
গতকাল মোবাইলে ম্যাসেজ এসেছে।
বুস্টার ডোজের। সকালে আমি সুরভি গেলাম বুস্টার দিতে। যদিও করোনাতো এখন বাংলাদেশে নাই। সাথে করে ছোট কন্যা ফারাজাকে নিয়ে গেলাম। কারন বাসায় কেউ নাই। ফারাজাকে কার কাছে রেখে যাবো? মা গেছে হাসপাতালে। রক্ত পরীক্ষা করতে। একবার খালি পেটে, একবার ভরা পেটে- রক্ত পরীক্ষা করতে হয়। পরীর ফাইনাল পরীক্ষা চলছে। ভাবী পরীকে নিয়ে গেছে। বাসায় আছে শুধু মাত্র আইরিন। আইরিন আমাদের ঘরের কাজে সহযোগিতা করে। আইরিন ফারাজাকে সামলাতে পারবে না। তাই ফারাজাকে নিয়েই যেতে হলো। ফারাজাকে বাইরে গেলে খুব খুশি হয়।
সুরভি আর আমি রেস্টুরেন্টে সকালের নাস্তা সারলাম।
রিকশা করে আমরা মুগদা হাসপাতালে গেলাম। ফারাজা রিকশা পছন্দ করে না। এমনকি সে সিএনজিও পছন্দ করে না। সিএনজি কাঁপে এবং শব্দ করে। এটা ফারাজার পছন্দ না। গাড়ি নিয়ে গেছে বড় কন্যা। যাইহোক, টিকা দিতে গিয়ে ভালো লাগছে, কোনো ভিড় নাই। লম্বা লাইন নাই। গেলাম আর টিকা দিলাম। মুহুর্তের মধ্যে টিকা দিয়ে দিলো, কিছু বুঝতেই পারলাম না। রিকশা করে বাসায় ফিরছি। রাস্তায় একলোক আখের রস বিক্রি করছে। খেলাম। আমাদের রিকশাচালককেও খাওয়ালাম। গরমের মধ্যে আখের রস খেয়ে আরাম পাওয়া যায়। সুরভি আর আমি প্রায়ই খাই। রমজান মাসে ইফতারীতেও খেয়েছি।
রেললাইনের সামনে এসে দেখি-
লিচু বিক্রি করছে। লোকজন পাগলের মতো লিচু কিনছে। অনেকে একটা একটা করে নিজে গুনে নিচ্ছে। আমি দুই শ' লিচু কিনে নিলাম। কিন্তু গুনলাম না। বিক্রেতা যদি কিছু কম দেয়, দিক। তাতে কিছু যায় আসে না। দুই'শ লিচুর মধ্যে কয়টা আর কম দিবে ২০টা? ২০ লিচুর জন্য আমি রাস্তার মধ্যে হাউকাউ করতে পারবো না। এটা আমার স্বভাবে নাই। যাইহোক, দুইশ' লিচুর দাম রাখলো ৭০০ টাকা। লিচু আমি খাই না। তবে সুরভি খুব পছন্দ করে। আগে দুই একটা লিচু মুখে দিতাম এখন তাও খাই না। কারন লিচুতে পোকা থাকে। আমি নিজের চোখে দেখেছি। আপেল কমলা, মালটাতে পোকা থাকে না। তারপর হিমসাগর আমেও পোকা হয় না। আমার পছন্দ আবার হিমসাগর আম। এবার মোট দুই শ' কেজি হিমসাগর আমা কিনবো।
এখন চলছে ভাদ্র মাস।
নানান রকম দেশী ফল পাওয়া যায়। এজন্য অনেকে ভাদ্র মাসকে বলে মধুমাস। রাস্তায় তালের শাঁস বিক্রি হচ্ছে। এক পিছ দশ টাকা করে। তালের শাঁস আমি খাই না। কিন্তু বাসার সবাই খুব আগ্রহ নিয়ে খায়। ৩০ পিছ তালের শাঁস নিলাম। আমি জানি তালের শাঁসে থাকে আয়োডিন, মিনারেলস, পটাশিয়াম, জিঙ্ক ও ফসফরাস। তাল বমিভাব আর বিস্বাদ দূর করতে খুব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। বড় মেয়ে বলল, বাবা তুমি তো এসব খাও না, তবে কিনো কেন? আমি হাসলাম। মেয়ে বলল, বাবা তোমাকে একটা বুদ্ধি শিখিয়ে দেই। লিচু খাবে রাতে। অন্ধকারে। কারন পোকা থাকলেও তুমি দেখতে পাবে না। মেয়ের কাছ থেকে বুদ্ধি পরামর্শ পেতে ভালো লাগে। খুশি খুশি লাগে। আনন্দ হয়।
রাতে গেলাম এক বিয়ের অনুষ্ঠানে।
বিরাট আয়োজন। বড় কনে দুজনেই অস্টেলিয়া থাকে। বিয়ে করতে তাঁরা দেশে এসেছে। আবার চলে যাবে অস্টেলিয়া। সুরভি বিয়েতে আসেনি। কারন বুস্টার দিয়ে তার জ্বর এসে গেছে। যে হাতে টিকা দিয়েছে সেই হাত ব্যথা। আমিও বুস্টার দিয়েছি। আমারও হাত ব্যথা। জ্বর জ্বর ভাব আছে। আমি সাথে সাথে নাপা খেয়ে নিয়েছি। জ্বর আর চান্স পায়নি। বিয়ে বাড়িতে ইচ্ছে মতো খেলাম। খেয়ে প্রেসার বাড়িয়ে ফেললাম। যাইহোক, রাতে বাসায় ফিরে দেখি, সুরভির খুব জ্বর। এবং হাত ব্যথা। হাত নাড়াতে পারছে না। সে না খেয়ে ঘুমিয়ে আছে। সুরভিকে ঘুম থেকে জাগিয়ে জোর করে ভাত খাওয়ালাম। নাপা খাওয়ালাম। এক ঘন্টা পর তার জ্বর চলে গেলো।
সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে মে, ২০২২ দুপুর ১:৪৭

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



