আমি সহজে কাঁদি না।
মেয়ে হলে হয়তো কান্না করতাম। মেয়েরা বেশি কাঁদে। ছেলেদের কাঁদতে নেই। মেয়েরা কাঁদবে, ছেলেরা এসে তাদের চোখ মুছিয়ে দেবে। এটাই তো একটা অলিখিত নিয়ম। যুগ যুগ ধরে এরকম'ই হয়ে আসছে। আমার বাবা মারা গেলো করোনা'তে তখনও আমি কাঁদি নাই। শুধু আব্বাকে যখন কবরে নামাচ্ছিলো- আচমকা চোখে কিছু পানি এসে জমেছিলো। আমি কাঁদি না। ছেলেদের কাঁদতে নেই। হ্যাঁ আমি মানুষ। নানান কারনে, নানান ঘটনায় আমার মন খারাপ হয়। ভীষণ মন খারাপ হয়।
মানুষ আমাকে মিথ্যাবাদী ভাবতে শুরু করেছে।
এটা কোনো ভালো লক্ষন নয়। আমি যখন চরম সত্য কথা বলি- মানুষ আমার কথা গুলো সিরিয়াস নেয় না। হেসে উড়িয়ে দেয়। মনে করে মজা করছি। ফান করছি। অথচ আমি যা লিখি সত্য লিখি। বুকের ভেতর থেকে আসা কথা গুলো মিথ্যা হয় কি করে? বানোয়াট হয় কি করে? আমি তো লেখক নই, যে বানিয়ে বানিয়ে গল্প উপন্যাস লিখে ফেলব। এত প্রতিভা নিয়ে তো জন্মাই নাই। আমি একজন প্রতিভাহীন মানুষ। অতি ক্ষুদ্র, অতি তুচ্ছ। তবে ভাইরাস নই। মিথ্যা মানুষকে ধ্বংস করে দেয়। রাতে ঘুমাতে দেয় না। সমস্ত আনন্দ ও শান্তি কেড়ে নেয়।
এক সপ্তাহ পর পর আমি বাজারে যাই, আর অবাক হই।
দাম বেড়েছে। আমাদের দেশে আলুর অভাব নেই। সেই আলু এখন ৪০ টাকা কেজি। অথচ সব সময় আলুর দাম থাকে ২০ টাকা কেজি। আলুর দাম ১০০ শ' টাকা কেজি হলেও আমার কোনো সমস্যা নেই। আমি ভাবি অসহায় ও দরিদ্র মানুষদের কথা। বাচ্চাদের 'নান' দুধের দাম দুইশ' টাকা বেড়ে গেছে। আমি বুঝি না একসাথে দুইশ টাকা বাড়ে কি করে? দেশে কি কোনো আইন নেই? বাচ্চাদের ডায়পারের দাম সমানে বেড়েই চলেছে। সবাই বেশি দাম দিয়েই কিনছে। কারো কোনো কিছু বলার নাই। সেদিন চাঁদগাজী বলেছিলেন, প্রধানমন্ত্রী যদি প্রতি সপ্তাহে টিভিতে বাজার নিয়ে পনের মিনিট কথা বলেন, তাহলে ব্যবসায়ীরা স্বেচ্ছাচারিতা করতে পারতো না। তার কথাটা আমার কাছে সঠিক বলে মনে হয়েছে।
যে খেজুর কিনতাম ৮০০শ' টাকা করে।
এখন সেই খেজুর হয়েছে ১২শ' টাকা। আজিব! চাষী পোলাউ এর চাল ছিলো একশ' টাকা কেজি। এখন নিচ্ছে ১৭০ টাকা। খোলা পোলাউ এর চাল ছিলো ১১০ টাকা। এখন নিচ্ছে ১৫০ টাকা কেজি। পেঁয়াজের দাম গেছে বেড়ে। এই কিছুদিন আগেও ৩৫ টাকা ছিলো। এখন ৯০ টাকা কেজি। কোরবানীর ঈদের আগে নাকি দাম আরো অনেক বাড়বে। জিনিসপত্রের দাম লাগামহীন ভাবে বেড়েছে। অথচ কেউ কিচ্ছু বলছে না। পত্রিকাওলারা চুপ। জনগনও চুপ। সবাই চুপ থাকাতে সরকার ভেবে নিয়েছে বাজারে কোনো সমস্যা নেই। আমাদের দেশে যত পত্রিকা আছে, তাদের মধ্যে একমাত্র প্রথম আলোই কিছুটা সত্য কথা বলতো। এখন তারাও কেমন চুপসে গেছে।
বাংলাদেশে ছাগল দিয়ে ভরা।
তবু ছাগলের মাংস ১২শ' টাকা কেজি। আমাদের এলাকায় একটা মাংসের দোকান আছে। প্রতিদিন ত্রিশটা গরু জবাই দেয়। লোকজন সারাদিন ধরে মাংস কিনতেই থাকে। অথচ মাংস ৮০০ শ' টাকা কেজি। এরা কারা? কোথা থেকে আসে? তবে একথা সত্যি- দেশের লোকজন খাওয়া শিখেছে। আজ থেকে ত্রিশ বছর আগেও দেশের লোকজন এত খেতো না। যাইহোক, বাজারে এখন আম। চারিদিকে আম আর আম। হিমসাগর আম। কেজি একশ' থেকে আশি টাকা। আমাদের দেশে অনেক রকমের আম হয়। আমি সব আম খাই না। আমার পছন্দ হিমসাগর আম। বিশ কেজি অলরেডি কিনে ফেলেছি। আরো আশি কেজি কিনব। আচ্ছা, বেহেশতে কি হিমসাগর আম পাওয়া যাবে?
সর্বশেষ এডিট : ২২ শে মে, ২০২৩ দুপুর ২:৪৩