মানুষের প্রতি আমার ঘৃণা জন্মে গেছে।
অথচ মানুষ সৃষ্টির সেরা জীব। আমি সব সময় মানুষকে ভালোবাসতেই চেয়েছিলাম। কিন্তু মানুষের কর্মকান্ড, আচার-আচরণ এবং মানসিকতা অতি নিম্মমানের। ধরুন, কেউ একজন বলল, রাজীব দুটা বিয়ে করেছে। সাথে সাথে পাঁচ বলবে, ছিঃ ছিঃ রাজিব এত খারাপ। আরেকজন বলবে, এটা আমি আগেই সন্দেহ করেছিলাম। এদের চেয়ে একধাপ এগিয়ে কেউ একজন বলে বসবেন- এই ছেলে আগে একটা ধর্ষণও করেছে। আরেকজন বলবে, এই ছেলের নামে মামলা আছে। ওয়ারেন্ট বের হয়েছে। সবাই এসব নিয়ে মেতে উঠবে। গালাগালি দিবে, কটু কথা বলবে, কেউ কেউ কুৎসিত হাসি দেবে। যারা এরকম করবে তাঁরা সবাই শিক্ষিত মানুষ।
এই শিক্ষিত মানুষ গুলো আসলে সমাজের আবর্জনা।
কারন এরা একবারও ভেবে দেখবে না- ঘটনা সত্য কিনা। বরং যে ছাগল মিথ্যা বানোয়াট গুজব ছড়িয়েছে তাকে আরো বেশি বেশি উৎসাহ দেবে। এবং সবাই মিলে এক কুৎসিত ও নোংরা আনন্দে মেতে উঠবে। আমরা একটা সমাজে বাস করি। আমরা মানুষ। আমরা জানি, চিলে কান গেছে শুনলেই চিলের পেছনে ছুটতে হয় না। আগে কানটা ধরে দেখতে হয়। কান কানের জায়গায় আছে কিনা। একজন মানুষকে ঠিক করে চিনি না, জানি না। জানি না তার নাম। অথচ হুট করে বলে দিলাম তার বাপের নাম। আর কিছু নির্বোধ সেই মিথ্যা নিয়ে লাফালাফি শুরু করে দিলো। অতি কুৎসিত এক খেলায় মেতে উঠলো। ওহে মানুষ কাউকে মিথ্যা অপবাদ দিও না। সত্যটা নিশ্চিত না হয়ে উল্লাসে মেতে ওঠো না।
একান্নবর্তী পরিবার গুলো আজ ভেঙ্গে গেছে।
গীবত খুব খারাপ। ধরুন, দুজন মানুষ কোথাও দেখা করলো। সেখানে কেন অবধারিত ভাবে তাঁরা অন্য একজনকে নিয়ে সমালোচনা করবে। কেউ একজন একধাপ এগিয়ে বানোয়াট কিছু বলে দিলো। একটা ভুল কথা বা মিথ্যা কথা এক মুখ থেকে অনেক মুখে ছড়িয়ে গেলো। অথচ যাকে নিয়ে এসব বানোয়াট কিৎসা কাহিনী সে এসবের কিছুই জানলো না। সে আছে তার আপন ভুবন নিয়ে। যারা মিথ্যা ছড়ায় এদের চেয়ে বিপদজনক তাঁরা যারা সেগুলো বিনা দ্বিধায় বিশ্বাস করে। তারপর সেসব নিয়ে নাচতে থাকে। এই সমাজের মানুষ সত্যের চেয়ে মিথ্যা বেশি বলে। দুঃখজনক কথা হলো- মানুষ সত্যের চেয়ে মিথ্যাটা দ্রুত গ্রহন করে। কেউ খারাপ আছে শুনলে, লোকে খুশি হয়। কেউ অভাবে আছে শুনলে লোকে খুশি হয়। হ্যাঁ ইহাই সত্যি।
আমি এই সমাজের উপর বড় হতাশ।
না চাইলেও সমাজের কুৎসিত রুপ গুলো আমি দেখে ফেলেছি। দেখে ফেলেছি সমাজের ভালো মানুষ বলে খ্যাত লোকদের আসল মুখোশ। তারপরও আমি বিশ্বাস করতে চাই- মানুষ ভালো। মানুষ মহৎ। মানুষ সৎ। জ্ঞানীরা বলেছেন, 'অন্যের কাছ থেকে যে ব্যবহার প্রত্যশা করেন আগে নিজে সে আচরন করুন'। নিজের কথা বলি- আমি সহজেই কোনো মানুষের মধ্যে পাপ দেখিনা বলেই বন্ধুত্বের হাত বাড়িয়ে দেই। আকাশের দিকে তাকিয়ে নিজের মনটাকে বড় করতে চেষ্টা করি। সেই প্রেরনা থেকে আমি মানুষকে ক্ষমা করে দেই। শত্রুর কাঁধে হাত রেখে গল্প করি। একসাথে বসে চা খাই। জানি এই শত্রু সুযোগ পেলেই ছোবল বসিয়ে দেবে। তবু শত্রুর জন্য আমার মায়া হয়। সে তো আর তার মায়ের পেট থেকে বদমাশ হয়ে জন্ম নেয়নি।
প্রাচ্যের অন্যান্য জাতিসমূহ থেকে গ্রীকদের জীবন-যাপনের পদ্ধতি ও রীতিনীতি ছিল সম্পূর্ণ ভিন্ন ধরণের।
তাদের জীবন দর্শন ছিল এই ধরণের যে, জীবনকে আজই উপভোগ করতে হবে, আগামীকাল আমরা নাও থাকতে পারি। এই কারণে গ্রীকেরা ভোগ-বিলাসকে তাদের অন্যতম প্রধান বিষয় মনে করত। আমরা যারা এযুগে জন্মেছি তাঁরা ভাগ্যবান। আমাদের হাতে আছে ইন্টারনেট, ল্যাপটপ, মোবাইল ফোন। অথচ প্রেরিত পুরুষরা এসব পায়নি। তাঁরা কত কষ্ট করেছে রোদ বৃষ্টি ঝড়ে। বাঙ্গালীরা মূলত দুঃখী। তাঁরা ভাতে দুঃখী, কাপড়ে দুঃখী, প্রেম ভালোবাসায় দুঃখী। এজন্য বাঙ্গালীরা কেউ ভালো আছে জানলে সহ্য করতে পারে না। আমি মানুষকে ভালো হতে বলি। সৎভাবে সহজ সরল জীবনযাপন করতে বলি। মানুষ যখন বদমাইশি করে তখন সে তার প্রেরিত পুরুষের বানী (হাদীস) গুলো কি ভুলে যায়? এমনকি মানুষ মিথ্যাচারে এতই মজে যায় আল্লাহর শাস্তির কথা ভুলে যায়।
I said, Is it good friend?
It is bitter bitter,he answered.
But I like it
Because it is bitter
And because it is my heart.
সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ রাত ১২:০৪