
১। বছরের প্রথম দিনেই একটা বিয়ের অনুষ্ঠানে দাওয়াত ছিলো।
অনুষ্ঠান রাতে। কিন্তু আমাদের বলা হলো সকাল দশটার মধ্যেই চলে আসতে। আমি বেশ অবাক হলাম বিয়ের প্রোগাম রাতে। তাহলে সকাল দশটায় কেন যাবো! ঢাকার কাছেই পূবাইল। সেখানেই একটা বিশাল কনভেনশন হল। সেখানেই বিয়ে হচ্ছে। গাছপালা দিয়ে ভরা। পুকুর আছে। বাগান আছে। ছোট ছোট তিনটা মাঠ আছে। বাচ্চাদের জন্য আলাদা জোন আছে। লাইব্রেরী আছে। এলাহি কান্ড কারখানা। পুরো এলাকা সাজিয়েছে ফুল দিয়ে। শুনেছি দশ দিন সময় লেগেছে সাজাতে। কনভেশন হলের পেছন দিক দিয়ে গিয়েছে এক অতি সরু নদী। নদীর নাম সম্ভবত বালু নদী। আমরা সকাল এগাটায় পৌঁছে গেলাম। ঢাকার মতোন খুপরি কমিউনিটি সেন্টার না। বিশাল জায়গা জুড়ে। সুন্দর সুন্দর মেয়েরা নাচ গান করছে।
এর মধ্যেই প্রচুর লোকজন এসে গেছে।
পুরো জায়গাটি খুবই সুন্দর করে সাজিয়েছে। বছরের প্রথম দিন। আবার বিয়ের অনুষ্ঠান। বর কনে চলে এসেছে। আরো অনেক মানুষজন। ১০/১৫ জন ফোটোগ্রাফার নানান ভঙ্গিমায় তাদের ছবি তুলছে। আমি ফারাজাকে নিয়ে ঘুরে ঘুরে সব দেখছি। সুরভি বসে আছে। রোদ নেই। বেশ শীত। চারিদিকে কুয়াশা। নানান রকম মজাদার খাবার সাজানো। যেটা পছন্দ নিয়ে নিয়ে খাও। নাচে গানে সারা দিন পার হয়ে গেলো। রাতের খাবার খেতে বসলাম। কাচ্চি। ধোয়া ওঠা গরম গরম কাচ্চি। চাউল কম, মাংস বেশি। সাদা ভাত, গরুর মাংস, ডাল সব কিছুই আছে। ভর্তা বাজিও আছে। বিকেল থেকেই শীঈতের মাত্রা বেড়েছে। অথচ খাবার গুলো আগুন গরম। আমি তিন প্লেট খাবার খেয়ে নিলাম। খাবার স্বাদ হয়েছে। খোজ নিয়ে জানলাম চেন্নাই থেকে এক বাবুর্চিকে আনা হয়েছে। জানলাম, পৃথিবীর অনেক দেশে গিয়ে তিনি বিয়ের অনুষ্ঠানের রান্না করেছেন।
২। আমাদের এলাকায় বখাটেদের সংখ্যা বেড়ে গেছে।
আসলে পুরো ঢাকা শহরেই বখাটেদের সংখ্যা বেড়ে গেছে। ঘটনা হলো আমি সকালে আমাদের এলাকায় এক হোটেলে নাস্তা খেতে বসেছি। তিনজন বখাটে আমার পাশের টেবিলে থাকা এক ছেলেকে কুৎসিত গালাগালি করছে। আমি অবাক এই বয়সেই এমন কুৎসিত গালি দিচ্ছে! যাকে গালি দিচ্ছে তার বয়স বেশি না। হয়তো বেকারির শ্রমিক হবে ছেলেটা। এক বখাটে বলল, আজকে তোর কলিজা বের করে ফেলব। আমি বললাম, কি অন্যায় করছে? যে তার কলিজা টেনে বের করবে? বখাটে আমাকে বলল, আফনে চুপ কইরে থাইকেন। আমি বলাম, আমি চুপ করে থাকবো কেন? কথা গুলো তো আমার কানে এসেছে। আর তোমরা কারো কলিজা টেনে বের করতে পারো না। এই অধিকার তোমাদের নেই। দেশে আইন আছে। বখাটে গুলো রেগেমেগে কাকে কাকে যেন ফোন করলো। মুহুর্তের মধ্যে ২৫/৩০ জন বখাটে চলে এলো। তাঁরা চোখের ইশারায় আমাকে বলল, তুমি হোটেল থেকে বের হও, তারপর তোমাকে শিক্ষা দিচ্ছি।
৩। গলির মুখে সব সময় জটলা পাকিয়ে পোলাপান সিগারেট খায়।
এই গলি দিয়ে প্রতিদিন অসংখ্য মানুষ যাতায়াত করে। আমি নিজেই কন্যাকে নিয়ে এই গলি দিয়ে যাতায়াত করি। ধোঁয়ায় পুরো গলি অন্ধকার হয়ে যায়। আমি অনেকদিন ছেলে গুলোকে বলেছি, তোমরা এখানে সিগারেট খেও না। মানুষকে বিরক্ত করো না। অন্য কোথাও গিয়ে সিগারেট খাও। আমার কথা শুনে না। গতকাল দেখি গলির মুখে আড্ডা বসিয়ে দিয়েছে। চিৎকার চেচামেচি করছে। সিগারেটের ধোঁয়ায় কিছু দেখা যায় না। আমার খুব রাগ হলো। আমি বললাম, ছাগলের দল কতবার বলেছি এখানে সিগারেট খাবে না। কথা কানে যায় না? স্কুলে পড়া অল্প বয়সী পোলাপান গুলো রেগে গেলো। বলল, এখানেই সিগারেট খাবো। পারলে কিছু কইরেন। যান, ফুটেন। আমি বেশ অবাক হলাম। এই এলাকায় আমার জন্ম। সারাটা জীবন এখানেই পার করে দিচ্ছি। অথচ গুটিকয়েক পোলাপান কোথা থেকে এসে আমার সাথে এভাবে কথা বলছে!
ঘটনা এখানেই শেষ না। আরো আছে।
আমার খুব রাগ হলো। আমি একটাকে কসিয়ে এক থাপ্পড় দিলাম। আমার থাপ্পড় খেয়ে ছিটকে পড়লো। একটু পর দেখি ৫০/৬০ জন চ্যাংড়া পোলাপান এসে হাজির। ওরা আমাকে মারবে। ওদের হাতে লাঠি। হকিস্টিক। আমার বাসার সামনে এসে খুব হুমকি ধামকি দিচ্ছে। প্রত্যেকে খুব উত্তেজিত। এই হলো অবস্থা। বাসার সামনে তুমুল হইচই। তাঁরা এক পাতি নেতাকে সাথে করে নিয়ে এসেছে। সেই নেতা নাকি রাজনীতি করে। ঢাকা দক্ষিনের প্রচার সম্পাদক বা কিছু একটা হবে। নেতার ছোট ভাই ব্রাদার এই সমস্ত পোলাপান। এরকম ঘটনা প্রায় প্রতিদিনই কোথাও না কোথাও ঘটছে। ঘুরে ফিরে এটাই ঢাকার সমস্ত এলাকার ঘটনা।
সর্বশেষ এডিট : ১০ ই জানুয়ারি, ২০২৩ দুপুর ২:৩৫

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



