
বিয়েতে খরচের শেষ নেই।
আপনি এক লাখ টাকাও খরচ করতে পারেন আবার এক কোটি টাকাও খরচ করতে পারেন। আবার কোনো টাকা পয়সা খরচ না করে, মসজিদে গিয়ে বিয়ের কাজ সেরে ফেলতে পারেন কয়েকটা খেজুর দিয়ে। বর্তমান যুগ হচ্ছে লোক দেখানো যুগ। এযুগে টাকা লোন নিয়ে ধুমধাম করে বিয়ের অনুষ্ঠান করে থাকে। কেউ কেউ জমি বিক্রি করে। ইসলাম ধর্মে বলা হয়েছে- বিয়েতে অতি খরচ করো না। যে বিয়েতে যত কম খরচ হয়, সে বিয়ে তত বরকতময়। নবীজি নিজে বিয়ে করেছেন। কিন্তু কখনও অতিরিক্ত খরচ করেন নাই। খুরমা খেজুর খাইয়ে বিয়ের অনুষ্ঠান সম্পন্ন করেছেন।
যে বাবা মেয়ে দিবে তারও টাকা খরচ হবে।
আবার যে বাবা ছেলে বিয়ে দিবে তারও টাকা খরচ আছে। তবে আমি বলব মেয়ের বিয়ের সময় পাত্রপক্ষ যদি যৌতুক দাবী করে তাহলে সে ছেলের কাছে মেয়ে বিয়ে দিবেন না। আর ধারধেনা করে বিয়েতে অনেক টাকা খরচ করা বোকামির লক্ষন। ছেলেপক্ষকে আগেই বলে দেওয়া উচিৎ, আমার টাকা নেই। আমি টাকা খরচ করতে পারবো না। এবার আমার মেয়েকে বিয়ে করো, না করলে নাই। দেশে ভালো ছেলে আছে। তাঁরা যৌতুক নেয় না। যারা যৌতুক নেয় তাঁরা লোভী। একজন লোভীর কাছে ভুলেও মেয়ের বিয়ে দেওয়া ঠিক হবে না। প্রয়োজনে মেয়ের বিয়ে দিবেন না, তবু যৌতুক দিবেন না।
প্রচুর টাকা না থাকলে, বিয়ের অনুষ্ঠান করার কোনো দরকার নাই।
ঘরোয়া ভাবে বিয়ে দিলেই হয়। কে কি ভাবলো, সেটা নিয়ে যারা ভাবার ভাবুক। আপনার ভাবার দরকার নেই। অনেক পরিবারকে দেখেছি, কন্যাকে বিয়ে দিতে গিয়ে নিঃস্ব হয়ে যেতে হয়। পাত্রপক্ষ যদি ভালো হয়, তাহলে তাঁরা যৌতুক নেবে না। এমনকি তাঁরা নিজেরাই বলবে প্রচুর টাকা খরচ করার কোনো দরকার নেই। ঘরোয়া ভাবে কাজ সেরে নিলেই হবে। একদিনের একটা অনুষ্ঠানের জন্য কি দরকার আছে লাখ লাখ টাকা খরচ করার? অপচয় করা ঠিক না। হ্যাঁ যতটুকু প্রয়োজন ততটুকু করা যেতে পারে। দশজন যেদিকে আপনি সেদিকে যাবেন না।
আমি বিয়েতে প্রচুর খরচ করার পক্ষে নই।
শহরে একটা মাঝারি মানের কমিউনিটি সেন্টার ভাড়া নিবে ৬০ হাজার টাকা। তিন শ' লোক খাওয়াতে খরচ হবে- দুই লাখ টাকা। ডেকোরেটর খরচ। স্ট্রেজ সাজানো। বিউটি পার্লারের খরচ। পার্লারে বউ সাজতে গেলে- ৫০ হাজার টাকা নেবে। কেন একদিনের একটা অনুষ্ঠানে এত টাকা খরচ করতে হবে? ইহা ভুল। ইহা অন্যায়। যাদের অসৎ টাকা আছে তাদের হিসাব আলাদা। সব মানুষের তো আর অসৎ পথের টাকা নয়। বিয়ের জন্য খুঁজতে হয় একজন হৃদয়বান ছেলে। একজন ভালো শিক্ষিত মানুষ। মানবিক মানুষ। কুসংস্কার মুক্ত মানুষ। ধনী নয়। লোভী নয়।
আমি নিজে একটা টাকা যৌতুক নিই নি।
হাত ঘড়ি, গলার চেন কিচ্ছু না। আমি আমার স্ত্রীর বাবাকে বলেছি- দয়া করে ফালতু খরচ করবেন না। এটা আমার অপছন্দ। আমরা কয়েকজন আত্মীয়স্বজন মিলে ওদের গিয়েছি। বিয়ে করে ফেলেছি। ব্যস শেষ। যদিও আমার বাবা একটা সেন্টার ভাড়া করে একটা অনুষ্ঠান করেছিলো। আব্বাকে আমি মানা করে ছিলাম। আব্বা আমার কথা শুনে না। না শুনুক। এটা তার ইচ্ছা। আব্বার শখ ছিলো ছেলের বিয়ে নিয়ে মাতামাতি করবে, আব্বার তার সখ মিটিয়েছে। আজ আব্বা বেঁচে নেই। আব্বার কথা খুব মনে পড়ে। করোনা আব্বাকে কেড়ে নিলো।
সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই জুলাই, ২০২২ রাত ১১:১৭

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।


