১৯৭১ থেকে ২০২২।
একান্ন বছর হয়ে গেছে দেশ স্বাধীন হয়েছে। আজও মানুষ রাস্তায় ঘুমায়। সরকারি হাসপাতালে দালাল। রাস্তায় জ্যাম। তিন কোটি বেকার। কিশোর কিশোরীরা রাস্তায় কাগজ টোকায়। জুতোর আঠা দিয়ে নেশা করে। অসংখ্য ছেলেমেয়ে স্কুলে যায় না। অপদার্থ সরকার গুলো আজও দেশের মানুষকে সত্যিকারের স্বাধীনতা দিতে পারেনি। এক শ্রেণীর মানুষের হাতে প্রচুর পয়সা, আর দরিদ্ররা হচ্ছে দরিদ্রতর। দরিদ্র ও অসহায় মানুষের চোখে মুখে অদৃশ্য আগুন দাউ দাউ করে জ্বলছে। দেশ কি সঠিক ভাবে চলছে না?
বাজারে গেলে মেজাজ ঠিক রাখা সম্ভব হয় না।
সব কিছুরই আগুন দাম। মাছের বাজারে গেলে মাথা নষ্ট। আমি খেয়াল করে দেখেছি লোকজন বাজার করতে এসে শুধু চক্কর খায়। লোকজনের চোখে মুখে রাগ। কার উপর এই রাগ? অথচ কেউ কেউ ব্যাগ ভরতি করে বাজার নিয়ে যাচ্ছে। দাম নিয়ে তাদের কোনো মাথা ব্যথা নেই। এদিকে এক হালি ডিম ৫০ টাকা! চাষের সস্তা মাছ তেলাপিয়া, পাঙাশ, শিং, কই সেগুলো আগুন দাম! ঢাকার স্বচ্ছল পরিবার গুলো চাষের মাছ খায় না। ফার্মের মুরগী খায় না। আমি টের পাই- সাধারণ মানুষজন ভিতরে ভিতরে ক্ষেপে আছে যেন। মনে মনে গজরাচ্ছে। একটা উপলক্ষ্য পেলেই ফেটে পড়বে।
যারা বাধা বেতনে চাকরি করে,
চুরি জোচ্চুরি না করলে তাদের পক্ষে গাড়ি, বাড়ি, জমি বা ফ্লাট কেনা সম্ভব না। রাডার ভেঙে মানুষ মরছে, আগুনে পুড়ে মানুষ মরছে, একসিডেন্টে মানুষ মরছে, পুলিশ লাঠি পেটা করছে, অতি ধার্মিকেরা মানুষ কুপিয়ে মারছে, মন্ত্রীরা চ্যাটাং চ্যাটাং কথা বলছে, মিথ্যা মামলার খেলা চলছে, ছাত্রলীগ দিনে দুপুরে মানুষ কোপাচ্ছে! পত্রিকাওলারা চাটুকারিতায় ব্যস্ত। ক্ষমতাবানেরা হয়ে গেছে যেন নাৎসী বাহিনী।
সামনেই নির্বাচন।
শেখ হাসিনা থাকতে আর কারো নির্বাচনে জেতার কোনো আশা নেই। রাজনীতির আলাপ আমার ভালো লাগে না। সাধারণ মানুষের কথা বলতেই আমার বেশি ভালো লাগে। মধ্যবিত্তরা নিজেদের অভাব লুকাতে চেষ্টা করে। দারিদ্য লুকোবার চেস্টাটাই আসল মানসিক দারিদ্যের লক্ষণ। মানুষ বাচতে চায়। যেভাবেই হোক বেচে থাকতে চায়। যাদের সামর্থ্য আছে তারা দলে দলে লন্ডন আমেরিকা চলে যাচ্ছে। সকলের এই সুযোগ থাকলে সোনার বাংলায় কেউ থাকতো না। নব্য ধনীরা সবচেয়ে ভালো আছে। সুখে আছে। গত ১৩ বছরে যে পরিমাণ গাড়ি, বাইক, বাড়ি, ফ্লাট, জমি বিক্রি হয়েছে অন্য কোনো সময় এত বেচা বিক্রি হয়নি। এমন কি গত তেরো বছরে লোকজন দেশ বিদেশ সবচেয়ে বেশি বেড়াতে গেছে।
এই দুঃসময়ে যদি একজন নবীর আগমন হতো।
তাহলে বেশ হতো! আমাদের সকল বিপদ থেকে উদ্ধার করতে পারতেন। তাহলে আর সমাজে অন্যায় অবিচার হতো না। যাইহোক, আমাদের পদ্মাসেতু বা মেট্রোরেলের চেয়ে বেশি দরকার ছিলো সঠিক শিক্ষার ব্যবস্থা করা। সকলের জন্য শিক্ষা নিশ্চিত করা। দরিদ্রদের জন্য শিক্ষাই সম্পদ। বেকারদের চাকরি ব্যবস্থা করা। চিকিৎসার মান উন্নত করা। দূর্নীতি বন্ধ করা। খাদ্য উৎপাদন বাড়ানো। ধর্মের ভুল ব্যখ্যা থেকে তরুণ সমাজকে দূর রাখা। আধুনিক টেকনোলজি সম্পর্কে মানুষকে ধারণা দেওয়া। এই গুলোই স্থান পাক সরকারের মেগা প্রজেক্টে।
সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই আগস্ট, ২০২২ সকাল ১০:৪১