
ব্যবসায়ীরা দেশ চালায় না, দেশ চালায় সরকার ও প্রশাসন। আচ্ছা, আমাদের দেশে বর্তমানে কি পরিমান সরকারী জমি আছে? আগে কি পরিমান ছিলো? কৃষক জমি চাষ করেন কিন্তু বেশির ভাগ কৃষক অন্যের জমি চাষ করেন। কৃষকরা আমৃত্যু দরিদ্র। বাংলাদেশের সমস্ত জমির মালিকানা চলে গেছে ধনীদের হাতে। আমেরিকার চেয়ে বাংলাদেশে জমির মূল্য বেশি। দরিদ্র কৃষকরা জমি কিনতে পারে না। জমি কিনছে ব্যবসায়ীরা ও কালো টাকার মালিকেরা। ধনী লোকদের বেশির ভাগ জমিতে চাষাবাদ হয় না। চাষাবাদ নিয়ে ধনীরা মাথা ঘামায় না। ৭২ সালে যে পরিমান জমিতে চাষাবাদ হতো, এখন সেই পরিমান জমিতে চাষাবাদ হয় না। কিন্তু জনসংখ্যা বেড়েছে তিন গুণ। ভবিষ্যৎ বাংলাদেশ থাকবে আমলাদের দখলে। আমলারা সব দখল করে নিবে। দেশ, সমাজ, সাহিত্য, জমি, ব্যাংক।
বাংলাদেশ খুব'ই ছোট্ট একটা দেশ। বিশ্বের উন্নত দেশ গুলো বাংলাদেশ নিয়ে মাথা ঘামায় না। সহজ সরল সত্য কথা হলো- গত ৫২ বছরে 'বাংলাদেশ' ছোট মগজের দেশে পরিণত হয়েছে। পদ্মাসেতু করার জন্য আমাদের বিদেশ থেকে লোক আনতে হয়। আমাদের বিসিএস'দের মাথায় এমন কি মগজ আছে যে, তারা দরকারী কিছু ভাবতে পারবে? আমাদের বিসিএস'দের ঘাড়ে একটাই মাথা আছে, সেটা তারা উচু করে কথা বলার সাহস রাখে না। তাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যা বলেন- হাত কচলাতে কচলাতে সেটাতেই 'হা' বলতে হয়। আমাদের দেশের প্রধানমন্ত্রীর সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্ন শুনে মনে হয় যে, তারা একটা প্রশ্ন করার সুযোগ পেয়ে ধন্য হয়ে গেছে তাদের জীবন। তারা প্রশ্ন করেন না, যতটা পারেন প্রশংসা করেন মাত্র। বিসিএস'রা মুখে বলে, 'আপা সব জানে'। বাস্তবতায় উনাকে তারা কৌশলে বেগম জিয়া বানায়ে ফেলেছে। আপনার চারপাশে বেকুব থাকলে, খুব অল্প দিনে আপনি বেকুব হয়ে যাবেন।
এই আধুনিক যুগে এসেও- আফ্রিকার অনেক দেশ, ইয়েমেন ও আফগানিস্তানে মানুষ না খেয়ে আছে। প্রতিদিন ইয়েমেনে ও সোমালিয়ায় শিশুদের বিনা চিকিৎসায় মৃত্যূ হচ্ছে। বিশ্বে এখনো যেই পরিমাণ খাবার উৎপন্ন হয়, তা পৃথিবীবাসীর জন্য যথেষ্ট। কিন্তু অনেক দেশের ক্রয় ক্ষমতা নেই। আবার আফ্রিকানরা রিলিফের দিকে চেয়ে বসে থাকে সারা বছর। তাঁরা এখন খাবারের জন্য, বেঁচে থাকার জন্য ইশ্বরকে ডাকে না। তাদের একমাত্র ভরসা ইশ্বর 'রেডক্রস'। রেডক্রস কিছু করার চেষ্টা করছে। আল্লাহ তো আর আকাশ থেকে নেমে এসে দরিদ্রদের মুখে খাবার দিবেন না। আল্লাহ কাজ করেন উছিলার মাধ্যমে। রেডক্রস হলো আল্লাহতালার উছিলা। দরিদ্র ধার্মিকদের জীবন কাটে অদৃশ্য ঈশ্বরের মুখের দিকে তাকিয়ে। মুসলিম ধার্মিকদের ভরসা 'আমল' আর 'নেয়ামত'। তাঁরা আমল করে-করে জীবন পার করে দেয়। কিন্তু তাদের কপালে আর 'নেয়ামত' জুটে না। একদিন তাঁরা মরে যায়। আমল আর নেয়ামতের চিন্তা বাদ দিয়ে তাঁরা যদি পরিশ্রম করতো, তাহলে জীবনে সফলতা পেতো।
বট গাছের নীচে দাড়ালে, বট গাছের ছায়া পড়ে। বিশ্ব যে কোনো দুই দেশ যুদ্ধ করলে, তাঁরা ছায়া পৃথিবীর সকল দেশের উপর পড়ে। কিছু কিছু দেশ অনেক শক্তিশালী। যুদ্ধ করে রাশিয়াকে কিছু করতে পারবে না কেউ। মূলত যুদ্ধ চলছে রাশিয়া ও ন্যাটোর মাঝে। ইউক্রেন হচ্ছে প্রক্সি। যুদ্ধ থামানোর ভুমিকায় থাকার কথা ছিলো ইউরোপ, কিন্তু তারা এখন ন্যাটো। ন্যাটো চাচ্ছে পুটিনকে সরাতে। ফলে, সবকিছু শ্লো হয়ে গেছে। এই যুদ্ধের প্রভাব পড়েছে আমাদের মতো একটা দরিদ্র দেশে। ছোট্র একটা উদাহরণ দেই- এক ডজন ডিম ১৫০ টাকা। সরকার পদ্মাসেতু করেছে, মেট্রোরেল করছে কিন্তু তাঁরা বাজার নিয়ন্ত্রণ করতে পারেনি। ইহা দুঃখজনক। আমাদের দেশে সব সম্ভব। বাংলাদেশ হচ্ছে সব সম্ভবের দেশ। বাংলাদেশ হচ্ছে দুষ্টলোকদের দেশ। বাংলাদেশ হচ্ছে দূর্নীতিবাজদের দেশ। অথচ প্রতিটা রাস্তার মোড়ে মোড়ে মসজিদ। ঘরে ঘরে ধার্মিক লোক। অর্থাৎ ধর্ম মানুষকে সঠিক পথে আনতে পারে না।
আমাদের দেশে দুই শ্রেনী লোকের সংখ্যা প্রচুর বেড়েছে। এক, ধার্মিক। দুই, নব্যধনী। সমাজের জন্য এই দুই শ্রেনীই সর্বনাশ ডেকে আনছে। ধার্মিকেরা ফেসবুকে জিহাদ করে। কথায় কথায় মাশাল্লাহ, আলহামদুলিল্লাহ বলবে। অথচ মসজিদে গিয়ে নামাজ পড়বে না। আর নব্যধনীরা হাতে কাঁচা টাকা পেয়ে মাথা আউলায়ে ফেলেছে। দুঃখজনক কথা হলো- শেখ মুজিবের সোনার বাংলায় কোনো খাটি 'মানুষ' নেই। চারিদিকে ঠক, প্রতারক আর ভন্ডদের ভিড়। ভবিষ্যৎ পৃথিবীটা কি রকম হবে জানেন? ভবিষ্যৎ পৃথিবীটা হবে মারাত্মক ভয়াবহ। কারো মধ্যে কোনো মায়া-দয়া থাকবে না। সেই আরবের অন্ধকারের যুগে ফিরে যাবে মানুষ। যা মন চায় মানুষ তাই করবে। এমন একটা সময় আসবে পৃথিবীতে- যখন মানুষ, মানুষের মাংস খাবে।
সর্বশেষ এডিট : ২১ শে অক্টোবর, ২০২২ রাত ৮:৩৬

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




