল। দেশী মূরগীর ঝাল ঝোল ছিলো। সব মিলিয়ে খাওয়াটা দারুন হয়েছিলো। খুব বেশি খেয়ে ফেলেছিলাম। মানুষ কম খেলে মরে না। বেশী খেলেই মরে।

খাওয়ার পর হাসফাঁস লাগছিলো।
একটা কাঁচা সুপারি মুখে নিলাম। চুপ করে বিছানায় গেলাম। সাথে সাথে ঘুমিয়ে পড়লাম। গভীর ঘুম। টানা দু ঘন্টা ঘুমালাম। ঘুম হয়তো আরো লম্বা হতো। খারাপ স্বপ্ন দেখেছি। স্বপ্ন দেখে ভয় পেয়েছি। তাই ঘুম ভেঙ্গে গেছে। ঘুম ভাঙ্গার পর আমি হাপাচ্ছিলাম। কপালে বিন্দু বিন্দু ঘাম জমে গিয়েছিলো। মনে হচ্ছে- ঘুমটা না ভাঙলে ঘুমের মধ্যেই মরে যেতাম। স্বপ্নে কি দেখেছি, সেটা নিয়েই আজকের পোষ্ট। স্বপ্নে দেখলাম- খা খা দুপুর। চারিদিকে কড়া রোদ। আমি মাঝ রাস্তায় দাঁড়িয়ে আছি। চারিদিকে কোনো ঘরবাড়ি দেখা যাচ্ছে না। শুধু মাইলের পর মাইল মরুভূমি। বালি গুলো রোদে চিকচিক করছে। রোদে আমার খুব কষ্ট হচ্ছে। আমি ঘামছি। গলা বুক শুকিয়ে গেছে। খুব পানির পিপাসা লেগেছে। অথচ আশেপাশে পানি খাওয়ার কোনো ব্যবস্থা নেই। এখানে এলাম কি করে? বাড়ি ফিরবো কি করে? আজিব ব্যাপার। আমার কন্যা কই? স্ত্রী কই?

একটা গাছও নেই যে ছায়ায় গিয়ে বসবো।
এমন সময় শা শাঁ করে একটা বড় ট্রাক এলো। ট্রাকের ড্রাইভার বলল, বাঁচতে চাইলে ট্রাকে উঠে পড়ুন। ওরা আসছে। একদম জানে মেরে ফেলবে। সময় নাই। তাড়াতাড়ি। আমি ট্রাকের পেছনে উঠে বসলাম। ড্রাইভারের পাশে বসার জায়গা ছিলো না। সেখানে বড় বড় দুটা বস্তা রাখা ছিলো। ট্রাক চলছে তুফানের মতো। যেন আমি বাতাসের সাথে উড়ে যাবো। আমি শক্ত করে বসে আছি। ভয়ে আমার কলিজা উড়ে গেছে। এ কোন বিপদে পড়লাম। আমি সমানে সূরা ইউনুস পড়ছি। শুনেছি এই সূরা খুব পাওয়ার ফুল। এই সূরা পড়ে নবী মাছের পেট থেকে মুক্ত হয়েছিলেন। কোরআনের ১০ নম্বর সূরা। 'আলাইন্না আওলিয়াআল্লা-হি লা-খাওফুন ‘আলাইহিম ওয়ালা-হুম ইয়াহঝানূন'। সূরা সঠিক ভাবে পড়তে পারছি না। ভুলভাল হয়ে যাচ্ছে। আজ কপালে কি আছে কে জানে! আকাশের দিকে তাকিয়ে বললাম, হে আল্লাহ এ কোন বিপদে ফেললে!

ভাগ্য খারাপ। ট্রাক একসিডেন্ট করলো।
আমি ছিটকে পড়লাম রাস্তার ওপারে। বেশি ব্যথা পাইনি। তবে হাটুর কাছে অনেকখানি ছিলে গেছে। রক্ত পড়ছে। আমি বুদ্ধিমান মানুষ। বুঝে গেলাম এখন 'আহা উহু' করার সময় নয়। আগে বাঁচতে হবে। পেছনে কারা যেন দৌড়ে আসছে। তাদের হাতে বিরাট রাম দা। আরেক হাতে গলা কাটা মাথা। একজনের হাতে শুধু রাম দা দেখতে পেলাম তার অন্য হাত খালি। বুঝে গেলাম লোকটার অন্য হাত খালি কারন সে আমার মাথাটা এখনও কাটতে পারেনি। আমি দৌড়াচ্ছি। দৌড়ে আমি ভালো। স্কুলে থাকতে দৌড় প্রতিযোগিতায় সব সময় প্রথম হতাম। কত কাপ, পিরিচ আর প্লেট পেয়েছি। আমি চোখ মুখ খিচিয়ে দৌড় দিচ্ছি। কিন্তু লোকটাও দৌড়ে ভালো। সে আমার দুই হাত পেছনে চলে এসেছে। কতক্ষন আর দৌড়ানো যায়? আমার দম বন্ধ হয়ে আসছে। আমার ভাগ্য খারাপ। একটা পাথর টুকরার সাথে ধাক্কা লাগলো, আমি লুটিয়ে পড়লাম।

লোকটা আমার বুকের উপর তার এক পা তুলে দিয়েছে।
রাম দা উঁচু করেছে। এখনই সে আমার গলা কাটবে। আমি বললাম, থামো। আমাকে এক মিনিট সময় দাও। মেরেই তো ফেলবে- একবার জানতে চাইবে না আমার শেষ ইচ্ছা কি? লোকটা বলল, বল তোর শেষ ইচ্ছা কি? আমি বললাম, আমি একটা সিগারেট খাবো। বেনসন এন্ড হেজেস। ১৬ টাকা দাম। ১৮৭৩ সালে লন্ডনে এই কোম্পানী যাত্রা শুরু করে। লোকটা ক্ষিপ্ত মেজাজে বলল- বকবক বন্ধ করে দ্রুত সিগারেট খাওয়া শেষ কর। আমি মনে মনে ভাবলাম যাক পাঁচ মিনিট সময় পাওয়া গেলো। এই পাঁচ মিনিটে অনেক কিছুই সম্ভব। এই পাঁচ মিনিটের মধ্যেই আমাকে বেঁচে ফিরতে হবে। আমার স্ত্রী আছে, কন্যা আছে। আমি না থাকলে তাঁরা বড্ড অসহায় হয়ে যাবে। বিরাট বিপদে পড়বে। ওদের জন্যই আমাকে বেঁচে থাকতে হবে।
সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে মে, ২০২২ দুপুর ২:৫০
৬টি মন্তব্য ৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আপনি কি বেদ, উপনিষদ, পুরাণ, ঋগ্বেদ এর তত্ত্ব বিশ্বাস করেন?

লিখেছেন শেরজা তপন, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৫২


ব্লগে কেন বারবার কোরআন ও ইসলামকে টেনে আনা হয়? আর এই ধর্ম বিশ্বাসকে নিয়েই তর্ক বিতর্কে জড়িয়ে পড়ে সবাই? অন্য ধর্ম কেন ব্লগে তেমন আলোচনা হয় না? আমাদের ভারত... ...বাকিটুকু পড়ুন

দুলে উঠে

লিখেছেন সাইফুলসাইফসাই, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:৫৬

দুলে উঠে
সাইফুল ইসলাম সাঈফ

মন খুশিতে দুলে দুলে ‍উঠে
যখনই শুনতে পাই ঈদ শীঘ্রই
আসছে সুখকর করতে দিন, মুহূর্ত
তা প্রায় সবাকে করে আনন্দিত!
নতুন রঙিন পোশাক আনে কিনে
তখন ঐশী বাণী সবাই শুনে।
যদি কারো মনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

তরে নিয়ে এ ভাবনা

লিখেছেন মৌন পাঠক, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১০:৩০

তরে নিয়ে এ ভাবনা,
এর শুরু ঠিক আজ না

সেই কৈশোরে পা দেয়ার দিন
যখন পুরো দুনিয়া রঙীন
দিকে দিকে ফোটে ফুল বসন্ত বিহীন
চেনা সব মানুষগুলো, হয়ে ওঠে অচিন
জীবনের আবর্তে, জীবন নবীন

তোকে দেখেছিলাম,... ...বাকিটুকু পড়ুন

আপনি কি পথখাবার খান? তাহলে এই লেখাটি আপনার জন্য

লিখেছেন মিশু মিলন, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১০:৩৪

আগে যখন মাঝে মাঝে বিকেল-সন্ধ্যায় বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দিতাম, তখন খাবার নিয়ে আমার জন্য ওরা বেশ বিড়ম্বনায় পড়ত। আমি পথখাবার খাই না। ফলে সোরওয়ার্দী উদ্যানে আড্ডা দিতে দিতে ক্ষিধে পেলে... ...বাকিটুকু পড়ুন

কষ্ট থেকে আত্মরক্ষা করতে চাই

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৯



দেহটা মনের সাথে দৌড়ে পারে না
মন উড়ে চলে যায় বহু দূর স্থানে
ক্লান্ত দেহ পড়ে থাকে বিশ্রামে
একরাশ হতাশায় মন দেহে ফিরে।

সময়ের চাকা ঘুরতে থাকে অবিরত
কি অর্জন হলো হিসাব... ...বাকিটুকু পড়ুন

×