রাজেন্দ্র কলেজের এক শিক্ষক আমাকে খুব স্নেহ করেন।
উনি ঢাকা এলেই আমাকে ফোন দেন। আমি স্যারের সাথে দেখা করি। স্যার নানান বিষয় নিয়ে গল্প করেন। আমি মুগ্ধ হয়ে শুনি। সেদিন স্যার বললেন, বিজ্ঞান আজ অবধি যত গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছে তার প্রত্যেকটিকেই নিজেদের ধর্মগ্রন্থের অন্তর্গত বলে দাবি করে চলেছে একদল ভন্ড ধার্মিকগোষ্ঠী। ধর্মগ্রন্থ গুলির মধ্যে নাকি সমস্ত আধুনিক বিজ্ঞান বর্তমান। অথচ যতক্ষণ না বিজ্ঞানীরা নিজেদের চেষ্টায় সেই আধুনিক বিজ্ঞানের সন্ধান দিয়েছেন, ধার্মিকগোষ্ঠী ধর্মগ্রন্থ পড়ে তার হদিস দিতে পারেনি। আসলে এটা বিজ্ঞানকে খাটো করার যতটা না প্রয়াস তার চেয়ে অনেক বেশি বোধহয় নিজেদের টিকে থাকার একটা মরিয়া চেষ্টা | ছোটবেলা আমি মাকে অনেক বোকার মতো প্রশ্ন করতাম। যেমন- ঈশ্বরের অস্তিত্ব যদি থাকে, তবে তিনি সারাদিন কী করেন? এবং কী খান?
এখন আমি পড়ে পড়ে অনেক কিছু জেনেছি।
সূরা মূলক পড়লে কবরের আযাব থেকে মাফ পাওয়া যাবে। সূরা ওয়াকিয়া পড়লে অভাব দূর হবে। সূরা ইখলাস পড়লে- পঞ্চাশ বছরের গুনাহ মাফ পাওয়া যাবে। রাতে ঘুমানোর আগে আয়াতুল কুরসী পড়লে- সারারাত ফেরেশতারা পাহারা দিবে। দুইটা মোটিভেশন সুরা আছে। ১) সুরা আল-ইনশিরাহ ও ২) সুরা আদ্ব-দ্বোহা। রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, সূরা ফাতেহা সব রোগের মহাওষুধ। কোরআন আঁকড়ে ধরে থাকতে পারলেই পরকালে জান্নাত নিশ্চিত। ইহকাল আর কয়দিনের? পরকাল আসল। তবে নামাজ মিস করা যাবে না। নামাজ পড়তে হবেই। এই বিষয়ে কোনো 'ছাড়' নেই। একবেলা খাওয়া মিস দিলে সমস্যা নাই। কিন্তু নামাজ মিস করা যাবে না।
আমি বিস্মিত হয়ে যাই যখন ছাদে শুয়ে একটানা আকাশের দিকে তাকিয়ে থাকি।
কল্পনা বা চিন্তাশক্তি বেশিদূর এগোয় না। যখন নবীদের ঘটনাগুলি পড়ি, তখন আমার ইমানের অবস্থা দেখে শিউরে উঠি। আমি ঘরে বসেই শুনতে পাই- শুক্রবার জুম্মার দিনে হুজুর খুতবায় বলেন- পরম ভক্তি সহকারে যে কোন সূরা পড়লেই মনে শান্তি আসে। মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন- 'যে ব্যক্তি সূরা ওয়াক্বিয়াহ পাঠ করবে, সে কখনো ক্ষুধায় কষ্ট ভোগ করবে না'। দুনিয়াতে মানুষের সবচেয়ে যে জিনিসটি সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন তাহলো হেদায়েত ও সঠিক পথ পাওয়া। আল্লাহপাক দোয়া কবুল করতে ভালোবাসেন। তার কাছে চাইলে তিনি খুশি হন। কাজেই দেরী না করে দুহাত তুলুন।
ডাক্তার তখনই আমাদের সাহায্য করতে পারবে যখন আমরা আল্লাহর কাছে সাহায্য চাই।
তিনিই অসুখ সারানোর উছিলায় ডাক্তার দিয়েছেন। যে ব্যক্তি ফজরের পর ঘুমাতে অভ্যস্ত, আল্লাহ তাআলা তার স্মৃতিশক্তি নিঃশেষ করে দেন। দুনিয়ার কোন ডাক্তার এই স্মৃতিশক্তি আর ফিরিয়ে আনতে পারবে না। পরিপূর্ণ ভাবে আমল করার পরও যদি আপনার ইচ্ছে পূর্ণ না হয়- তাহলে মনে করবেন আপনি যা চাচ্ছেন তা আল্লাহ চায় না। তাই আপনি পাচ্ছেন না। নবীজি (সাঃ) বলেছেন তোমাদের মধ্যে কেউ যখন খাবার খায়। এবং খাওয়ার শুরুতে 'বিসমিল্লাহ' বলে। তবে শয়তান ওই খাবারে অংশ নিতে পারে না। তিনি আরো বলেছেন, যে ঘরে প্রতিদিন কুরআন তেলাওয়াত হবে, কুরআনের চর্চা হবে, কুরআনের ওপর আমল করা হবে, সে ঘরেই নেমে আসবে আল্লাহর পক্ষ থেকে বরকত ও কল্যাণ। সুবাহান্নাল্লাহ।
আল্লাহর নবী বলেছেন-
আল্লাহর প্রতি যেরকম ভরসা বা আস্থা রাখা দরকার, তোমরা যদি সেই মাপের আস্থা রাখতে পারো, তাহলে আল্লাহ তাআলা পাখিকে যেভাবে রিজিক দেন তোমাদেরও সেভাবে রিজিক দেবেন। সূরা বাকারাহ'র এর শেষ দুই আয়াত, ২৮৫ এবং ২৮৬.৷ যা নবী (সাঃ) মিরাজের গমনের সময় নাযিল হয়েছে। (সুবাহানাল্লাহ) যে ঘরে তিন রাত এ দু‘টি আয়াত তিলাওয়াত করা হয়- শয়তান সেই ঘরের নিকটেও আসতে পারে না। আমাদের নবীজি (সাঃ) পৃথিবীর প্রথম মহাকাশচারী। মহাকাশ ভ্রমণ করে আমাদের প্রিয় নবী মুহাম্মদ (সঃ) সর্বশক্তিমান আল্লাহর কাছ থেকে ফরজ ইবাদত হিসাবে নামাজ নিয়ে আসেন। নবীজির রকেটের নাম বোরাক। নাসা যতই লাফাক, বিশ্ব নবী পৃথিবীর সেরা বিজ্ঞানী। সেরা জ্ঞানী।
মুসলিম হিসেবে আমাদের ঘরের বুক সেলফে কিছু ধর্মীয় বই সবসময় রাখা উচিত।
নবী রাসুলদের জীবনী, সহী হাদীস, মোকছুদুল মুমিন, মাসলা মাসায়েল বিষয়ক বই, ইসলামী চিকিৎসা বিষয়ক বই। মুক্তমনাদের বই পড়লে ইহকাল পরকাল, দুই কালই বরবাদ হবে। লেখকদের বানোয়াট গল্প উপন্যাস পড়লে জান্নাত পাওয়া যাবে না। আপনার নিশ্বাস নেওয়া যেমন জরুরি তার চেয়ে বেশি জরুরী নামাজ পড়া। কোনো লোক যদি জন্মের পড় থেকে মৃত্যু পর্যন্ত সিজদায় পরে থাকে তবুও আমাদের প্রতিটা অঙ্গের শুকরিয়া না আদায় করার অপরাধ আল্লাহর কাছ ক্ষমা হবে না। তাওরাত, যাবুর, ইঞ্জিল দ্বারা প্রমাণ করা হয়েছে যে ইসলাম ধর্ম সর্বশেষ এবং বিশুদ্ধ । সুবাহানল্লাহ।
তাই আসুন আমরা নামাজ পড়ি।
নবীজির দেখানো পথে চলি। পবিত্র গ্রন্থ বুকে ধারন করি। তা মেনে চলি। আল্লাহর দরবারে হাত তুলি। ক্ষমা প্রার্থনা করি। সমস্ত রকম মন্দ কাজ থেকে দূরে থাকি। একজন মুসলিমের কাছে দেশের সংবিধানের চেয়ে বেশী মূল্যবান কোরআনের বানী। কার্ল মাক্স, লেনিন, চে, মাও সে তুং, মাদার তেরেসা, লালন ইত্যাদি কিছু লোক বিশ্বের শত্রু। এদের আল্লাহপাক কোনোদিন ক্ষমা করবেন না। মরার সময় যেন আমরা আল্লাহর নাম মুখে নিতে মরতে পারি। আল্লাহ যেন আমাদের কবরের আযাব না দেন। আমাদের যেন জান্নাত দান করেন। কোরআনে বর্ণিত সর্বশ্রেষ্ঠ দোয়া দিয়ে আমার লেখাটি শেষ করছি। এই দোয়া নবীজী (সাঃ) বারবার বলতেন। 'রাব্বানা আতিনা ফিদ্দুনিয়া হাসানা, ওয়াফিল আখিরাতি হাসানা, ওয়াকিনা আজাবান্নার।'
(ইহা আমার লেখা নয়। আমার বন্ধু শাহেদ জামাল লিখেছে।)
সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে জানুয়ারি, ২০২৩ দুপুর ১২:৫৩