মিরপুর বেড়িবাঁধ। রাত ১১ টা।
একজন পুলিশ সামনে এগিয়ে চলেছে, তার হাতে পিস্তল। পিস্তলে ছয়টা গুলি লোড করা আছে। জাস্ট টিগারে চাপ দিলেই হবে। প্রতিদিন বেড়িবাধের কাছে বিক্রি হচ্ছে ইয়াবা সহ অন্যান্য ড্রাগ। এর আগে বেশ কয়েকজন পুলিশ ইয়াবা বিক্রেতাদের ধরতে এসে ফিরে গেছে। কারন, ইয়াবা বিক্রেতার সাথে স্থায়ীয় এমপি'র সুসম্পর্ক। এছাড়া ইয়াবা বিক্রেতা ইয়াকুব থানায় প্রতিমাসে মোটা অংকের টাকা দেয়। তাই তার ভয়ডর কম। ঢাকা শহরের বিভিন্ন এলাকায় ইয়াকুব ইয়াবা বিক্রি করছে দীর্ঘসময় ধরে। এদিকে যুব সমাজ ইয়াবা খেয়ে ঝিমাচ্ছে। পরিবারের কষ্ট। সারা ঢাকা শহরেই একই অবস্থা। পুলিশ অফিসার রাজীব নূর একজন সৎ ও সাহসী অফিসার। তার হাতে ধরা খাওয়া মানে ক্রফায়ার।
এর আগে বহুবার ইয়াবা বিক্রিকারীদের রাজীব নূর গ্রেফতার করেছে।
কিন্তু তাঁরা এতটাই ক্ষমতাবান যে থানা থেকেই ছাড়া পেয়ে যায়। দুইএকজন কোর্ট থেকে ছাড়া পেয়ে যায়। ছাড়া পেয়ে তাঁরা আবার ইয়াবা বিক্রি করে। এমতাবস্থায় অফিসার রাজীব নূর আজ একা এসেছে মিরপুর বেড়িবাঁধ এলাকায়। রাজীব নূর তাদের গ্রেফতার করবে না। একদম জানে শেষ করে দিবে। সমাজে কিছু দুষ্টলোক আছে তাঁরা কখনও ভালো হবে না। এদের সুযোগ দেওয়া মানে বিরাট ভুল করা। রাজীব নূর খান এই ভুল করবে না। রাজীবের ধারনা ঢাকা শহর থেকে দশ জন ড্রাগ বিক্রেতাকে হত্যা করতে পারলে- সবার মধ্যে একটা ভীতির সৃষ্টি হবে। বর্ডার পার হয়ে সারা বাংলাদেশে ইয়াবা পৌঁছে যাচ্ছে। একটা দেশের আইন শৃঙ্খলা বাহিনী যদি সৎ হয়, তাহলে দেশে অপকর্ম করে পার পাওয়া সম্ভব হতো না। সব নষ্টের মূল পুলিশ আর ছাত্রলীগ। এরা ভয়ঙ্কর।
মোটামোটি অন্ধকার রাস্তা।
একটা ইটভাটার সামনে থরে থরে অনেক ইট সাজানো আছে। ফিসফিস শব্দ পাওয়া যাচ্ছে। ইয়াকুব সহ আরো কয়েকজন সেখানে আছে। রাজীব নূর সামনে গিয়ে দাঁড়ালো। তার হাতে পিস্তল। ইয়াকুব একজন পুলিশ অফিসার দেখে মোটেও ভয় পেলো না। সে বলল, থানায় তো প্রতি মাসের এক তারিখেই টাকা দেওয়া হয়। তাহলে আপনি এখানে কেন? রাজীব বলল, ইয়াকুব এ পর্যন্ত তুমি পুলিশের হাতে ১১ বার ধরা পড়েছো। প্রত্যেকবার তুমি ছাড়া পেয়ে গেছো। তাই আজ আমি তোমাকে গ্রেফতার করবো না। তোমাকে গুলি করবো। ইয়াকুব বিশ্রী করে হাসলো। বলল, পুলিশ অফিসার আজ তুমি এখান থেকে জীবিত ফিরে যেতে পারবে না। এটা আমার আড্ডাখানা। ঠিক এমন সময় রাজীব নূর ইয়াকুবের বুকে পরপর দুটা গুলি চালিয়ে দিলো। বাংলাদেশ থেকে একজন দুষ্টলোকের অবসান হলো।
প্রতিটা স্কুল কলেজের সামনে কিছু চ্যাংড়া পোলাপান দাঁড়িয়ে থাকে।
তাঁরা মেয়েদের বিরক্ত করে। যুগ যুগ ধরেই এরকম হয়ে আসছে। কেউ এই সমস্যা সমাধানের জন্য কেউ এগিয়ে আসে নাই। তাই রাজীব নূর আজ সিদ্দেশরী গার্লস কলেজের সামনে এসেছে। হ্যাঁ একদল চ্যাংড়া দাঁড়িয়ে আছে। কলেজ ছুটি হয়েছে, মেয়েরা বের হয়ে আসছে। বখাটেরা সিস দিচ্ছে, বাজে কথা বলছে। বাজে অঙ্গভঙ্গি করছে। ঠিক এমন সময় রাজীব নূর একটা বখাটে দলকে পাকড়াও করলো। লাঠি দিয়ে তাদের মারলো কিছুক্ষন। বখাটে গুলো ক্ষমা চাচ্ছে। তখন রাজীব নূর প্রত্যেক বখাটেদের পিতা মাতাকে ফোন দিলো। বলল, আপনারা ছেলে জন্ম দিয়েছেন ভালো কথা, এই ছেলে কোথায় যায়, কি করে তার খোজ খবর রাখেন না কেন? আপনারা একজন ছেলে নয়, একজন বখাটে জন্ম দিয়েছেন। থানায় এসে মুচলেকা দিয়ে আপনার বখাটে কে ছাড়িয়ে নিয়ে যান।
বাংলাদেশ হলো দুষ্টলোকদের দেশ।
এখানে ভালো মানুষরা কোনঠাসা হয়ে যায়। ঠিক তেমনি একজন ভালো অফিসারের বারবার বদলি হয়ে যায়। এমনকি সাসপেন করা হয়। রাজীব নূর একজন ভালো পুলিশ অফিসার। ইয়াবা ব্যবসায়ীদের ক্রসফায়ার করার কারনে রাজীব নূর কে সাসপেন করা হয়েছে। এবং এর আগে একবার এক প্রতি মন্ত্রীর ভাগ্নে কে বখাটে বলায় রাজীব নূরকে থানচি এলাকায় পাঠানো হয়। একজন সাংবাদিক যেমন নিজের ইচ্ছায় লিখতে পারেন না। তাকে লিখতে হয় সম্পাদকের ইচ্ছায়। ঠিক তেমনি একজন পুলিশ অফিসার ইচ্ছা থাকলেও ন্যায়ের পথে কাজ করতে পারে না। উপরের আদেশ মানতে হয়। উপরের আদশে সঠিক কাজ করা যায় না। সঠিক কাজ করতে গেলেই বদলি অথবা সাসপেন।
সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২২ বিকাল ৫:৫১