আপনি একটা দরিদ্র দেশে জন্মগ্রহন করেছেন।
আপনি বিখ্যাত কেউ না। দেশ বা সমাজের প্রতি আপনার কোনো অবদান নেই। আপনি মারা গেলে পৃথিবীর কিচ্ছু যায় আসে না। তবে আপনার পরিবারের সদস্যরা কষ্ট পাবেন। আপনার বন্ধুবান্ধব, আত্মীয়স্বজনেরা কষ্ট পাবে। বিখ্যাত বা জনপ্রিয় কেউ মারা গেলে- সংবাদপত্রে বলা হয়- অপূরণীয় ক্ষতি হয়ে গেলো। আসলে কচু। কিছুই হয় না। যার জন্য বলা হয়- অপূরণীয় ক্ষতি হয়ে গেলো, মানুষ তাকেই ভুলে যায়। মৃতদের প্রতি আগ্রহ দেখিয়ে কোনো লাভ নাই। ভাবতে হবে জীবিতদের কথা।
আপনি কিছু আবিস্কার করেছেন?
সমাজের মানুষ কি আপনার উপর নির্ভরশীল? কোনো বেকারকে চাকরি দিয়েছেনে? অসুস্থ মানুষের চিকিৎসা করিয়েছেন? দরিদ্র পিতা মাতার সন্তানকে স্কুলে ভরতি করিয়ে দিয়েছেন? তাদের লেখাপড়ার খরচ দিয়েছেন? মাদার তেরেসার মতো কারোস এবা করেছেন? শুধু আপনি না, আপনার মতো দুইশ জন মরে গেলোও পৃথিবীর কোনো ক্ষতি হবে না। ঠিকই সূর্য উঠবে। সূর্য অস্ত যাবে। আসলে কারো জন্যই কিছু যায় আসে না। শেখ মুজিবকে হত্যা করা হলো, তাতে কি বাংলাদেশ থেমে গেছে?
আপনি মারা যাওয়াতে পৃথিবীর কোনো ক্ষতি হবে না।
ক্ষতি হবে আপনার পরিবারের। তাঁরা কষ্ট পাবেন। এই কষ্টের মাত্রা কিন্তু লম্বা হবে না। এই যে কিছুদিন আগে তুরস্কে ভূমিকম্প হলো। কত মানুষ মারা গেলো। তাতে আপনার কিছু হয়েছে? পৃথিবী থেমে গেছে? কিছুই হয়নি। কিছু লোক আহা উহু করেছে। ব্যস এই পর্যন্তই। কাজেই কারো মৃত্যুতেই পৃথিবীর কিছু এসে যায় না। ক্রমাগত পৃথিবীর ওজন বাড়ছে। পৃথিবীর জনসংখ্যা অনেক বেশি বেড়ে গেছে। এক কোটি লোক মরে গেলে বরং পৃথিবীর উপকার হবে। কিছু বছর পর জলবায়ু পরিবর্তনের কারনে বহু লোক মারা যাবে।
আপনি তো পৃথিবীর জন্য কোনো অবদান রাখেন নাই।
তাই আপনি মারা গেলে পৃথিবীর কোনো ক্ষতিই হবে না। ধরুন, শেখ হাসিনা মারা গেলো অথবা মোদী মারা গেলো। তাতে কি হবে? পৃথিবী থেমে যাবে? ২/৩ দিন কিছু মানুষ হায় হায় করবে। তারপর ভুলে যাবে। যুগ যুগ ধরে তো এরকমই হয়ে আসছে। যে জন্মেছে, তাকে মরতেই হবে। অন্য কোনো উপায় নেই। তবে মানুষের উচিৎ মৃত্যুর আগে পৃথিবীর রুপ, রস, গন্ধ উপভোগ করে নেওয়া। যতটুকু পারা যায় উপভোগ করে নেওয়া। প্রতিটা মানুষের উচিৎ বেঁচে থাকাকালীন সমাজের জন্য ভালো কিছু করা। তাহলে মৃত্যুর পর মানুষ আপনাকে মনে রাখবে।
আমার কথা বলি- আমি মরে গেলো কারোই কিছু যাবে আসবে না।
আমি বেঁচে থেকে পৃথিবীর কোনো উপকার করতে পারিনি। পৃথিবী তো দূরের কথা, সমাজেরও কোনো উপকার করতে পারিনি। কাজেই আমি মরে গেলে শুধু মাত্র আমার পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হবে। আমার স্ত্রী কাঁদবে। আমার কন্যাটা বড় বেশি অসহায় হয়ে পড়বে। সে আনন্দ নিয়ে বড় হতে পারবে না। এজন্য আমি চাই অনেকদিন বেঁচে থাকতে। অন্তত আর বিশটা বছর। এই বিশ বছরে আমার কন্যার বয়স বিশ হয়ে যাবে। এরপর আমি মরে গেলেও সমস্যা নাই।
সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই মার্চ, ২০২৩ রাত ৯:৪১