
নিয়মিত নামাজ পড়লে কি হবে? কিছুই হবে না।
নামাজ কি? উঠবস করা। আমাদের গ্রামে সোলেমান নামে একলোক সারা জীবনে কোনোদিন নামাজ পড়েন নি। এমনকি জুম্মা নামাজও না। ঈদের নামাজও না। শবে বরাতের রাতেও না। সে খুব ভালো একজন ভালো মানুষ ছিলেন। মানবিক মানুষ। হৃদয়বান মানুষ। যে কারো বিপদে এগিয়ে যেতেন। হোক সে হিন্দু বা মুসলিম। সে মানুষকে 'মানুষ' হিসেবে দেখতো। ধর্ম দিয়ে বিচার করতো না। উনি ৮৫ বছর বয়সে মারা যান। তার কোন অসুখ বিসুখ হয়নি। ঘুমের মধ্যে মারা যান। সুন্দর মৃত্যু। উনার মৃত্যুতে সারা গ্রামের মানুষ কেদেছিলো। নামাজ না পড়েও তিনি মানুষের স্বচ্ছ ভালোবাসা পেয়েছেন।
আমার পরিচিত একলোক। আব্দুল্লাহ নাম।
সে-ও আমাদের গ্রামের। তার জ্ঞান হওয়ার পর জীবনে কোনোদিন নামাজ মিস করেননি। চলন্ত ট্রেনে, বাসে, লঞ্চে নামাজ পড়েছেন। তিনি বলতেন, সময় মতো নামাজ না পড়তে পারলে শান্তি পাই না। লোকটা অনেক গরীব ছিলো। সারাটা জীবন তার অভাবে অভাবে কেটেছে। টাকার অভাবে তিনবেলা পেট ভরে খেতে পারেন নি। মানুষের দয়ায় কেটেছে তার জীবন। তার পরিবারটি মানবেতর জীবনযাপন করেছে। টাকার অভাবে চিকিৎসা করাতে পারেননি আব্দুল্লাহ। তার মধ্যে ধর্মীয় গোঁড়ামি ছিলো ব্যাপক। দীর্ঘদিন অসুখে ভূগে মারা যান। অবাক ব্যাপার হলো তার জানাজায় মানুষ হয়েছিলো মাত্র এগারো জন। একজন নামাজী মানুষের মৃত্যুতে মাত্র এগারো জন কেন হবে? কারন নামাজ পড়লেও উনি ছিলেন ভীষন দুষ্টলোক।
নামাজ মানুষকে কিছু দেয় না।
আপনি যদি কাজ করেন, পরিশ্রম করুণ। তবেই জীবনে সফলতা আসবে। তবে নামাজ খুব ভালো ব্যয়াম। আপনি চিন্তা করে দেখুন, প্রতিদিন পাঁচ বার যদি আপনি উঠবস করেন তাতে আল্লাহর কি উপকার হবে? আপনারই বা কি উপকার হবে? আপনি মানুষ, তাই মানুষের পাশে থাকতে হবে। মানুষের জন্য কাজ করতে হবে। আপনি যদি অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ান আল্লাহ খুশি হবেন। একজন ক্ষুধার্থ মানুষকে পেট ভরে খাওয়ান- তাহলে প্রভু খুশি হবেন। আপনি যদি একজন বেকারকে চাকরী দিয়ে দেন তাহলে আল্লাহ্ খুশি হবেন। আপনি যদি একজন দরিদ্র পিতা মাতার সন্তানকে স্কুলে ভরতি করিয়ে দেন তাহলে আল্লাহ খুশি হবেন। অযথা উঠবস করলে তাতে আল্লাহর কোনো লাভ নাই। আল্লাহকে খুশি করতে হলে আগে নিজেকে যোগ্য ও দক্ষ করে গড়ে তুলতে হবে। তারপর ভালো ভালো কাজ করতে হবে। নামাজ পড়া তো সহজ। যে কেউই পারে। একজন রিকশাচালক পারে, একজন সবজি বিক্রেতা পারে, একজন দোকানদার পারে। মানুষের জন্য, সমাজের জন্য- ভালো কাজ করতে পারে কয়জন?
আমি নামাজ পড়েছি, চিল্লায় গিয়েছি, হজ্ব করেছি, ইজতেমায় গিয়েছি।
তাতে কি হয়েছে? কিছুই হয় নাই। হবেও না। যারা এগুলো করে নাই জীবনে তাঁরা দিব্যি বেঁচে আছে। ভালো আছে। সুস্থ আছে। নামাজ না পড়লে বাস্তব জীবনে কোনো ক্ষতি নাই। এমন না যে নামাজ পড়লে আপনার আয় রোজগার বেড়ে যাবে। আবার নামাজ না পড়লে আয় রোজগার কমে যাবে। ঘটনা তা না। অনেকে মনে করেন নামাজ পড়লে বেহেশতে যাওয়া যাবে। ভুল চিন্তা। নামাজ বেহেশতের চাবি একথা কোরআনে লেখা নাই। আছে হাদিসে। আর হাদীস বেশির ভাগই মিথ্যা, বানোয়াট। কারন, নবীজি মৃত্যুর ২/৩ শ' বছর হাদীস লেখা হয়েছে বানিয়ে বানিয়ে। হাদিসে কোনো লজিক নেই। নবীজি বলেন নাই- আমার মৃত্যুর ২/৩ শ' বছর পর তোমরা হাদীস লিখো। আর সেই মোতাবেগ জীবনযাপন করো। কাজেই মানুষ হয়ে জন্মেছেন, তাই ভালো কাজ করুণ। মহৎ কাজ করুণ। কুকুরের লেজ নিয়ে পড়ে থাকবেন না। মানুষের পেছনে লেগে থাকবেন না।
খেয়াল করে দেখবেন, মসজিদে কোন শ্রেনীর মানুষ বেশি নামাজ পড়তে যাচ্ছে।
দেখবেন অনেক বয়স্ক মানুষজন নামাজ পড়তে যাচ্ছে। কারন তাঁরা অবসর জীবনযাপন করছে। কোথাও যাওয়ার নেই তাদের। কোনো তাঁরা নেই। খেয়েদেয়ে কাজ নেই। তাই যায় মসজিদে। নামাজ পড়ে। নিজেকে ব্যস্ত রাখা আর কি। কোরআন শরীফে নামাজের কথা লেখা নেই। আর হাদীস তো বানোয়াট। নানান রকম ভুলে ও আজগুবি কথাতে ভরপুর। এজন্য নামাজ নিয়ে সিরিয়াস হওয়ার কিছু নাই। ভালো কাজ করুণ। নিজের লক্ষ্য ঠিক করে লক্ষ্যের দিকে এগিয়ে যান। বাবা মায়ের স্বপ্ন পূরন করুণ। সমাজের জন্য কিছু করুণ। তাতে আল্লাহ্ খুশি হবেন। হাশরের ময়দান চেলচেলাইয়া পার হতে পারবেন। বেহেশত নিশ্চিত। পরকাল হবে আনন্দময়।
(ইহা আমার লেখা নয়। শাহেদ জামালের লেখা। লেখাটি তার কাছ থেকে আমি সংগ্রহ করেছি। এবং আপনাদের সাথে শেয়ার করেছি। তার মনোভাব আপনাদের জানানোর জন্য। আমি শাহেদ জামালের সাথে একমত না। কিছুতেই না। আমি নিজে এই বিষয়টা নিয়ে লিখব।)
সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ দুপুর ১২:৫২

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




