
সমস্যা হলো সমাজের সব মানুষ মুক্তমনা নয়।
বেশির ভাগ মানুষের মধ্যেই আছে নানান রকম কুসংস্কার। সবচেয়ে বিপদজনক কুসংস্কার হলো- ধর্মীয় কুসংস্কার। ধর্মীয় কুসংস্কার সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে। একটা শিশু বড় হয়- বাবা মায়ের ধর্মীয় গোঁড়ামি দেখে দেখে। তারপর এই শিশুর মধ্যে বাসা বাদে ধর্মীয় গোঁড়ামি। এর থেকে সে আর বেড়িয়ে আসতে পারে না। শিশুকে ভয় দেখিয়ে বড় করা হয়- তুমি এখন খাও, নইলে আল্লাহ গুনাহ দেবে। পাপ দেবে। তুমি এখন ঘুমাও, নইলে শয়তান এসে পড়বে। দুষ্টমি করো না- আল্লাহ রাগ করবে। প্রভুকে ভালোবেসে নয়, ভয় পেয়ে শিশুরা বড় হয়।
এই আধুনিক যুগে এসে মানুষ তাবিজ কবচে বিশ্বাস রাখে।
ঝাড়ফুঁকে বিশ্বাস করে। রাতে খারাপ স্বপ্ন দেখলে হজুরের কাছে যায় পরামর্শের জন্য। হুজুর বলে- একটা মূরগী ছদকা দিতে। সেই মূরগী হুজুর চিবিয়ে চিবিয়ে খায়। অনেকে মানত করে সিলেট মাজারে ছাগল দিবে। একই ছাগল প্রতিদিন দশবার করে বিক্রি হচ্ছে। বাচ্চা পাঁচ বছর হয়ে গেছে কিন্তু বিছানায় মুতে, বাচ্চার বাবা মা নিয়ে যায় হুজুরের কাছে। হুজুর ফু দিয়ে দেয়। কেউ কেউ কাইতন শিশুর কোমরে দেয়। বাচ্চার ক'দিন পরপর অসুস্থ হয়, বাচ্চার বাবা মা রোজা রাখে। ধর্মীয় বেড়াজাল থেকে এই আধুনিক যুগে এসেও মানুষ বের হতে পারছে না।
একটি সুস্থ স্বাভাবিক সমাজ কি আদৌ সম্ভব?
সমাজের যারা অধিপতি, যারা সমাজ আধুনিক করবে, মানুষকে সচেতন করবে- তাদের মধ্যেই গোঁড়ামি দিয়ে ভরা। তাহলে এই সমাজ কুসংস্কারমুক্ত হবে কি করে? আপনি হাজার বলে কয়ে একজন কুসংস্কার বিশ্বাসী মানুষকে লাইনে আনতে পারবেন না। আমাদের দেশে পাঁচশ' মডেল মসজিদ করা হয় কিন্তু পঞ্চাশটা লাইব্রেরী করা হয় না। এখন আপনিই বলুন সমাজ কিভাবে বদলাবে? সমাজের সব মানুষের মধ্যে একটাই চিন্তা আমার পরিবার ভালো থাকুক, অন্যের পরিবার বন্যায় ভেসে যাক। শুধু মাত্র সঠিক শিক্ষাই পারে কুসংস্কার দূর করতে।
আমার কথা বলি- আমার মধ্যে কোনো কুসংস্কার নেই।
আমার বাচ্চা অসুস্থ হলে আমি মসজিদে মিলাদ পড়াই না। রোজা রাখি না। কোনো হুজুরের কাছে যাই না। তাবিজ কবচ তো দূরের কথা। ডাক্তারের কাছে যাই। ডাক্তারের কথা মতো চলি। কিন্তু আমার খালাতো ভাইয়ের বাচ্চা অসুস্থ হলে- তাঁরা ডাক্তারের কাছে যাওয়ার আগে হাতে কাইতন বাঁধে। জমজম পানি খাওয়ায়। রোজা রাখে। ছদকা দেয়। কোরআন পড়ে। বাচ্চা ঘুমের মধ্যে ভয় পেলে সূরা পড়ে ফু দেয়। মাগরিবের আযানের সাথে সাথে ঘরের দরজা জানালা লাগাতে হয়, নইলে ঘরে শয়তান ঢুকে যাবে। এরকম চিন্তা ভাবনার মানুষ আজও আছে, বহু আছে।
মুক্তমনা মানুষেরা সমাজের ভালো চায়।
মুক্তমনা মানুষেরা চায়- মানুষ আধুনিক হোক। তাদের চিন্তা ভাবনা উন্নত হোক। তাদের মধ্যে থাকা কুসংস্কার গুলো দূর হোক। উন্নত দেশের একটা শিশু যেভাবে সঠিক আধুনিক শিক্ষা পেয়ে বড় হয়, আমাদের দেশের শিশুরা সঠিক ও আধুনিক শিক্ষা পেয়ে বড় হচ্ছে না। কারন তাদের বাপ মায়ের মধ্যেই নানান রকম কুসংস্কার দিয়ে ভরা। এক বাচ্চা খেলা করতে গিয়ে জানালার গ্রিল থেকে পড়ে গেছে। তাদের বাবা মায়ের ধারনা শয়তান বাচ্চাটাকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিয়েছে। এখন ঘরে সোনা রুপার পানি ছিটাও। ধর্মীয় শিক্ষার চেয়ে বেশি জোর দিতে হবে আধুনিক শিক্ষায়। মাদ্রসা সমাজের সবচেয়ে বেশি ক্ষতি করছে।
সর্বশেষ এডিট : ১৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ দুপুর ২:১১

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




