somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

রাজীব নুর
আমার নাম- রাজীব নূর খান। ভালো লাগে পড়তে- লিখতে আর বুদ্ধিমান লোকদের সাথে আড্ডা দিতে। কোনো কুসংস্কারে আমার বিশ্বাস নেই। নিজের দেশটাকে অত্যাধিক ভালোবাসি। সৎ ও পরিশ্রমী মানুষদের শ্রদ্ধা করি।

আমাদের শাহেদ জামাল- (সাতচল্লিশ)

২৬ শে ডিসেম্বর, ২০২২ দুপুর ১:৩৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



শাহেদ জামাল সারাদিন যে বইটি পড়ে শেষ করলো- সেটার নাম- 'ঈশ্বরপুত্র'।
লেখক- প্রফুল্ল রায়। বইটির ঘটনাপ্রবাহ আবর্তিত হয়েছে মাইকেল সমরেশ দত্ত নামের এক বিপত্নীক মানুষকে ঘিরে। মাইকেল সমরেশ আদর্শহীন মানুষদের মধ্যে বিরলতম চরিত্র। নারী পাচার চক্রের কবল থেকে একটি সরল গ্রাম্য যুবতীকে বাচাতে গিয়ে কোন মূল্য দিতে হয় তাকে, তাই নিয়ে এই আশ্চর্য আখ্যান 'ঈশ্বরপুত্র'। যাইহোক, শাহেদ জামাল এক মগ চা নিয়ে ব্যলকনিতে এসে দাঁড়ালো। রবীন্দ্রনাথের চেয়ে রামমোহন রায়, ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের অবদান অনেক বেশি। অথচ লোকে রবীন্দ্রনাথের বন্দনা বেশি করে। এর কারন কি? আবার রবীন্দ্রনাথের চেয়ে তার দাদা দ্বারকানাথের অবদান অনেক বেশি। অথচ ভারতবর্ষের লোকজন দ্বারকানাথের নাম একবার নিলে রবীন্দ্রনাথের নাম দশ বার মুখে নেয়।

সম্প্রতি শাহেদ জামাল চোখের ডাক্তার দেখিয়েছে।
ইদানিং তার খুব মাথা ব্যথা হয়। শাহেদ জামালের মা বলেছেন, তুমি চোখের ডাক্তার দেখাও। শাহেদ গেলো চোখের ডাক্তারের কাছে। ডাক্তার মহিলা বললেন, সমস্যা কি? শাহেদ বলল, মাথা ব্যথা করে। ডাক্তার হেসে বললেন, তাহলে মাথার ব্যাথার ডাক্তারের কাছে যান। চোখের ডাক্তারের কাছে কেন? যাইহোক, ডাক্তার চোখ দেখলেন। চশমা দিলেন। চোখের একটা ড্রপও দিলেন। সেই ড্রপ দুই মাস ব্যবহার করতে হবে। সেই চশমা শাহেদ এখনও টানা পাঁচ মিনিট পড়েনি। কারন চশমার ফ্রেম পছন্দ হয়নি। অবশ্য ডাক্তার বলেছেন, চশমা সব সময় পড়তে হবে না। বই পড়ার সময় পড়লেই চলবে। ছোট লেখা পড়তে শাহেদ জামালের বেগ পেতে হয়। কাছের জিনিস দেখতেও সমস্যা। দূরের জিনিস ঠিকঠাক আছে।

Spectacle শব্দের অর্থ- মনোরম দৃশ্য।
মজার বিষয় হচ্ছে- Spectacles অর্থ- চশমা। আরো একটা ব্যাপার শাহেদ জামালের বেশ মজার মনে হয়েছে। তা হলো- চশমা শব্দটার একটা সমার্থক শব্দ হচ্ছে উপনেত্র। যার অর্থ দাঁড়ায়- 'চোখের মতো'। সে যাকগে, আসল কথা হচ্ছে গতকাল রাতে শাহেদ একটা স্বপ্ন দেখেছে। স্বপ্নটা বেশ ভয়াবহ। একটা ঘর। পুরো ঘরে সাদা রঙ করা। জানালার পর্দা গুলো সাদা। এমনকি ফ্লোরের টাইলস গুলোও সাদা। এই ঘরটা কোথায় শাহেদ জানে না। এই ঘরে সে কি করে এলো সেটাও সে জানে না। ঘরে একটা খাট। খাটে একজন শুয়ে আছে। তার সমস্ত শরীর সাদা কাপড়ে ঢাকা। মৃত্যু মানুষকে এভাবেই সাদা কাপড় দিয়ে ঢেকে রাখা হয়। শাহেদ জামাল খাটের কাছে যায়। এবং ভয়ে ভয়ে সাদা কাপড়টা সরায়। এবং সে নিজেকেই দেখতে পায়।

শাহেদ অনেকদিন ধরে রমনা পার্কে যায় না।
সে শুনেছে পার্ক এখন আগের চেয়ে অনেক সুন্দর করা হয়েছে। একদম সাজানো গোছানো টিপটপ। কিন্তু এখন যখন তখন পার্কে যাওয়া যায় না। নিয়ম বেঁধে দিয়েছে। পার্কে যাবার আবার নিয়ম নীতি কি? মানুষের যখন ইচ্ছা তখন যাবে। কত দুপুর সে পার্কে ঘুমিয়েছে। পার্কের সমস্ত বাদাম বিক্রেতা, চা বিক্রেতা তাকে চিনতো। এমনকি ভিক্ষুকরাও শাহেদ জামালকে খুব ভালো করে চিনতো। শাহেদ কয়েকদিন পার্কে না গেলেই চা বিক্রেতা, বাদাম বিক্রেতা আর ভিক্ষুকরা তার খোজ নিতো। পার্ক কোন মন্ত্রনালয়ের আন্ডারে? ওদের সাথে কথা বলতে হবে। যেন তাঁরা পার্ক ভোর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত খোলা রাখে। দরকার হলে শাহেদ জামাল পত্রিকাতে এ বিষয়ে লিখবে।
শাহেদের ঢাকা শহরের সবচেয়ে প্রিয় জায়গা হচ্ছে রমনা পার্ক।

শাহেদ আজ যাবে তার বন্ধুর বাসায়।
বন্ধুর নাম রাজীব নূর। 'নিজেকে মৃত দেখা' রাজীব নিশ্চয়ই এর স্বপ্নের সঠিক ব্যাখ্যা দিতে পারবে। এইসব বিষয় সে ভালো বুঝে। তাছাড়া রাজীবের স্ত্রী সুরভি ভাবী বেশ ভালো রান্না করে। শাহেদ রাজীবের বাসায় গেলে তাঁরা ডিনার খাইয়ে দিবেই। শাহেদ জামাল কি মনে করে একটা সাড়ে তিন কেজি ওজনের রুই মাছ কিনে নিলো। মাছ দেখে সুরভি অবাক! বলল মাছ কেন? শাহেদ বলল, ভাবী অনেকদিন আগে আপনার হাতে রুই পোস্ত খেয়েছিলাম। সেই স্বাদ আজও মুখে লেগে আছে। আজ আমি রুই পোস্ত খাবো। সুরভি বলল, কিন্তু রুই মাছ তো ফ্রিজে আছে। শাহেদ বলল, ফ্রিজের মাছ খাবো না। টাটকা মাছ খাবো। প্লীজ ভাবি পোস্ত করুণ। আর প্লেন পোলাউ। সুরভি রান্নাঘরে গেলো। বসার ঘরে দুই বন্ধু বসলো। শাহেদ বলল, বন্ধু একটা স্বপ্ন দেখেছি। সেটার ব্যাখ্যা বলে দাও।
সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে ডিসেম্বর, ২০২২ দুপুর ১:৩৪
৫টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আগুন যখন প্রশ্নকে পোড়াতে আসে

লিখেছেন এস.এম. আজাদ রহমান, ২২ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:৩২

আগুন যখন প্রশ্নকে পোড়াতে আসে[

স্বাধীন সাংবাদিকতার কণ্ঠরোধে রাষ্ট্রীয় ব্যর্থতা, মব-রাজনীতি ও এক ভয়ংকর নীরবতার ইতিহাস
চরম স্বৈরশাসন বা ফ্যাসিবাদী রাষ্ট্রেও সাধারণত সংবাদমাধ্যমের কার্যালয়ে আগুন দেওয়ার সাহস কেউ করে না। কারণ ক্ষমতা... ...বাকিটুকু পড়ুন

=হিংসা যে পুষো মনে=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২২ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:৫৮


হাদী হাদী করে সবাই- ভালোবাসে হাদীরে,
হিংসায় পুড়ো - কোন গাধা গাধিরে,
জ্বলে পুড়ে ছাই হও, বল হাদী কেডা রে,
হাদী ছিল যোদ্ধা, সাহসী বেডা রে।

কত কও বদনাম, হাদী নাকি জঙ্গি,
ভেংচিয়ে রাগ মুখে,... ...বাকিটুকু পড়ুন

গণমাধ্যম আক্রমণ: হাটে হাঁড়ি ভেঙে দিলেন নূরুল কবীর ও নাহিদ ইসলাম !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ২৩ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:০৫


জুলাই গণঅভ্যুত্থানের রক্তস্নাত পথ পেরিয়ে আমরা যে নতুন বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখেছিলাম, সাম্প্রতিক মব ভায়োলেন্স এবং গণমাধ্যমের ওপর আক্রমণ সেই স্বপ্নকে এক গভীর সংকটের মুখে দাঁড় করিয়ে দিয়েছে। নিউ এজ... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিএনপিকেই নির্ধারণ করতে হবে তারা কোন পথে হাটবে?

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ২৩ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:০৫




অতি সাম্প্রতিক সময়ে তারেক রহমানের বক্তব্য ও বিএনপির অন্যান্য নেতাদের বক্তব্যের মধ্যে ইদানীং আওয়ামীসুরের অনুরণন পরিলক্ষিত হচ্ছে। বিএনপি এখন জামাতের মধ্যে ৭১ এর অপকর্ম খুঁজে পাচ্ছে! বিএনপি যখন জোট... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতীয় আগ্রাসনবিরোধী বিপ্লবীর মৃত্যু নেই

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ২৩ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:৩৭



শরিফ ওসমান হাদি। তার হাদির অবশ্য মৃত্যুভয় ছিল না। তিনি বিভিন্ন সভা-সমাবেশ, আলোচনা ও সাক্ষাৎকারে বক্তব্য দিতে গিয়ে তিনি অনেকবার তার অস্বাভাবিক মৃত্যুর কথা বলেছেন। আওয়ামী ফ্যাসিবাদ ও ভারতবিরোধী... ...বাকিটুকু পড়ুন

×