
দেশে তথাকথিত নব্য ধার্মিক ও মুমিনদের সংখ্যা খুব বেশী বেড়ে গেছে।
নব্য ধনী এবং নব্য ধর্মিকেরা সমাজের জন্য ক্ষতিকর। ঘরে-বাইরে এবং অনলাইনে অনেক কোয়ালিটির নব্য ধার্মিকদের জন্ম হয়েছে। এদের বলা যেতে পারে- ফেসবুক মুমিন, ইউটিউব মুমিন এবং টিকটকার মুমিন বা ধার্মিক। এই শ্রেনীর ধার্মিকগন বা মুমিনগন নিজে নামাজ পড়ে না, অথচ ফেসবুকে কোনো ইসলামি পোস্ট দেখুক না কেন, 'আমিন'-'আমিন' কমেন্ট করতেই থাকে!
কোথাও লেখা দেখলেই হলো- ''যারা যারা আল্লাহকে ভালোবাসেন এই পোস্টে লাইক দিন''।
দেখা যায়- মূহুর্তের মাঝে লাইকে ভেসে গেল সেই কমেন্ট। আচ্ছা আমি যে আল্লাহকে ভালোবাসি সেটা কি ওই পোস্টে লাইক দিয়ে প্রমাণ করতে হবে? নব্য ধার্মিকদের কর্মকান্ড বেশ হাস্যকর। মগজহীন প্রজন্ম। আমার কথা হলো যে দেশে এত এত ধার্মিক, এত এত আমিনওলা আছে সেই দেশের লোকজন এত দূর্নীতি করবে কেন? সেই দেশের লোকজন ফুটপাতে ঘুমাবে কেন? সেই দেশের হাসপাতালে দালাল থাকবে কেন?
এই যে ফেসবুক, ইনস্টা, টিকটক বা ইউটিউবে 'আমিন' 'আমিন' কমেন্ট করা বা ধর্মীয় পোস্ট দেখলেই লাভ রিয়্যাক্ট, শেয়ারের বন্যা বইয়ে দেওয়া লোকগুলো কী আদৌ এসব বুঝে শুনে করে? আই মিন, নামাজ রোজা বাদ দিয়ে এসব করে বেড়ালে তারা ঠিকঠাক মতো জান্নাতে যাবে তো? ধার্মিক গুলো এত নির্বোধ হয় কেন? নাকি মগজহীনেরাই ধার্মিক হয়? এই হুজুগে ও জ্ঞান বুদ্ধিহীন প্রজন্ম থেকে জাতি কি পাবে? এই সমস্ত ধার্মিক এবং মুমিনরা কি প্রশ্নপত্র ফাঁস জেনারেশন থেকে এসেছে? নইলে হিরো আলম রবীন্দ্র সংগীত গায় কি করে? সমাজের দুষ্টলোকদের নিয়ে মানুষ এত মাতামাতি করে কেন?
ফেসবুকে জামালপুরের সুমাইয়া নামে জনৈক নারী পোস্ট দিলোঃ
'ফুরাত নদীতে সোনার খনি বেরিয়েছে, কিয়ামত সন্নিকটে! কিয়ামত সম্পর্কীত মহানবীর সমস্ত ভবিষ্যৎ বাণী সত্য প্রমাণিত হচ্ছে'। মূহুর্তের মাঝে লাইক, 'আমিন' কমেন্ট আর শেয়ারের নোটিফিকেশনে হ্যাং হয়ে গেল সুমাইয়া আপুনির ফেসবুক অ্যাপ। দেশের দূর্গম প্রান্ত থেকে আমিন, আমিন কমেন্টের ঢল আসতে লাগল। যারা 'আমিন' 'আমিন' লিখেছে তারাই আবার পর্ন সাইট গুলোর আসল দর্শক। রাস্তায় মেয়ে দেখলে কুৎসিত ভাবে হা করে তাকিয়ে থাকে।
এইসব আমিনওলারা মনে করেন এবং বিশ্বাস করেন,
নামাজ পড়ার থেকেও সুমাইয়া আপুর ওই পোস্টে আমিন, আমিন কমেন্ট করাটাই বেশি জরুরি! তাকে প্রমান দিতে হবে, সে যে মুসলমান এবং ধার্মিক। তাছাড়া আমিন লিখলে সোয়াব পাওয়া যাবে। এই সমস্ত ধার্মিকদের, মুমিনদের পরকালে সোয়াবের দরকার আছে। ধার্মিকেরা সোয়াব চায়। নেকী চায়। তাই তাঁরা আমল করে। আমলের ফজিলত আছে। ওয়াজে হুজুর কান্না করতে করতে কবরের আযাবের বনর্না দিয়েছেন। এবং তিনি কবরের আযাব থেকে মুক্তির উপায় বলে দিয়েছেন, সূরা মূলক বারবার পড়তে হবে। আরো বলেছেন কোন সূরা পড়লে বিপদ কেটে যাবে। হুজুর বলেছেন, ভূমিকম্প হলে অথবা কোথাও আগুন লাগলে আজান দিতে। তাহলে ভূমিকম্প থেমে যাবে। আগুন নিভে যাবে। তাহলে ফায়ার সার্ভিসের কাজ কি?
সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই জানুয়ারি, ২০২৩ বিকাল ৩:৫৫

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



